মঙ্গলবার ২১, মার্চ ২০২৩
EN

বিয়ের ৬ বছর পর জানলেন তারা ভাই-বোন!

তাদের বিয়ে হয়েছে ছয় বছর। এর মাঝে কোল আলো করে এসেছে দুই সন্তান। কিন্তু, এরপরই তাদের জীবনে উঠেছে ঝড়। কারণ, সম্প্রতি এক ডাক্তারি পরীক্ষায় এই ব্রিটিশ দম্পতি জানতে পেরেছেন তারা আসলে ভাই-বোন!

ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম দ্য মিররের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই দম্পতি নিজেরাই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের এই বিস্ময়কর কাহিনি জানিয়েছেন।

যদিও প্রতিবেদনে তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। জানা গেছে, একেবারে ছোটবেলায় তারা পরস্পরের থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছিলেন। স্বামীর দাবি, তাকে খুব ছোটবেলা দত্তক নেয়া হয়েছিল এবং তার জৈবিক বাবা-মা কারা, তা তার জানা নেই। বিশ্বজুড়ে অনেক দেশেই ভাই-বোনের বৈবাহিক সম্পর্ক প্রচলিত রয়েছে। কিন্তু, দুই সন্তান হওয়ার পর স্বামী-স্ত্রী জানতে পারছেন তারা আসলে ভাই-বোন, এমন ঘটনা সম্ভবত কখনও ঘটেনি। আসুন, পুরো ঘটনাটা জেনে নেয়া যাক।

দ্য মিররের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জন্মের পরই ওই ব্যক্তি কোনও কারণে তার বাবা-মায়ের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। একই শহরের অন্য এক দম্পতি তাকে দত্তক নিয়েছিলেন। বড় হওয়ার পর তিনি ওই শহরেরই এক যুবতীয়ের প্রেমে পড়েন। তারপর তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর, এমনকি প্রথম সন্তান হওয়ার পরও তারা জানতেন না যে তারা ভাই-বোন। জানতে পেরেছেন দ্বিতীয় সন্তানের জন্মের পর। স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন। তার আত্মীয়দের মধ্যে কারোরই কিডনি দান করার মতো মিল পাওয়া যাচ্ছিল না। এই সময় স্বামীও পরীক্ষা করান। পরীক্ষার ফল আসতেই চিকিৎসকরা হতবাক হয়ে যান। কারণ, তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে চিকিৎসকরা ভাই-বোনের মতো মিল পেয়েছিল।

স্বামী বলেছেন, আমি কিডনি দান করতে পারি কি-না দেখার জন্য পরীক্ষা করিয়েছিলাম। আমি জানতাম এটা অসম্ভব। কারণ আমরা স্বামী-স্ত্রী। কিন্তু, চিকিৎসকরা আমায় ফোন করে জানান, মিল পাওয়া গেছে। এরপর, ডাক্তাররা তার টিস্যু এইচএলএ (হিউম্যান লিউকোসাইট অ্যান্টিজেন) পরীক্ষাও করেন। সেই পরীক্ষার ফলে দেখা গিয়েছিল, স্বামী-স্ত্রী মধ্যে মিল অত্যন্ত উচ্চ শতাংশের। যা একেবারেই অস্বাভাবিক, এরকমটা সাধারণত ভাই-বোনদের মধ্যে দেখা যায়। ভাই-বোনের মধ্যে ডিএনএ-এর মিল থাকে ১০০ শতাংশের কাছাকাছি। আর বাবা-মা এবং সন্তানদের মধ্যে অন্তত ৫০ শতাংশ মিল থাকে। তাই এই ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী আসলে ভাই-বোন বলেই দাবি করেছেন চিকিৎসকরা।

স্বামী আরও জানিয়েছেন, তাদের সন্তানদের মধ্যে কোনও জেনেটিক ব্যাধি ধরা পড়েনি। তবে, তারা ভাই-বোন জানার পর, তারা কী করবেন এই নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন এই ব্রিটিশ দম্পতি। নেটিজেনদের পরামর্শ চেয়েছিলেন তারা।

অধিকাংশের মত, তারা বিবাহিত এবং ইতোমধ্যে তাদের বাচ্চাও হয়ে গেছে। কাজেই আর ফিরে যাওয়ার উপায় নেই। তাছাড়া, সন্তানদের মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতাও দেখা যায়নি। তারা দুজনেই সুস্থ। কাজেই তাদের উচিত বাচ্চাদের ভালো বাবা-মা হয়েই থাকা। আর ভাই বা স্বামী তার কিডনি দিয়ে সুস্থ করে তুলুন তার বোন বা স্ত্রীকে। কিছু, বদলানোর দরকার নেই। এতদিন ধরে সব কিছু ভালোই তো ছিল।

এনএইচ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *