অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে নাশকতার যোগসূত্র আছে : তথ্যমন্ত্রী
Share on:
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপো এবং সম্প্রতি দুটি ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে নাশকতার যোগসূত্র আছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সোমবার (১৩ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন অ্যাটকো নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএম ডিপোর বিষয়ে আমি আগেও বলেছিলাম সেখানে নাশকতা ছিল কি না সেটা খতিয়ে দেখা দরকার। ধীরে ধীরে এটি স্পষ্ট হচ্ছে। সিলেটের ট্রেনে আগুন লেগেছে একটা টয়লেট থেকে। খুলনাগামী একটি ট্রেন দাঁড়ানো অবস্থায় ছিল, সেটিতেও আগুন লেগেছে। মনেই হচ্ছে এর সঙ্গে নাশকতার যোগ আছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সারাদেশে যে আনন্দ উল্লাস সেটাকে ম্লান করতে, আতঙ্ক তৈরির জন্য এগুলো করা হচ্ছে বলে আমি মনে করি। যারা অগ্নিসন্ত্রাস করে মানুষ হত্যা করেছে, যারা গুজব রটায় তারা তো এ কাজগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। আমি মনে করি এগুলোর সঙ্গে নাশকতার যোগ আছে।
বিএনপি নেতারা খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে রাজনীতি করছে অভিযোগ করে মন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ, তিনি যাতে সুস্থ হয়ে ওঠেন এ প্রার্থনা করছি। বিএনপি মনে হয় না চায় তিনি সুস্থ হোন। তিনি অসুস্থ থাকলে তাদের রাজনীতি করতে সুবিধা হয়।
‘আজকে দেখলাম দলটির এক নেতা যেভাবে বক্তৃতা করছেন, বলছেন খালেদা জিয়া কাতরাচ্ছেন। আমার মনে হলো তিনিই কাতরাচ্ছেন। আসলে ওনারা চান না খালেদা জিয়া সুস্থ হোক। আমাদের চিকিৎসকরা আগেও ওনাকে মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে সুস্থ করে তুলেছেন। আগে তিনি যেমন অসুস্থ ছিলেন, এবারের অসুস্থতা তেমন নয়, আগের চেয়ে ভালো অবস্থায় আছেন তিনি।
দেশে নিবন্ধিত অনলাইন পোর্টালগুলোতে টকশো বা নিউজ বুলেটিন প্রচার অনলাইন নীতিমালা অনুমোদন করে না জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আইনকানুন ঘেটে দেখেছি, প্রচলিত বিধি-বিধান ঘেটে দেখেছি যে অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং পত্রিকার অনলাইনগুলোতে আসলে টকশো বা নিউজ বুলেটিন প্রচার করা সমীচীন নয়। এটি অনলাইন নীতিমালা অনুমোদন করে না।
‘যেহতু আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, সব অনলাইন পোর্টাল যারা নিবন্ধন পেয়েছে এবং পত্রিকার অনলাইন যেগুলোর নিবন্ধন রয়েছে, তাদের আমরা বিষয়টি জানিয়ে দেবো।’
তিনি বলেন, পত্রিকার অনলাইনগুলোও নিবন্ধন নিয়েছে এবং তাদের শর্ত ছিল পত্রিকায় যে কন্টেন্ট আছে সেটাই তারা দিতে পারবে। সেটা তারা নিয়মিত আপডেট করতে পারবে কিন্তু টকশো বা বুলেটিন প্রচার করা নীতিমালায় বলা নেই। তারা করতে পারবে না। আমি মনে করি নিউজ সংশ্লিষ্ট ডিজিটাল বাইট যেতে সমস্যা নেই। কিন্তু টেলিভিশনের মতো বুলেটিন প্রচার করা তো অনুমোদিত নয়।
‘আমরা সংশ্লিষ্টজনকে জানিয়ে দেবো। অনেকেই জানে না বলে করছেন, এমনও আছে। বিষয়টি পরিষ্কার নয় দেখে করছে। আমরা আগে জানাবো যাতে তারা নিজেরাই ব্যবস্থা নেয়।’
অনুমোদনহীন আইপি টিভির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, আইপি টিভির বিষয়ে আমরা যথেষ্ট সতর্ক আছি। মাত্র ১৩টি আইপি টিভির নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে। শর্ত আছে তারা কোনো সংবাদ পরিবেশন করতে পারবে না, এটা মেনেই তারা নিবন্ধন নিয়েছে। এর বাইরেও চলছে।
‘আমরা খুব সহসা নিবন্ধনহীন যেগুলো আছে, তারা বিভিন্ন সময় গুজব রটাচ্ছে, অনেকে আইপি টিভির নামে ইউটিউব খুলে সেটির মাধ্যমে চাঁদাবাজি করে। এ অভিযোগ সাংবাদিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে করা হয়েছে, তারা নানারকম অপকর্মে যুক্ত। সেগুলোর বিরুদ্ধে আমরা আইনগত ব্যবস্থা এবং প্রয়োজনে বন্ধ করার ব্যবস্থা করবো।’
তিনি বলেন, আপনারা জানেন যে দেশে ক্লিনফিড চালাতে বাধ্য সবাই। যারা দেশে সম্প্রচার করতে চায় তারা কিন্তু ক্লিনফিড চালাচ্ছে। ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বড় শহরগুলোতে সমস্যা নেই। কিন্তু উপজেলা বা দুর্গম এলাকায়, জেলা পর্যায়েও কোনো কোনো জায়গায় এর ব্যতয় হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে খুব সহসাই আমরা অভিযান পরিচালনা করবো।
‘আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবো। মোবাইল কোর্টকে আমরা দুটি কাজ দেবো, একটি হচ্ছে আইপি টিভি বা ইউটিউবে যারা গর্হিত কাজ করছে সেগুলোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা এবং যারা ক্লিনফিড চালাচ্ছে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। প্রয়োজনে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা।’ যোগ করেন তথ্যমন্ত্রী।
এমআই