জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে গণপরিবহন বন্ধ , দুর্ভোগে সাধারন জনগণ
Share on:
বাংলাদেশের জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারনে টানা তৃতীয় দিনের মতো বন্ধ রয়েছে সকল ধরনের গণপরিবহন। ৩ গুণ ভাড়া দিয়ে রিকশা, সিএনজি করে অফিসের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
বাংলাদেশের জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারনে টানা তৃতীয় দিনের মতো বন্ধ রয়েছে সকল ধরনের গণপরিবহন।
আজ রবিবার (৭ নভেম্বর) সকল থেকে রাজধানীতে অফিসগামী মানুষ চরম ভোগান্তির মুখোমুখি হচ্ছেন।
দীর্ঘ সময় বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থেকে গাড়ি না পেয়ে অনেকে বাসায় ফিরে গিয়েছেন, আবার অনেকে ৩ গুণ ভাড়া দিয়ে রিকশা, সিএনজি করে অফিসের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
এদিকে পরিবহন নেতৃবৃন্দ বলছেন, সমন্বয় ছাড়া এ সমস্যার সমাধান হবে না।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকেও বর্তমান পরিস্থিতি আমলে এনে দ্রুত সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
রাজধানী ঢাকার বাংলামটর, কাওরানবাজার, ফার্মগেট, সাতরাস্তা, মহাখালী ও বাড্ডা সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ভোগান্তি সঙ্গী করেই অফিসে যাচ্ছেন কর্মজীবী মানুষ।
একটি বেসরকারি অফিসে হিসাব বিভাগে চাকরি করেন আরিফুর রহমান। তিনি প্রতিদিন কাওরানবাজার সার্ক ফোয়ারা মোড় থেকে বাসে করে পল্টনে অফিসে যান।
তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘সকাল ৮টা থেকে বাসস্ট্যান্ডে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছি, তবে গাড়ি পাচ্ছি না।
আর অন্যান্য যে গাড়িগুলো আছে, তারা অতিরিক্ত ভাড়া চায়। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি আজ আর অফিসে যাব না।
অপর এক অফিসগামী যাত্রী ধীরেন্দ্রনাথ বলেন, ‘ফার্মগেট থেকে মিরপুর শেওড়াপাড়া পর্যন্ত সিএনজি ভাড়া সর্বোচ্চ ১২০ টাকা, সেখানে চাচ্ছে ৩০০ টাকা।
আমার সারাদিনের আয় ৫০০ টাকা, তাই ৩০০ টাকা যদি গাড়ি ভাড়ায় চলে যায় তাহলে আমাদের কী আর করার আছে?
রেহানা বেগম (বেসরকারি চাকরিজীবী) ফার্মগেট থেকে প্রতিদিন গুলশানে অফিস করেন।
তিনি বলেন, ‘সব কষ্ট তো আমাদের জন্য। আমরা নারীরা তো ধাক্কাধাক্কি করে গাড়িতে উঠতে পারছি না। দুই একটা বাস আসছে তাতে অনেক ভিড়।
এ অবস্থায় আমাদের অসহায় হওয়া ছাড়া কিছু করার নেই। সরকারের কাছে দাবি জানাই যাতে দ্রুত সমস্যা সমাধান করে।’
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘তেলের দাম বাড়ছে, তবে সিএনজিচালিত যে গণপরিবহনগুলো রয়েছে সেগুলো কেন চলবে না।
মানুষের কষ্টের কথা বিবেচনা করে এ গাড়িগুলো চলাচল করা উচিত। লঞ্চের মালিকরা শতভাগ ভাড়া বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছে এইটা একেবারে অযৌক্তিক।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করছি তেলের দাম বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে একটি কুচক্রী মহল সরকারকে অসুবিধায় ফেলানোর চেষ্টা করছে।
ভাড়া বাড়ানোর চেষ্টা করছে, না হলে সিএনজিচালিত গাড়িগুলো কেন বন্ধ করে রাখবে।
দেশের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত জনগণের জীবন-জীবিকা সচল রাখতে ‘অযৌক্তিকভাবে’ বর্ধিত জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি ও পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহারের দাবি জানান যাত্রী কল্যাণ সমিতির এই নেতা।
এ প্রসঙ্গে অ্যাসোসিয়েশন অব বাস কোম্পানিজ এর সভাপতি খন্দকার রফিকুল হোসেন কাজল সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘তেলের দাম যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, এতে অবশ্যই ভাড়া সমন্বয় করতে হবে-না হলে সড়কে গাড়ি চালানো সম্ভব না।
গাড়িতে কিন্তু শুধু তেলের খরচ না, আরও অনেক খরচ আছে সেগুলো সাধারণত আমরা দেখতে পাই না। সরকারকে সবকিছু বিবেচনা করার আহ্বান জানান তিনি।
উল্ল্যেখ্য, ডিজেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে গত শুক্রবার (৭নভেম্বর) সকাল থেকে লাগাতার ধর্মঘটের ডাক দেয় পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা।
এইচএন