tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
স্বাস্থ্য প্রকাশনার সময়: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪০ এএম

ডিমের সাদা অংশ না কুসুম—কোনটি বেশি উপকারী


ডিম

পুষ্টিকর খাবারের মধ্যে ডিম অত্যন্ত জনপ্রিয় খাদ্য। ডিমের সাদা অংশে থাকে প্রোটিন আর হলুদ অংশ যাকে কুসুম বলা হয়, তাতে থাকে কোলেস্টেরল, ওমেগা–থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ও ভিটামিন বি। অনেক সময় ডায়েটে শুধু ডিমের সাদা অংশ খেতে বলা হয়।


এ ছাড়া হৃদ্‌যন্ত্রকে সুস্থ রাখার জন্য চিকিৎসকেরা ডিমের কুসুম খেতে বারণ করেন। তবে কি ডিমের কুসুমে কোনো পুষ্টিগুণ নেই বা ডিমের কুসুম কি শরীরের জন্য ক্ষতিকর, এ নিয়ে অনেকেই দ্বিধান্বিত থাকেন।

আবার দেখা যায়, অনেক সময় ডায়েট চার্টে ১ দিনে ২টি ডিম খাওয়ার কথা বলা হয়। একসঙ্গে ২টি ডিমের কুসুম খাওয়া শরীরের জন্য কিছুটা ক্ষতিকরই বটে। তাই দেখা যায়, পুষ্টিবিদেরা শুধু ডিমের সাদা অংশ খাওয়ার পরামর্শ দেন।

তবে মনে রাখবেন, যেকোনো সুস্থ সবল ব্যক্তি দিনে কুসুমসহ একটি পুরো ডিম খেতে পারবেন। এমনকি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা সামান্য বেশি থাকলেও প্রতিদিন একটা ডিম খাওয়া যাবে। এতে রোগ প্রতিরোধকক্ষমতা বাড়বে। কমবে বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি।

ক্যালরি

ডিমের সাদা অংশ ও কুসুমের মধ্যে ক্যালরির বেশ পার্থক্য রয়েছে। ডিমের কুসুমে প্রায় ৫৫ ক্যালরি থাকে, যেখানে সাদা অংশে থাকে ১৭ ক্যালরি।

আমিষ

ডিমের কুসুমের তুলনায় সাদা অংশে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি, যা অ্যালবুমিন নামে পরিচিত। উচ্চতর প্রোটিন পর্যাপ্ত থাকায় একে পাওয়ার হাউস বলা হয়। এই প্রোটিন ওজন কমাতে, মাথা ঘোরা কমাতে সাহায্য করে।

চর্বি

ডিমের সাদা অংশে ফ্যাটের কোনো অস্তিত্ব নেই, কিন্তু কুসুমে ভালো ফ্যাট থাকে, যাকে ওমেগা–থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড বলে। এ ছাড়া রয়েছে কোলিন। এরা কোষের আবরণ গঠনে সাহায্য করে। হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমায়, স্নায়বিক রোগ ও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

কোলেস্টেরল

কোলেস্টেরলের ভয়ে ও হার্টকে সুস্থ রাখার জন্য অনেকেই কুসুমকে বাদ দেন। কিন্তু আপনি জানেন কি, শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোন তৈরিতে কোলেস্টেরল প্রয়োজন পড়ে, যা শরীরে শক্তি বৃদ্ধি এবং পেশি গঠনে সাহায্য করে। পিত্তে উপস্থিত অ্যাসিড তৈরিও কোলেস্টেরলের অন্যতম কাজ। তাই খাবারে কোলেস্টেরল না পেলে লিভার নিজেই তৈরি করে নেয়।

ভিটামিন

ডিমের কুসুমে ভিটামিন বি৬, বি১২, এ, ডি, ই, কে রয়েছে। ডিমের কুসুমের ভিটামিন ‘এ’ ক্যারোটিনয়েড হিসেবে থেকে দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে। অপর দিকে সাদা অংশেও বিভিন্ন বি ভিটামিন রয়েছে এবং উন্নত মানের প্রচুর প্রোটিন রয়েছে।

খনিজ পদার্থ

ডিমের মধ্যে ৯৩ শতাংশ আয়রনই রয়েছে কুসুমে। আর ৭ শতাংশ আয়রন রয়েছে সাদা অংশে। ৯০ শতাংশ ক্যালসিয়াম রয়েছে কুসুমে, যা দাঁত ও হাড়ের জন্য উপকারী। সাদা অংশে রয়েছে পটাশিয়াম, যা হৃদ্‌যন্ত্রের যেকোনো সমস্যা থেকে রক্ষা করে। এ ছাড়া রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখে। ক্যালসিয়ামও রয়েছে সাদা অংশে, তবে কুসুমের তুলনায় কম। ডিমের সাদা অংশে রয়েছে ম্যাগনেশিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজসমৃদ্ধ উপাদান, যা শরীরের ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে।

তবে যাঁরা কোলেস্টেরল বা অন্য কোনো ঝুঁকিতে আছেন, শুধু তাঁদের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ডিমের কুসুম খেতে হবে। এ ছাড়া ক্যালরি কম ও ফ্যাট ফ্রি হওয়ার কারণে স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ ডিমের সাদা অংশ খেতে পছন্দ করেন। তবে ডিম সব সময় পোচ বা সেদ্ধ করে খেতে চেষ্টা করবেন। এতে বেশি উপকার মিলবে।

এফএইচ