ইসরায়েলের সমর্থনে যুদ্ধজাহাজ পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
Share on:
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে ইসরাইলের সমর্থনে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমান পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে ওয়াশিংটন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন জানিয়েছেন, এরই মধ্যে বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ ‘ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ডে’র সঙ্গে একটি ক্ষেপণাস্ত্র ক্রুজার ও চারটি ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী ব্যবস্থা ইসরাইল উপকূলের দিকে যাত্রা শুরু করেছে।
রোববার (৮ অক্টোবর) হামাসের বিরুদ্ধে ইসরাইলের আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ ঘোষণার পর মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ এক বিবৃতিতে সামরিক সহায়তা দেওয়ার কথা নিশ্চিত করে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব আরও বলেন, অতিরিক্ত সরঞ্জাম ও গোলাবারুদের পাশাপাশি ইসরাইলে মার্কিন যুদ্ধবিমানও পাঠানো হবে। হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, বাইডেন সরকার আগামী দিনে দেশটিতে আরও সামরিক সহায়তা পাঠাবে। তাছাড়া ইসরাইলের শত্রুরা যাতে এ পরিস্থিতি থেকে সুবিধা নিতে না পারে তা নিশ্চিত করতেও কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন জানিয়েছেন, হামাসের হামলায় নিহত ও বন্দিদের মধ্যে কোনো মার্কিন নাগরিক রয়েছে কি না তা যাচাইয়ের কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র। একটি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইরানের প্রসঙ্গ টেনে ব্লিঙ্কেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এ যুদ্ধে ইরানের সরাসরি জড়িত থাকার প্রমাণ পায়নি, তবে ইরান বছরের পর বছর ধরে গাজাভিত্তিক স্বাধীনতাকামী সংগঠনটিকে সহায়তা করে আসছে।
তিনি আরও বলেন, ইরান হামাসকে বহু বছর ধরে সমর্থন দিয়ে আসছে। তাদের সাহায্য ছাড়া ‘হামাস’ এতটা ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারতো না। আমরা এখনো প্রমাণ পায়নি যে, ইরান হামাসের হামলার পেছনে সরাসরি জড়িত ছিলো। তবে তাদের সমর্থন স্পষ্ট। যদিও জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ইসরাইল হামলায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে ইরান।
ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে ও ১১০০ পেরিয়েছে। এর মধ্যে ইসরায়েলে ৭০০ জনের বেশি ও গাজায় কমপক্ষে ৪০০ জন নিহত হয়েছে।
এদিকে, হামাসের সঙ্গে চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দেশের সব রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জরুরি ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। সে আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় নেতা ইয়ার লাপিদ। তবে, জুড়ে দিয়েছেন কঠিন একটি শর্ত।
ইয়ার লাপিদ বলেছেন, আমরা নেতানিয়াহুর সঙ্গে ঐক্যের সরকারে যোগ দিতে পারি, যদি তিনি তার সরকার থেকে কিছু ডানপন্থী সদস্যকে বের করে দেন।
ইসরায়েলে নিযুক্ত আল জাজিরার প্রতিনিধি উউলেম মার্ক্স বলছেন, ইসরায়েলি সংসদ নেসেটে খুব সংকীর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রেখেছেন নেতানিয়াহু। তবে সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গ্যান্টজ ঐক্যের সরকারে যোগ দেওয়ার বিষয়ে নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টির সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী নির বারকাত বলেছেন, ইসরায়েল যুদ্ধে রয়েছে ও এটি জাতীয় ঐক্য সরকার গঠনের সময়। এরকম একটি জটিল সময়ে আমাদের অবশ্যই মতভেদকে দূরে রেখে শত্রুদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলি যোদ্ধারা রাষ্ট্রের জন্য যুদ্ধ করতে যাচ্ছে। আমাদের অবশ্যই তাদের সমর্থন করতে হবে ও যুদ্ধে জয়ী হতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের এমন এক সরকার গঠন করতে হবে, যা সমগ্র জনগণের প্রতিনিধিত্ব করবে।
এমবি