ডেঙ্গুর শোচনীয় পরিস্থিতির জন্য শাসকগোষ্ঠীই দায়ী: রিজভী
Share on:
বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকারের মানবদরদী স্বত্তার অভাবের কারণেই জনগণের জীবন আজ সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে। এই শোচনীয় পরিস্থিতির জন্য শাসকগোষ্ঠী ও তাদের সাঙ্গ-পাঙ্গরাই দায়ী।
আজ সোমবার বিকেলে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ডেঙ্গুতে মৃত্যু কমছে না। এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগ সারা বছরব্যাপী আক্রান্ত করে। বর্ষা ও শরৎ মৌসুমে এর প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। সেপ্টেম্বরের শুরু থেকেই ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। গণমাধ্যমের হিসাব অনুযায়ী, গত জানুয়ারী থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ পঁয়তাল্লিশ হাজারেরও অধিক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পর্যালোচনাতে বলা হয়েছে যে ৫৫ শতাংশ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে পৌঁছার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যুবরণ করছে। বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা কমার কোনো লক্ষণ নেই। আরো কিছু দিন এই রোগের বিস্তার হতে পারে বলে স্বাস্থ্যবিদরা মনে করছেন। আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা না কমলে মৃতের সংখ্যাও কমবে না। বারবার এই ভয়াবহ রোগের পুনরাবৃত্তি হওয়া সত্ত্বেও সরকারের পক্ষ থেকে আগাম কোনো সতর্কতা বা পূর্বাভাস দেয়া ও প্রতিরোধের কোনো চেষ্টা করা হয়নি। এই প্রাণবিনাশী রোগ প্রতিরোধে সরকারের আগাম প্রস্তুতি থাকলে বর্তমানে মহামারী পরিস্থিতির উদ্ভব হতো না। দেশে দেশে ফ্যাসিস্ট সরকাররা জনগণের প্রাণের তোয়াক্কা করে না।
তিনি বলেন, সরকার নিজেদের ক্ষমতা নিরঙ্কুশ করার জন্যই বরং জনতার লাশের সারি বিস্তৃত করে। এ বছর বিস্ময়কর ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাবে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অথচ ওই রোগ প্রতিরোধে সরকারের কোনো উদ্যোগ নেই। এই রোগ নির্ণয়ে নিম্নমানের কীট ও চিকিৎসা সরঞ্জামাদির কারণে রোগীদের বেহাল দশা। প্রতিদিনই এত রোগী বাড়ছে যে হাসপাতালে ঠাঁই হচ্ছে না। এই ফ্যাসিস্ট সরকারের মানবদরদী সত্তার অভাবের কারণেই জনগণের জীবন আজ সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে। এই শোচনীয় অবস্থার জন্য অবৈধ শাসকগোষ্ঠী ও তাদের সাঙ্গ-পাঙ্গরাই দায়ী।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, কতৃর্ত্ববাদী আওয়ামী শাসনের ভিত্তি হলো বলপ্রয়োগ ও ভয় উৎপাদন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেকে টিকিয়ে রাখার জন্য তৈরি করেছেন নিষ্ঠুর ধ্বংসের পথ। মানুষের বেঁচে থাকা বা স্বাভাবিক জীবন-যাপনকে প্রধানমন্ত্রী মোটেই পছন্দ করেন না। আওয়ামী লীগ নেতাদের লুটপাটের পাশাপাশি মেগা প্রজেক্টের নামে তেলেসমাতির কাহিনী এখন মানুষের মুখে মুখে। বিশ্বের সকল স্বৈরশাসকের মতোই কিছু ফ্লাইওভার দেখালেই তারা মনে করে মানুষের দুঃখকষ্ট, ব্যথা-বেদনা সেরে যাবে। কিন্তু জনস্বাস্থ্যকে উপেক্ষা করে মানুষকে রোগ-ব্যাধির মধ্যে নিপতিত করে ক্ষমতাঘনিষ্ঠ লোকজন জনগণের টাকাকে খোলামকুচিতে পরিণত করে বিত্ত-বৈভবের পাহাড় গড়েছে। যার নতুন নতুন কাহিনী প্রকাশ পাচ্ছে। এর মধ্যে ২৫২ কর্মকর্তার ইউরোপ-আমেরিকায় প্রাসাদসম বাড়ির এখন ‘টক অব দি মান্থ’। আর এদিকে সারাদেশ ডেঙ্গুতে কাতরাচ্ছে। এই অবৈধ সরকার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও টিআইবি যে সুপারিশ করেছে তাও মানছে না। মানুষ বাঁচাতে এদের কোনো মাথাব্যথা নেই।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন প্রমুখ।
এমআই