বগুড়ায় শাহজাহান হত্যা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতাসহ ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ সময় তাদের ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে মলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এপিপি নাছিমুল করিম হলি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে একই দিন বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক হাবিবা মণ্ডল এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন- বগুড়া সদর উপজেলার শেখেরকোলা ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা রশিদুল ইসলাম রশিদ মৃধা, পিলু খন্দকার, মোখলেছার রহমান মুকুল, আ. হামিদ খোকা আকন্দ, জাহেদুর রহমান, বিপ্লব মিয়া, রাসেল মিয়া, জুয়েল প্রাং, সবুজ আকন্দ, উজ্জ্বল আকন্দ ও আ. মান্নান। এদের মধ্যে বিপ্লব, রাসেল ও জুয়েল পলাতক রয়েছেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি শেখেরকোলা ইউপিতে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। ভোটে আব্দুস সাত্তার খা এবং রশিদুল ইসলাম ওরফে রশিদ মৃধা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এতে রশিদ মৃধা জয়লাভ করে ১১ ফেব্রুয়ারি তার দলীয় কর্মীদের নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে বিভিন্ন স্থান ঘোরেন এবং সৌজন্য সাক্ষাত করেন। পথিমধ্যে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শেখেরকোলা ইউনিয়নের দক্ষিণভাগ এলাকার মৃত তমিজ উদ্দিনের ছেলে শাহজাহান ও একই এলাকার আব্দুল মান্নানের সঙ্গে রশিদ মৃধার দেখা হয়। তখন রশিদ মৃধা ভোট না দেওয়ার অভিযোগ তুলে শাহজাহানকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। একই সঙ্গে এলাকা ছাড়া করার হুমকি দিতে থাকে।
এদিকে রশিদ মৃধার এমন হুমকি পেয়ে তার সহযোগীরা লোহার রড ও লাঠি দিয়ে শাহজাহানের ওপর আক্রমণ করে। এক পর্যায়ে তারা শাহজাহানের মাথায় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে এলোপাথাড়ি আঘাত করে। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহজাহান ১৩ ফেব্রুয়ারি ভোরে মারা যান। পরে ওই দিনই রশিদ মৃধাকে প্রধান আসামিকে ১১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের ভাই মাহমুদুর রহমান। তবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন সদর থানার এসআই মোস্তাফিজুর রহমান ১১ জুন রশিদ মৃধাকে প্রধান আসামিকে ১১ জনের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।
এ বিষয়ে আইনজীবী নাছিমুল করিম হলি জানান, এ মামলায় আদালত ১১ জনের সাক্ষ্য নেন। সাক্ষ্য ও তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সোমবার দুপুরে এ রায় দেন আদালত।
এবিএস