অস্ট্রেলিয়ান পার্লামেন্টে ভয়াবহ যৌন সংস্কৃতি, ৬৩ শতাংশ নারী সদস্য যৌন হয়রানির শিকার
Share on:
অস্ট্রেলিয়ান পার্লামেন্টে উত্থাপিত রিপোর্টটিতে ১,৭২৩ জন ব্যক্তি ও ৩৩টি প্রতিষ্ঠানের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে। এতে দেখা গেছে, নারী পার্লামেন্ট সদস্যদের ৬৩ শতাংশই যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন, আর নারী রাজনৈতিক কর্মচারীদের ক্ষেত্রে এর অনুপাত আরো বেশি।
অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টে ভয়াবহ যৌন নিগ্রহ ও উৎপীড়নের ঘটনা ঘটছে। একটি উচ্চ পর্যায়ের অনুসন্ধানের মাধ্যমে বিষয়টি জানা গেছে।
ওই অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ান পার্লামেন্টে এক ধরনের ভয়াবহ যৌন সংস্কৃতির সন্ধান পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার এমন সংবাদ প্রকাশ করেছে আল-জাজিরা ও বিসিসি।
দেশটির সরকারের একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দেখা গেছে, অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল পার্লামেন্টে কর্মচারীদের এক-তৃতীয়াংশই কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন।
এ বছরের প্রথম দিকে এক অস্ট্রেলিয়ান মন্ত্রীর দফতরের সাবেক কর্মচারী ব্রিটানি হিগিন্স অভিযোগ করেছিলেন যে তারই একজন সহকর্মী তাকে ধর্ষণ করেছেন।
ওই ঘটনার পর অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরায় এ ধরনের বহু যৌন নিগ্রহের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতে থাকে।
এমন প্রেক্ষাপটেই এক অনুসন্ধানের পর ‘সেট দ্য স্ট্যান্ডার্ড’ নামের রিপোর্টটি উপস্থাপন করা হয়। এর রচয়িতা ও যৌন বৈষম্য সংক্রান্ত কমিশনার কেট জেংকিন্স বলছেন, এসব ঘটনার শিকারদের মধ্যে নারীর সংখ্যা পুরুষদের থেকে বেশি।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, কর্মচারীদের ৫১ শতাংশেরই কোনো না কোনো ধরনের যৌন নিগ্রহ, যৌন হয়রানি ও যৌন আক্রমণ বা আক্রমণের চেষ্টার অভিজ্ঞতা হয়েছে।
মঙ্গলবার পার্লামেন্টে উত্থাপিত রিপোর্টটিতে ১,৭২৩ জন ব্যক্তি ও ৩৩টি প্রতিষ্ঠানের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে।
এতে দেখা গেছে, নারী পার্লামেন্ট সদস্যদের ৬৩ শতাংশই যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন, আর নারী রাজনৈতিক কর্মচারীদের ক্ষেত্রে এর অনুপাত আরো বেশি।
একজন এমপি নাম প্রকাশ না করে বলেছেন, ‘উচ্চাকাঙ্ক্ষী পুরুষ রাজনীতিবিদরা এগুলোকে কোনো ঘটনা বলেই মনে করে না।
নারীদের উঠিয়ে নেয়া, ঠোঁটে চুমু দেয়া, নারীদেরকে কোলে তুলে নেয়া, নারীদের শরীরের (স্পর্শকাতর স্থানে) স্পর্শ করা, নিতম্বে থাপ্পর দেয়া, নারীর চেহারা নিয়ে মন্তব্য করা - এগুলো খুবই সাধারণ ঘটনা।’
তিনি বলেন, ‘আমি বলতে চাই যে (অস্ট্রেলিয়ান) সংস্কৃতি এটাকে অনুমোদন করেছে, উৎসাহিত করেছে।’
জেংকিন্স বলেন, এসব ঘটনার শিকার ও তাদের সহযোগীদের জন্য এসব ছিল মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা এবং তা পার্লামেন্টের কাজের মান ক্ষুণ্ণ করেছে, দেশেরও ক্ষতি হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন এ রিপোর্টে উদঘাটিত রগরগে তথ্যকে ‘চরম দুঃখজনক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
তার বিরুদ্ধে এর আগে অভিযোগ উঠেছিল যে নারী সংক্রান্ত এসব ইস্যুর ব্যাপারে তিনি বধিরের মতো আচরণ করেন।
রিপোর্টে নেতৃত্বের মান উন্নত করা, নারী-পুরুষের অনুপাত বাড়ানো এবং মদ্যপানের প্রবণতা কমানোর সুপারিশ করা হয়। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা ও বিসিসি।
এইচএন