বৃহস্পতিবার ২৩, মার্চ ২০২৩
EN

চীনের সামরিক ‘এডভেঞ্চার’ আত্মঘাতী হতে পারে : শিনজো আবে

জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে চীনের যেকোন সামরিক ‘এডভেঞ্চার’ হতে পারে আত্মঘাতী। প্রতিবেশী দেশগুলোকে উস্কানি দেয়া বন্ধ করতে এবং ভূখ- সম্প্রচারণের প্রচেষ্টা বন্ধে চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে এই সতর্কতা দিয়েছেন।

জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে চীনের যেকোন সামরিক ‘এডভেঞ্চার’ হতে পারে আত্মঘাতী। প্রতিবেশী দেশগুলোকে উস্কানি দেয়া বন্ধ করতে এবং ভূখ- সম্প্রচারণের প্রচেষ্টা বন্ধে চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে এই সতর্কতা দিয়েছেন।

তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে তিনি এ কথা বলেছেন তা স্পষ্ট। এর আগে তিনি বলেছিলেন, তাইওয়ান ইস্যুতে যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি টোকিওর জন্যও জরুরি পরিস্থিতি হতে পারে।

গত মঙ্গলবার ( ১৪ ডিসেম্বর) নিরাপত্তা বিষয়ক একটি ফোরামে ভিডিও বার্তায় তিনি এ মন্তব্য করেছেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।

শিনজো আবে গত বছর জাপানের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরে যান। তারপরও ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির বৃহৎ অংশের কাছে তিনি এখনও প্রভাব বিস্তার করে আছেন।

তিনি বলেছেন, যদি চীনের মতো বৃহৎ কোনো অর্থনীতির দেশ সামরিক এডভেঞ্চার চালায়, তাহলে ন্যূনতম হলেও তা হতে পারে আত্মঘাতী।

প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে সম্প্রসারণ ঘটানো এবং উস্কানি দেয়া বন্ধ করতে হবে তাদের। বন্ধ করতে হবে প্রতিবেশীদের তিরস্কার করা। কারণ, এতে তাদের নিজেদেরই স্বার্থের ক্ষতি হবে।

জ্বালানি সম্পদে ভরপুর দক্ষিণ চীন সাগরের পুরোটাই নিজেদের বলে দাবি করে চীন। এ জন্য তারা সেখানে সামরিক উপস্থিতির জন্য গড়ে তুলেছে কৃত্রিম দ্বীপ।

কিন্তু চীনের ওই দাবিকে বেআইনি বলে ঘোষণা দিয়েছে হেগে অবস্থিত পার্মানেন্ট কোর্ট অব আরবিট্রেশন। আদালতের এই রায় মানতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে চীন।

অন্যদিকে এই জলভাগের অংশবিশেষের মালিকানা দাবি করেছে ব্রনেই, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, তাইওয়ান এবং ভিয়েতনামও।

পূর্ব চীন সাগরে জাপান শাসিত কিছু দ্বীপপুঞ্জে মানুষ বসবাস করে না। এসব দ্বীপকেও নিজেদের বলে দাবি করে চীন। এ নিয়ে বছরে পর বছর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে উত্তেজনা বিরাজ করছে। একই সঙ্গে তা প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।

কিছুদিন আগে শিনজো আবে যে মন্তব্য করেছিলেন তার জবাব দিয়েছে চীনের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হুয়া চুনিং। গত ১লা ডিসেম্বর তিনি শিনজো আবের বক্তব্যকে ত্রুটিপূর্ণ এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মৌলিক নীতির লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেন।

শিনজো আবের ওই বক্তব্যের কারণে বেইজিংয়ে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে চীন। হুয়া চুনিং বলেছিলেন, শিনজো আবে প্রকাশ্যে সার্বভৌম চীনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি তাইওয়ানের স্বাধীনতাকামীদের ভয়ঙ্কর সমর্থন দিয়েছেন।

গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে শাসিত হয়ে আসছে তাইওয়ান। কিন্তু এই দেশটির ওপর চীনের সার্বভৌমত্বের দাবি করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

এ থেকেই তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা তীব্র থেকে তীব্র হয়ে উঠেছে। তবে তাইওয়ানের সরকার বলেছে, তারা শান্তি চায়। প্রয়োজন হলে আত্মরক্ষা করবে।

সাম্প্রতিক সময়ে তাইওয়ানের আকাশ নিরাপত্তা জোন বার বার বেইজিং লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ তাইপের। জবাবে তারা নিজেদের যুদ্ধবিমান প্রস্তত করেছে। চীনকে সীমানা লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সতর্ক করেছে।

এমন উত্তেজনার মধ্যে কমপ্রিহেনসিভ অ্যান্ড প্রোগ্রেস এগ্রিমেন্ট ফর ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক চুক্তিতে তাইওয়ানের অংশগ্রহণে সমর্থন দিয়েছেন শিনজো আবে।

গতকাল মঙ্গলবার ( ১৪ ডিসেম্বর) দেয়া বক্তব্যে তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোতে তাইওয়ানকে নিয়ে যেতে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও সমমনা দেশগুলোর কঠোর কাজ করা উচিত। এই তালিকার শীর্ষে আসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নাম।

এইচএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *