রাষ্ট্রপক্ষের এক সাক্ষী ও তার পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরীর (জিডি) কপি চাইলে ট্রাইব্যুনালকে দিতে না পারায় রাষ্ট্রপক্ষকে তিরস্কার করলেন ট্রাইব্যুনাল
রাষ্ট্রপক্ষের এক সাক্ষী ও তার পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরীর (জিডি) কপি চাইলে ট্রাইব্যুনালকে দিতে না পারায় রাষ্ট্রপক্ষকে তিরস্কার করলেন ট্রাইব্যুনাল। বৃহস্পতিবার বিচারক ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কায়সারের জামিন বাতিলের শুনানিতে এই তিরস্কার করেন। কায়সারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের প্রথম সাক্ষী কবির উদ্দিনকে হুমকি দেয়ার কথা উল্লেখ করে রানা দাশগুপ্ত বলেন, গত ৬ মার্চ কায়সারের পক্ষ থেকে সাক্ষী কবির উদ্দিনকে সাক্ষ্য না দিতে হুমকি দেয়া হয়। আর যদি সাক্ষ্য দিতেই হয়, তা যেন কায়সারের বিরুদ্ধে না যায়। তিনি আরও বলেন, গত ১০ মার্চ কবির উদ্দিন নিজের ও পরিবারের সদস্যদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে মোহাম্মদপুর থানায় জিডি করেন। এরইমধ্যে গত ৯ মার্চ কবির উদ্দিন সৈয়দ মো. কায়সারের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্যও দিয়েছেন। এই মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীকে হুমকির বিষয়ে জিডি করার ১০ দিন পরও জিডির কপি আনতে না পারার কারণ রাষ্ট্রপক্ষের কাছে জানতে চাইলে রানা দাশ বলেন, আমি এ বিষয়ে জানতে থানায় একবার ফোন করেছিলাম। থানা থেকে পরে কিছু না জানানোর কারণে আমি কিছু জানতে পারিনি। ট্রাইব্যুনালকে তিনি আরও বলেন, আপনারা জিডির বিষয়ে থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তলব করতে পারেন। নয়তো আমাদের এক সপ্তাহের সময় আবেদন করেন। এ সময় চেয়ারম্যান বলেন, আপনি কায়সারের জামিন বাতিলের বিষয়ে শুনানি করছেন। যদি জিডির কপি নিয়ে আসতেন, তাহলে অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ পাওয়া যেত। কিন্তু আপনারাতো জিডির কপিই আনতে পারেননি। চেয়ারম্যান আরও বলেন, জিডির বিষয়ে আমরা তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করতে পারি। কিন্তু তা কেন করবো? আপনারা কেন আছেন? আপনারা কি করেন? এসময় বিচারক শাহীনুর ইসলাম বলেন, ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার দায়িত্ব ছিল- এই জিডির বিষয়ে খোঁজ-খবর নেয়া। তারা ফেল করেছে। তিনি বলেন, সাক্ষীকে হুমকির বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিখিত অভিযোগে ভুল আছে। অভিযোগে ‘গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী কায়সার’ লেখা হয়েছে। কায়সারতো সাক্ষী নন। তিনি আসামি। এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা ‘কেয়ারলেস’। অভিযুক্তকে সাক্ষী হিসেবে উল্লেখ করেছে। আপনারা ওই লেখা ছুড়ে ফেললেন না কেন? নিজেরদের দুর্বলতা বুঝেন। এরপর জিডির কপি ট্রাইব্যুনালে হাজির করার জন্য মামলার কার্যক্রম আগামী ৩০ মার্চ পর্যন্ত মুলতবি করেন ট্রাইব্যুনাল। গত ২ ফেব্রুয়ারী কায়সারের বিরুদ্ধে একাত্তরে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণসহ ১৬টি অভিযোগে অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। গত ৪ মার্চ তার বিরুদ্ধে সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন রাষ্ট্রপক্ষ। গত ৯ মার্চ থেকে তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। গত বছরের ১৫ মে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে কায়সারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। গত বছরের ২১ মে কায়সারকে রাজধানী অ্যাপলো হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার করেন র্যাাব। পরে গত বছরের ৫ আগস্ট কায়সারকে শর্ত সাপেক্ষে জামিন দেন ট্রাইব্যুনাল। [b]ঢাকা, জিই, ২০ মার্চ (টাইমনিউজবিডি,কম) // এআর[/b]