সরকারের পছন্দের লোক দিয়েই ইসি গঠন করা হবে
Share on:
নির্বাচন কমিশন গঠন করার জন্য সার্চ কমিটি করে কোনো লাভ হবে না। সরকারের পছন্দের তালিকাভুক্ত লোক দিয়েই নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে বলে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলী খান।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে দেশের সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছেন। আলোচনা শেষে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি ২০ জানুয়ারির মধ্যে নতুন সার্চ কমিটি গঠন করবেন।
এই সার্চ কমিটি রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন স্তরের ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে নতুন কমিশন গঠনে সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রস্তুত করবে।
সার্চ কমিটি রাষ্ট্রপতির কাছে সিইসির জন্য ২ জন, ৪ জন নির্বাচন কমিশনারের জন্য ৮ জনের নাম প্রস্তাব করবে। পরে সার্চ কমিটির প্রস্তাবিত মোট ১০ জনের নামের তালিকা থেকে একজন সিইসি ও ৪ জন নির্বাচন কমিশনার চূড়ান্ত করবেন রাষ্ট্রপ্রধান।
এদিকে ইসি গঠন নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান।
নতুন নির্বাচন কমিশনার কারা হবেন, সেই তালিকা হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন ড. আকবর আলি খান। তিনি বলেছেন, সার্চ কমিটি গঠন করে লাভ হবে না।
কারা নির্বাচন কমিশনার হবেন- তা ইতোমধ্যে লিস্টেড (তালিকাভুক্ত) হয়ে গেছে। সার্চ কমিটি সুপারিশ করলেও তারা কমিশনার হবেন, না করলেও তারাই হবেন। সরকারের পছন্দের তালিকাভুক্ত লোক দিয়েই নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে।
আজ শনিবার ( ১ জানুয়ারি) চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (এফডিসি) আয়োজিত ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘সুশাসন নিশ্চিতকরণে স্থানীয় সরকারের ভূমিকা’ শীর্ষক ছায়া সংসদের আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
ড. আকবর আলি খান বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কোন সরকারের অধীনে হবে- তা রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের মধ্য দিয়েই দলগুলো আদায় করে নেবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই কমিশনের অধীনে অনেক নির্বাচন হয়েছে। কমিশন বলে আসছে তারা আইন অনুযায়ী নির্বাচন করছেন।
আর নাগরিক সমাজ মনে করে যে আইনে এ ধরনের নির্বাচন হয় সেটা কোনো আইনই না। বর্তমান কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে এই আইন পর্যালোচনা করতে পারত। কিন্তু তারা তা করেনি।
আকবর আলি খান আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠন করার জন্য সার্চ কমিটি করে কোনো লাভ হবে না। সরকারের পছন্দের তালিকাভুক্ত লোক দিয়েই নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে।
বর্তমান কেএম নূরুল হুদা কমিশন আইনের সঠিক প্রয়োগ করে নাগরিক অধিকার সুরক্ষা ও ভালো নির্বাচন করতে পারত, যা বাস্তবে হয়নি।
উল্লেখ্য, বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি। পরদিন নতুন কমিশন দায়িত্ব গ্রহণ করবে।
নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন নিয়ে এবার তৃতীয়বারের মতো রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজনৈতিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রথমবার ২০১১ সালের ২২ ডিসেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিল্লুর রহমান বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপে ডাকেন।
দ্বিতীয়বার ২০১৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সংলাপ শুরু হয়, চলে ২০১৭ সালের ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। বঙ্গভবনে পর্যায়ক্রমে মোট ৩১টি রাজনৈতিক দল এই সংলাপে অংশ নেয়।
এইচএন