প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউট একটি নতুন দেশীয় জাতের মুরগি উদ্ভাবন করেছে এবং পরীক্ষামূলকভাবে বাজারজাতের কাজ শুরু করেছে। গবেষণাগারে উদ্ভাবিত এই মুরগির পালক বহুবর্ণ হবার কারণে এর নাম দেয়া হয়েছে ‘মাল্টি কালার টেবিল চিকেন’।
প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউট একটি নতুন দেশীয় জাতের মুরগি উদ্ভাবন করেছে এবং পরীক্ষামূলকভাবে বাজারজাতের কাজ শুরু করেছে। গবেষণাগারে উদ্ভাবিত এই মুরগির পালক বহুবর্ণ হবার কারণে এর নাম দেয়া হয়েছে ‘মাল্টি কালার টেবিল চিকেন’।
প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউটের পোল্ট্রি উৎপাদন বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শাকিলা ফারুক বলেন, নতুন এই জাত মূলত মাংসের জাত। এটি দ্রুত পরিপূর্ণ আকার ধারণ করে, অর্থাৎ খাওয়ার উপযোগী হয়। তিনি বলেন, “উদ্ভাবিত হয়েছে দেশে মুরগির মাংসের চাহিদাকে মাথায় রেখে। এই মুরগি আট সপ্তাহ মানে ৫৬দিনে মধ্যে খাওয়ার উপযোগী হবে।”
শাকিলা ফারুক বলেন, এই মুরগি মূলত দেশে মাংসের চাহিদা পূরণের উদ্দেশ্য নিয়ে উদ্ভাবন করা হয়েছে। “মাল্টি কালার টেবিল চিকেন খুব দ্রুত বাড়ে। এটি মাংস খাওয়ার জন্য উৎপাদন করা হবে, ডিমের জন্য ব্যবহার করা হবে না। আট সপ্তাহের মধ্যে এর ওজন সাড়ে নয়শো গ্রাম থেকে এক কেজির মত ওজন হয়।” কিন্তু এর স্বাদ এবং মাংসের গুণাগুণ দেশি মুরগির মতই। মুরগির শারীরিক গঠন, ঠোট ও ঝুঁটি দেশি মুরগির মত, এর পালকও অনেক রঙ এর হয়। এই মুরগি দেখতে দেশীয় জাতের মুরগির মত। এই মুরগিকে দেশীয় ব্রয়লার বলে থাকেন কেউ কেউ।
প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউট ২০১৪ সালে প্রথম নতুন মুরগির এ জাত নিয়ে গবেষণা শুরু করে। ২০১৮ সালে গবেষণাগারে সাফল্যের পর মাঠ পর্যায়ে পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন শুরু করা হয়। প্রাথমিক অবস্থায় খুলনা, বরিশাল এবং পাবনায় পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন ও বাজারজাত করা হয়েছে।
শাকিলা ফারুক জানান, এই মুহূর্তে চারটি সরকারি এবং দুইটি বেসরকারি খামারে নতুন জাতের মুরগি উৎপাদন করা হচ্ছে। এর মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করে পরীক্ষামূলকভাবে বাজারজাত করার জন্য আফতাব বহুমুখী ফার্মসের সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউট।
এই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউট এখনো যৌথ গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। নতুন জাত উদ্ভাবনে বিদেশি জাত এবং দেশীয় কয়েক জাতের মুরগির জার্মপ্লাজম মিলিয়ে করা হয়েছে। মাল্টি কালার টেবিল চিকেন বাংলাদেশের আবহাওয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ মুরগির মৃত্যু হার অনেক কম।
গবেষক শাকিলা ফারুক বলেন, এখনো পর্যন্ত গবেষণায় দেখা গেছে আট সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত মাল্টি কালার টেবিল চিকেনের মৃত্যুহার ২ শতাংশের নিচে।
এমবি
