শ্রমিক বিক্ষোভ: আশুলিয়ায় আজও অন্তত ৬০ পোশাক কারখানায় ছুটি ঘোষণা
Share on:
বিভিন্ন দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভের মুখে আজও শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার অন্তত ৬০ টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ।
শিল্প পুলিশ সূত্র জানায়, আজ (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে আশুলিয়ার বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়কের বাইপাইল থেকে জিরাবো এলাকা পর্যন্ত অবস্থিত বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশ করলেও কাজ না করে বিভিন্ন দাবি আদায়ে বিক্ষোভ শুরু করার পর কর্তৃপক্ষ একে একে কারখানাগুলো ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়।
কিছু কারখানায় ছুটি ঘোষণার পর শ্রমিকরা বাইরে বেরিয়ে এসে অন্যান্য কারখানার সামনে গিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। পরবর্তীতে তারা ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে, সেসব কারখানা কর্তৃপক্ষও কারখানায় ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়।
সকাল ১০ টা পর্যন্ত এই অঞ্চলের অন্তত ৬০টি ছোট-বড় পোশাক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
শ্রমিক বিক্ষোভের মুখে বর্তমানে বন্ধ রয়েছে নবীনগর-চন্দ্রা এবং বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়ক।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে শিল্প পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরা।
শ্রমিক বিক্ষোভের মুখে বন্ধ রয়েছে নবীনগর-চন্দ্রা এবং বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়ক। ছবি: সংগৃহীত
শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড কে বলেন, "শ্রমিকদের বিক্ষোভের মুখে বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের জিরাবো এলাকা পর্যন্ত সড়কের উভয় পাশে হামীম, শারমীনসহ অন্তত ৬০ টি কারখানা কর্তৃপক্ষ কারখানা ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে।"
তিনি আরো বলেন, "সকাল ৮টার পর এই ঝামেলা শুরু হওয়ার পরে একে একে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কারখানা কর্তৃপক্ষ কারখানাগুলো ছুটি দিয়ে দেয়। শ্রমিকরা এখনো সড়কে রয়েছেন, আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি"।
সড়ক অবরোধ প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার বলেন, "এমনিতেই তো সড়কটি সরু (বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর), তার ওপর শ্রমিকরা এই সড়কে নেমে এলে স্বাভাবিকভাবেই যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি"।
তবে বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়ক ব্যতীত শিল্পাঞ্চলের ডিইপিজেড সহ অন্যান্য এলাকাগুলোতে কারখানার কার্যক্রম স্বাভাবিক আছে বলেও জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, আশুলিয়ায় পোশাক কারখানায় নারী-পুরুষের সমানুপাতিক হারে নিয়োগসহ বিভিন্ন দাবিতে নবীনগর-চন্দ্রা ও বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়ক অবরোধ করে সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) বিক্ষোভ করেন চাকরিপ্রত্যাশী শ্রমিকরা। একপর্যায়ে আন্দোলনরত শ্রমিকরা নবীনগর-চন্দ্রা ও বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ব্যারিকেড তৈরি করে অবরোধ করেন ও বিভিন্ন কারখানা লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন।
এমন পরিস্থিতিতে বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের বাইপাইল থেকে জিরাবো পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে অবস্থিত অন্তত ৩০টি কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের কারখানায় ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়।
পরবর্তীতে সেদিন সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে যৌথ অভিযান পরিচালনার কথা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম।
বৈঠকে বিশৃঙ্খলায় জড়িত বহিরাগতদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশনা দিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পুলিশ, শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন। এছাড়া অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) থেকে সব কারখানা চালু রাখতে মালিকদের অনুরোধ জানান তিনি।
যৌথ অভিযানের ঘোষণায় গতকাল অনেকটাই শান্ত ছিল আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল। শিল্প পুলিশ সূত্র জানিয়েছিল, গতকাল সকাল থেকে কিছু কারখানা ব্যতীত অধিকাংশ কারখানা খোলা ছিল এবং সেগুলোতে স্বাভাবিকভাবে কার্যক্রম চলেছে।
এফএইচ