মাগুরায় বিদেশি সবজি স্কোয়াশ চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে
Share on:
মো.সাইফুল্লাহ : মাগুরার শ্রীপুরে প্রথমবারের মতো চাষ হচ্ছে বিদেশি সবজি স্কোয়াশ। এ চাষে মাগুরার কৃষকদের মাঝে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে।
জেলার আমলসার ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামে কৃষক আসাদুজ্জামান বিদেশি এ সবজি স্কোয়াশ চাষ করে পেয়েছেন কাঙ্খিত সফলতা। মালচিং পদ্ধতিতে প্রথমে জমিতে বেড তৈরি করে তিনি এ চাষ করছেন। পরিশ্রম কম কিন্তু লাভ বেশি বিধায় এ চাষে তিনিসহ এলাকার অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করছেন।
কৃষি বিভাগ বলছে, স্কোয়াশ সবজি বাংলাদেশের অনেক জায়গায় এবারেই প্রথম চাষ হচ্ছে। এটি মুলত মধ্যপ্রচারের দেশগুলোতে অনেক ভালো হয়। শীতকালীন সবজি হিসেবে এটি বেশি পরিচিত। সবজিটি লম্বাটে আকৃতির একটি ফসল। অনেকটা আমাদের দেশের লাউ ও মিষ্টি কুমড়োর মতোই। খেতে সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যসম্মত একটি সবজি। কৃষিবিভাগ থেকে এ চাষে কৃষকদেরকে বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে।
উপজেলার আমলসার ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের কৃষক আসাদুজ্জামান টাইম নিউজকে বলেন, প্রথমবারের মতো আমি মালচিং পদ্ধতিতে স্কোয়াশ চাষ করে সফলতা পেয়েছি। শ্রীপুর উপজেলা কৃষি অফিস থেকে আমি প্রথমে প্রশিক্ষণ গ্রহন করি। তারপর এ চাষে মনোনিবেশ করি। স্কোয়াশ সবজিটি একটি বিদেশি সবজি। আমি এবার ১০ শতাংশ জমিতে চাষ করেছি।
তিনি বলেন, প্রথমে জমিতে বেড তৈরি করে জৈব সার দিয়ে জমি প্রস্তুত করি। এরপর এ বছর নভেম্বর মাসের শুরুতে ইউনাইটেড সিডের বীজ সংগ্রহ করে জমিতে রোপন করি। বীজ বোনার কিছু দিনের মধ্যে জমি ভালোভাবে পরিচর্যা করি। ১ মাসের মধ্যে বীজ থেকে চারা গজানো সাথে সাথে ক্ষেতের পরিচর্যায় আরো যত্নশীল হই। ডিসেম্বর মাসের প্রথমে গাছে ফল আসা শুরু হয়। আমার ক্ষেতে এবার ৪২০টি স্কোয়াশ গাছের চারা হয়েছে। একটি দেখতে লম্বাটে আকৃতির সবজি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের লাউ খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি স্কোয়াশ খেতেও তেমনি সুস্বাদু। এ চাষে আমি ফেরোমন ট্রাপ ব্যবহার করে ক্ষেতের পোকা ধ্বংসের হাত থেকে ফসলকে রক্ষা করেছি। আমার খরচ হয়েছে ৮-১০ হাজার টাকা। এ বছর আমি ২৫-৩০ হাজার টাকার স্কোয়াশ সবজি বিক্রি করবো বলে আশা রাখছি। এ চাষে শ্রীপুর উপজেলা কৃষি অফিস আমাকে সর্বাত্বক পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করেছে।
একই এলাকার অন্য চাষী সেলিম জানান, আমি এবার নতুন সবজি হিসেবে স্কোয়াশ চাষ করেছি। এটি একটি নতুন জাতের সবজি ফসল। এ চাষে আমাদেরও ধারণা একেবারই কম। তাই শ্রীপুর উপজেলা কৃষি অফিসের সাথে যোগাযোগ করে তাদের সার্বিক পরামর্শে আমি এবারই প্রথম স্কোয়াশ চাষ করেছি ১০ শতাংশ জমিতে। এটি লাউয়ের মতো একটি সবজি । একটি স্কোয়াশ গাছে ৮-১০টি ফল ধরে। এক একটি ওজন হয় প্রায় ১ কেজি থেকে সোয়া কেজি। বর্তমানে আমাদের এলাকার অনেক কৃষকই আমাদের দেখে এ চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছে।
শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সালমা জাহান নিপা বলেন, স্কোয়াশ সবজি মধ্যপ্রচারের বিভিন্ন দেশে চাষ হয়। আমরা এই প্রথম বারের মতো এ চাষে কৃষকদের উদ্ধুদ্ধ করেছি। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে এ চাষে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এটি একটি নিরাপদ, সুস্বাদু সবজি। এ সবজির আদি নিবাস অস্ট্রেলিয়ায়। বর্তমানে এ সবজি আকর্ষনীয় ও সুস্বাদু হওয়ায় আমাদের দেশে এ চাষ হচ্ছে। এ চাষে কৃষকদের পরিশ্রম কম ও লাভ বেশি । মালচিং পদ্ধতি এ চাষ করতে হয়। প্রথমে জমিতে বেড তৈরি জৈব সার প্রয়োগ করে জমি প্রস্তুত করতে হয়। তাছাড়া এ সবজিটি আমাদের দেশের চরাঞ্চলে বেশি চাষ হয়। শ্রীপুর উপজেলার কৃষকদের স্কোয়াশ চাষে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করে আসছি।
এনএইচ