শনিবার ১০, জুন ২০২৩
EN

প্রকল্প বাতিল, শত কোটি টাকা ব্যয়েও শেষ রক্ষা হয়নি

শত কোটি টাকা খরচের পর এবার ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণকাজ বাতিল করে দেয়া হলো। এখন আর প্রকল্পটি সরকারি-বেসরকারি খাতে বাস্তবায়িত হবে না।

শত কোটি টাকা খরচের পর এবার ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণকাজ বাতিল করে দেয়া হলো। এখন আর প্রকল্পটি সরকারি-বেসরকারি খাতে বাস্তবায়িত হবে না।

গতকাল অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এই প্রকল্প বাতিলের প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়।

এই বৈঠকে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। পরে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব শামসুল আরেফিন।

বৈঠকে, টিকা দেয়ার জন্য চীন থেকে ৯ কোটি পিস সিরিঞ্জ সংগ্রহের প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

একই সাথে অনুমোদন দেয়া হয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের জন্য পাজেরো জিপ কেনার প্রস্তাবও।

সূত্র জানায়, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি)-এর আওতায় মহাসড়কটিতে অ্যাটগ্রেড ও এলিভেটেড সমন্বয়ে এক্সসেস কন্ট্রোল্ড এক্সপ্রেসওয়ে হিসেবে নির্মাণের জন্য ২০১৩ সালের ১৩ মার্চ নীতিগত সিদ্ধন্ত নিয়েছিল অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।

আট বছর পেরিয়ে যাবার পর এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলো সরকার। এতদিনে পরামর্শক ও নকশা প্রণয়নে ব্যয় হয়েছে ৯৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।

এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পরিবর্তে এখন বিদ্যমান চারলেন বিশিষ্ট মহাসড়কটি আরো প্রশস্ত করার পাশাপাশি সড়কের উভয়পাশে ধীরগতির যানবাহনের জন্য পৃথক সার্ভিস লেন নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সরকারের বর্তমান পরিকল্পনা অনুযায়ী জাতীয় মহাসড়কগুলো পর্যায়ক্রমে চার লেনে উন্নীত করার পাশাপাশি সড়কের উভয়পাশে ধীরগতির যানবাহনের জন্য পৃথক সার্ভিস লেন নির্মাণ করা হবে।

এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব বলেন, সরকারি-বেসরকারি আওতায় এই এক্সপ্রেসটি নির্মাণ করা হবে না।

মন্ত্রিসভা কমিটি এটি বাতিল করে দিয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় শত কোটি টাকা খরচ হয়ে গেছে, এই গচ্চা দায়ভার কে নেবে?

এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খরচ হয়ে গেছে এটি ঠিক, এই টাকা দিয়ে সম্ভাবতা যাচাই করা হয়েছে।

প্রকল্পটি এডিবি ঋণ ছিল, আর বাকি অর্থ সরকারিখাতের ছিল। শত কোটি টাকা ব্যয় কোন খাত থেকে হয়েছে- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারি খাত থেকেই এই অর্থ ব্যয় করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সভায় ২০২১-২২ অর্থবছরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের ব্যবহারের জন্য প্রতিস্থাপক হিসেবে ৫০টি গাড়ি ক্রয়ের লক্ষ্যে সরাসরি ক্রয়পদ্ধতি অনুসরণের প্রস্তাবও অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

সরকারি যানবাহন অধিদফতর কর্তৃক ২০০৬-২০০৭ অর্থবছর থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সরকারি ও দাফতরিক কাজে ব্যবহারের জন্য জিপ গাড়ি ক্রয় করে বরাদ্দ দিয়ে আসছে।

তিনি বলেন, পুরাতন জিপগুলো আয়ুষ্কাল শেষ হওয়ায় মেরামত করে প্রশাসনিক ও দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনায় গতিশীলতা ব্যাহত হচ্ছে।

প্রতিস্থাপক হিসেবে ৫০টি জিপ গাড়ি উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ক্রয়প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সময়সাপেক্ষ বিধায় রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে ও জনস্বার্থে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের জন্য ৫০টি মিৎসুবিশি পাজেরো স্পোর্ট কিউ এক্স জিপ গাড়ি সরকারি প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড থেকে পিপিএ ২০০৬ এর ৬৮(১) ধারা এবং পিপিআর ২০০৮ এর বিধি ৭৬(২) অনুযায়ী সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে ক্রয়ের নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

প্রতিটি গাড়ির দাম ৯৪ লাখ টাকা হিসেবে ৫০টি গাড়ির মোট দাম ৪৭ কোটি টাকা। অতিরিক্ত সচিব বলেন, হাতিরঝিল-রামপুরা সেতু-বনশ্রী-শেখেরজায়গা-আমুলিয়া-ডেমরা মহাসড়ক পিপিপি ভিত্তিতে ৪ লেনে উন্নীত করার প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

সার্বিক দিক বিবেচনায় বর্ণিত পিপিপি প্রকল্পে বিনিয়োগকারী হিসেবে যৌথভাবে সিসিসিসিএল এবং সিআরবিসি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

প্রকল্পের অধীনে ৪ লেন সড়কটি মোট ১৩.৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে মধ্যে ৯.৫ কিলোমিটার এলিভেটেড এবং ৪ কিলোমিটার অ্যাট গ্রেড। প্রকল্পটির সম্ভাব্য নির্মাণ ব্যয় হবে ২ হাজার ৯৪ কোটি ১ লাখ টাকা।

সভায় কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে টিকাদানের জন্য জরুরি ভিত্তিতে ডিসপোজেবল সিরিঞ্জ সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে ক্রয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের একটি প্রস্তাবেও নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে ১৩ কোটি ৮২ লাখ লোককে টিকাদানের লক্ষ্যে ২৭ কোটি ৬৪ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দেয়ার জন্য ২৭ কোটি ৬৪ লাখ সিরিঞ্জ প্রয়োজন।

প্রতি মাসে ২ কোটি মানুষকে টিকা দেয়ার লক্ষ্যে ৯ কোটি ডিসপোজেবল সিরিঞ্জ জরুরি ভিত্তিতে ক্রয় করতে হবে।

এ অবস্থায়, রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে পিপিএ ২০০৬ এর ধারা ৬৮(১) এবং পিপিআর, ২০০৮ এর বিধি ৭৬(২) অনুযায়ী সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে প্রস্তাবিত ৯ কোটি এবং ভবিষ্যতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডিসপোজেবল সিরিঞ্জ চায়না ন্যাশনাল ফার্মাসিউিটিক্যালস ফরেন ট্রেড করপোরেশন থেকে কেনা হবে।

প্রতি সিরিঞ্জের দাম পড়বে ৩.৪২ টাকা।

এইচএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *