বিশ্বে আমরা মাথা উঁচু করে চলব : প্রধানমন্ত্রী
Share on:
প্রবাসীদের উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা যেখানে, যেভাবেই থাকি না কেন, মেধা, মনন ও শক্তি দিয়ে এগিয়ে যাবো। বিশ্বে আমরা মাথা উঁচু করে চলব।
শুক্রবার (১১ মার্চ) সংযুক্ত আরব আমিরাতে নাগরিক সংবর্ধনায় তিনি এসব কথা বলেন। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় আমিরাত সফরকালীন আবুধাবির আবাসস্থল থেকে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে দেশে থাকবেন। ওই দেশের আইন মেনে চলবেন। নিয়ম মেনে চলবেন। যাতে করে সেই দেশের কাছে আমাদের মুখটা বড় থাকে। আমাদের দেশের সম্মান যেন কখনো নষ্ট না হয়। আপনাদের জন্য স্মার্টকার্ড থেকে সবধরনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও আছে। যেসব দেশে আমাদের অনিয়মিত শ্রমিক রয়েছে, তারা যেন নিয়মিত হয় সে জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, পঁচাত্তরের পর আমাদের জীবনে একটা কালো অধ্যায় ছিল। সেই কালো মেঘ কেটে গেছে। এখন আমরা জাতির পিতা আদর্শ নিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশ হবে উন্নত, সমৃদ্ধ, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত। যে দেশ সম্মানের সঙ্গে মাথা উঁচু করে চলবে। জাতির পিতার স্বপ্ন আমরা বাস্তবায়ন করব।
তিনি বলেন, করোনার সময় একটি সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিল। এখন আরেকটি সমস্যা, যে একটি যুদ্ধাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে। সেখানে অন্যরা মদদ দিচ্ছে। যার ফলে একটা অস্বাভাবিক অবস্থার মধ্যে আমরা যাচ্ছি। বিদেশে যেমন তেলের দাম বেড়ে গেছে, নানা রকম সমস্যা হচ্ছে। তার জন্য কিছু সমস্যা আমাদের মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তবে আমি বিশ্বাস করি, এইগুলো আমরা মোকাবিলা করতে পারব। কারণ, করোনার সময় আমি মানুষকে আহ্বান করেছিলাম- আমাদের মাটি আছে, যে যা পারেন আপনারা ফসল ফলান। এক ইঞ্চি জমি যেন অনাবাদি না থাকে। যেকোনো একটা যুদ্ধাবস্থা বা করোনায় যে আর্থিক মন্দা, বিশ্বব্যাপী এরফলে খাদ্যাভাব দেখা দিতে পারে। দ্রব্যমূল্য বাড়তে পারে। কিন্তু আমরা যদি আমাদের দেশে, উৎপাদন বাড়াতে পারি, নিজেদের খাবারের ব্যবস্থা নিজেরাই করে রাখেতে পারি। তাহলে এটা আমাদের জন্য খুব একটা সমস্যা হবে না।
তিনি বলেন, এ ১৩ বছরে বাংলাদেশের পরিবর্তনটা আপনারা দেখেছেন। এই ১৩ বছরে একটানা গণতান্ত্রিক ধারাটা অব্যাহত ও আওয়ামী লীগ সরকার ছিল বলেই দেশের উন্নতি হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রবাসে বসবাসরত বাংলাদেশিরা দেশে উন্নয়ন সহযোগী। আপনাদের ভালো-মন্দ দেখার বিষয়টি আমাদের মাথায় আছে। সেটা স্মরণ রাখি এবং সেইভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করি। আমাদের সবকিছুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে। কারো মুখাপেক্ষী হয়ে যেন চলতে না হয়।
১৯৯৬ সালের ক্ষমতা নেওয়ার পরে দেশের জনগণের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের কার্যক্রম তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, দেশের জনগণের রায় নিয়ে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করি। তারপর থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষের ভোট এবং সহযোগিতায় রাষ্ট্র পরিচালনা করার সুযোগ পেয়েছি। আমার দৃষ্টিতে এটা হলো জনগণের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি। কারণ ক্ষমতা আমার কাছে কোনো ভোগের বস্তু না, এটা হচ্ছে জনগণের সেবা করবার সুযোগ। যে আদর্শ নিয়ে জাতির পিতা দেশ স্বাধীন করেছেন, তা পূর্ণ করা।
প্রবাসীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলার অনুরোধ করে তিনি বলেন, সবাই সুস্থ থাকেন। দেশে আপনাদের যে আত্মীয়স্বজন আছেন, তাদেরও স্বাস্থ্য-সুরক্ষা মেনে চলতে বলবেন।
এসময়, প্রধানমন্ত্রীর আবাসস্থল প্রান্তে আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। দুবাইয়ের বাংলাদেশ কনস্যুলেট প্রান্তে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, কনস্যুলেট জেনারেল বিএম জামাল হোসেন এবং প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী স্ট্র্যাটেজিক হোল্ডিংসের চেয়ারম্যান ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাতসহ অন্যান্য ব্যবসায়ীক প্রতিনিধিরা। আবুধাবি প্রান্তে ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা ইন্দিরা।
এমআই