tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
খেলা প্রকাশনার সময়: ২০ নভেম্বর ২০২২, ১৭:১৯ পিএম

কাতার বিশ্বকাপ-২০২২ : রাতে ফুটবল বিশ্বযুদ্ধ শুরু


FIFA

গোটা বিশ্ব এখন ফুটবল জ্বরে আক্রান্ত, মাতোয়ারা ছোট-বড় সবাই। যথারীতি চার বছর পর ফের বিশ্বকাপের দামামা বেজে উঠেছে।


রোববার (২০ নভেম্বর) থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্বকাপের সেই ফুটবল মহারণ। ৩২ দেশের অংশগ্রহণে আট গ্রুপে হবে এই মহাযজ্ঞের প্রথম রাউন্ড।

উদ্বোধনী দিনে স্বাগতিক কাতারের মুখোমুখি ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ইকুয়েডর। বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় কাতারের আল বাইত স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে ফুটবল বিশ্বযুদ্ধের।

২০০২ সালে এশিয়া মহাদেশে প্রথম বিশকাপ আয়োজন করা হয়েছিল। জাপান-দক্ষিণ কোরিয়া যৌথভাবে এ আয়োজন করে। সেবার জার্মানিকে হারিয়ে বিশ্বকাপের পঞ্চম শিরোপা ঘরে তুলেছিল ব্রাজিল। এবার দ্বিতীয়বারের মতো এশিয়ায় বসেছে বিশ্ব ফুটবেলের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ের এ আসর।

৩২টি দেশ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করছে আট গ্রুপে বিভক্ত হয়ে। ‘এ’ গ্রুপে স্বাগতিক কাতারের সঙ্গে আছে ইকুয়েডর, নেদারল্যান্ডস ও সেনেগাল। ‘বি’ গ্রুপের ইংল্যান্ডের সাথে আছে ওয়েলস, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র। ‘সি’ গ্রুপের দলগুলো হচ্ছে-আর্জেন্টিনা, সৌদি আরব, পোল্যান্ড ও মেক্সিকো।

এছাড়া ‘ডি’ গ্রুপের চার দল হচ্ছে- ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, ডেনমার্ক ও তিউনেসিয়া। ‘ই’ গ্রুপে রয়েছে স্পেন, জার্মানি, কোস্টারিকা ও জাপান। ‘এফ’ গ্রুপের চার দল হচ্ছে- বেলজিয়াম, কানাডা, মরোক্কো ও ক্রোয়েশিয়া। ‘জি’ গ্রুপের দলগুলো হচ্ছে- ব্রাজিল, সার্বিয়া, সুইজারল্যান্ড ও ক্যামরুন। ‘এইচ’ গ্রুপে আছে পর্তুগাল, ঘানা, উরুগুয়ে এবং দক্ষিণ কোরিয়া।

প্রসঙ্গত, পশ্চিম আফ্রিকান দেশ মরক্কো রেকর্ড পাঁচবার বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজনের চেষ্টা করেও ব্যর্থ । ১৯৯৪, ১৯৯৮, ২০০৬, ২০১০ ও ২০২৬ সালের বিশ্বকাপ নিজেদের দেশে করতে চেয়েছিল।

২০১০ সালের মধ্যে মরক্কো যদি বিশ্বকাপ পেত তাহলে তারাই হতো প্রথম মুসলিম দেশ হিসেবে এই বিশাল মহাযজ্ঞের আয়োজক। তবে কখনো এশিয়ান দেশগুলোর বেঈমানি কখনো পশ্চিমা দেশগুলোর নানা নোংরামি মরক্কোকে সেই সুযোগ দেয়নি।

তবুও ফের ২০৩০ সালের বিশ্বকাপের জন্য বিড করছে। মরক্কোর ব্যর্থতার পর কাতার পেল সেই গৌরব। মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশ প্রথম মুসলিম দেশ হিসেবে আয়োজন করতে যাচ্ছে গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ নামের এই আসর।

রোববার (২০ নভেম্বর) ৩২ দেশের প্রতিনিধিত্বে এই আসর স্বাগতিক কাতার ও ল্যাতিন দেশ ইকুয়েডরের ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়াচ্ছে। বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় আল বাইয়েত স্টেডিয়ামে ম্যাচটি দিয়ে বিশ্বকাপের পর্দা উঠবে।

২০২২ সালের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই বিশ্বকাপের অন্যতম দাবিদার ছিল। কিন্তু তাদের টপকে হোস্টের মর্যাদা কাতারের দখলে। আর এতেই তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে মার্কিন সমর্থনপুষ্ট পশ্চিমা বিশ্ব। তাদের মিডিয়াও নিরপেক্ষতাকে বৃদ্ধাঙুুলি দেখিয়ে সমালোচনা করেই যাচ্ছে।

রাতে শুরু হচ্ছে এই বিশ্বকাপ। শনিবার (১৯ নভেম্বর) সংবাদ সম্মেলন পর্যন্ত ছিল এ নিয়ে তীর্যক সব প্রশ্ন। ফিফা সভাপতি জিওভান্নি ইনফান্তিনোর সংবাদ সম্মেলনের প্রায় পুরোটাই ছিল কাতার বিশ্বকাপ ঘিরে সমালোচনামূলক নানা প্রশ্ন। ফিফা সভাপতিও এই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিডিয়াকর্মীদের পাল্টা জবাব দিয়ে চুপ করিয়ে দিয়েছেন।

২০১০ সালের ২ ডিসেম্বর ছিল কাতারের জন্য ঐতিহাসিক দিন। ওই দিন সাবেক ফিফা সভাপতি সেফ ব্লাটার ২০২২-এর বিশ্বকাপের হোস্ট হিসেবে কাতারের নাম ঘোষণা করেন। এরপরই শুরু হয়ে যায় মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশের বিশ্বকাপের ব্যাপক প্রস্তুতি।

সেই সূত্র ধরেই পাল্টে যাওয়া রাজধানী দোহাসহ পুরো কাতার। বিলিয়ন বিলয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিত স্টেডিয়াম, হোটেল, মেট্রোসহ অত্যাধুনিক যোগাযোগব্যবস্থা সবই হয়েছে। এখন কাতারে অবস্থানরত সমালোচকরাও সেই সুবিধাই নিতে শুরু করেছেন।

কাতার বিশ্বকাপই শেষ আসর যেখানে ৩২ দেশের প্রতিনিধিত্ব থাকবে। ২০২৬-এর বিশ্বকাপের তিন যৌথ আয়োজক। মেক্সিকো, কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র্রের সেই আসরে ৪৮ দল লড়বে ট্রফি জয়ের জন্য। দোহা এবং এর আশপাশের শহরে আট স্টেডিয়ামে হবে এবারের বিশ্বকাপ।

স্টেডিয়ামগুলো হচ্ছে : লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়াম, আল বাইয়েত স্টেডিয়াম, খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম, আল থুমামা স্টেডিয়াম, এডুকেশন সিটি স্টেডিয়াম, স্টেডিয়াম ৯৭৪, আল জানুব স্টেডিয়াম ও আহমেদ বিন আলী স্টেডিয়াম। ১৮ ডিসেম্বর লুসাইল স্টেডিয়ামে ফাইনাল দিয়ে পর্দা নামবে এই বিশাল আয়োজনের।

কাতারের মাঠে ৩২ দেশের অংশগ্রহণ থাকলেও ফেবারিট ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, স্পেন, বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স, জার্মানি, ইংল্যান্ড ও বেলজিয়াম। এর বাইরে গতবারের রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়ার মতো যেকোনো দেশও দেখাতে পারে চমক।

সারা বিশ্বের দুই শতাধিক দেশের মানুষের উপস্থিতিতে সরগরম এখন কাতার । হোটেলে জায়গা নেই। দোহার দুই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মহা ব্যস্ততা। বিভিন্ন দেশের ফুটবল টিম আর সমর্থকদের নিয়ে নামছে বিমান।

নানা দেশ থেকে আসা ফুটবলপ্রেমীদের উপস্থিতিতে মুখরিত দোহা। যাদের পক্ষে আটটি স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা দেখা হবে না তাদের জন্য ফ্যান ফ্যাস্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ছোট দেশ। আবাসিক ব্যবস্থা অপ্রতুল। তাই জাহাজে রাখার ব্যবস্থা ফুটবল ভক্তদের।

আবার কনটেইনার আকৃতির ফ্যান ভিলেজও করা হয়েছে। অবশ্য সবই ব্যয়বহুল। এই বিশ্বকাপ একটি দেশকেই চ্যাম্পিয়ন করাবে। বাকি ৩১ দেশ হতাশা নিয়ে ফিরে যাবে। এর মধ্যে কারো কারো একটি জয় বা পরের রাউন্ডে যাওয়াটা হবে বড় প্রাপ্তি।

কাতার বিশ্বকাপ কিছু নতুন ফুটবল প্রতিভার জন্ম দেবে। সে সাথে এটাই শেষ বিশ্বকাপ লিওনেল মেসি, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোসহ আরও অনেক তারকার। যদিও বেশির ভাগের প্রত্যাশা মেসির দেশ আর্জেন্টিনা বা নেইমারের ব্রাজিল জিতুক এই শিরোপা।

এন