লালখাতা আর হালখাতায় উৎসবমুখর পুরান ঢাকা
Share on:
পহেলা বৈশাখেই নতুন টালিখাতা খুলেছেন। নতুন বছরের শুরুতেই মেটানো হচ্ছে পুরনো সব দেনা-পাওনা। দোকান সাজিয়ে আপ্যায়ন করা হচ্ছে ক্রেতাদের। ব্যবসার হিসাব-নিকাশে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার হলেও রাজধানী ঢাকার কিছু এলাকায় রয়ে গেছে ঐতিহ্যবাহী হালখাতা।
পুরনো রেওয়াজ-রীতি মেনে মুসলমান ব্যবসায়ীরা দোয়া-মোনাজাত আর সনাতন ধর্মাবলম্বীরা গণেশ পূজার মধ্য দিয়ে হালখাতার আয়োজন করেছেন। খরিদ্দারের কাছ থেকে পাওনা আদায়ে দিনভর চলবে এই হালখাতা।
পহেলা বৈশাখের দিন রাজধানীর তাঁতীবাজার, শাঁখারীবাজার এবং ইসলামপুরে দেখা যায়, জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে কীভাবে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে চলে লেনদেন ও কোলাকুলির মাধ্যমে কুশল বিনিময়।
মুসলিম সম্প্রদায়ের ব্যবসায়ীরা দোকানে কোরানখানি, তেলাওয়াত, দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেছেন।
ইসলামপুর বাজারের ডিজিটাল শাড়ির বিক্রয় প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম বলেন, পহেলা বৈশাখ মানে বছরের একদিন একে অপরের খোঁজ-খবর নেওয়ার দিন। দেনা পরিশোধে আসা খরিদ্দারদের সাধ্যমতো আপ্যায়ন করানোর চেষ্টা করছি। আর যারা আসেননি তাদের বাসায় মিষ্টি পাঠানো হচ্ছে।
পুরান ঢাকার অলিগলি ঘুরে দেখা যায়, সনাতন ধর্মালম্বীদের দোকানগুলোতে ধর্মীয় রীতি অনুসারে গণেশ পূজার মধ্য দিয়েই শুরু হয়েছে হালখাতা। পূজারিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন, দোকানে দোকানে দিচ্ছেন পূজা।
নতুন বছর উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের টালিখাতা মন্দিরে মায়ের চরণ স্পর্শ করাচ্ছেন। খাতায় পূজারির হাত দিয়ে গণেশ ঠাকুরের নামও লেখাচ্ছেন তারা।
তাঁতীবাজারের টিএস গোল্ড হাউজের মালিক সুজিত ধর বলেন, গত এক বছর ধরে খরিদ্দারের সঙ্গে বেচাকেনার হিসাব-নিকাশ সম্পন্ন করে আজ (পহেলা বৈশাখ) থেকে আবার নতুন খাতায় লেনদেন করবো। ক্রেতা-বিক্রেতার সম্মিলন ঘটবে আজকের হালখাতায়।
সুজিত ধর বলেন, আজকের এই দিনে ধর্মের কোনো ভেদাভেদ নেই। পুরাতন বছরের সব কিছু ভুলে গিয়ে আমরা একে অপরে হালখাতা উদযাপন করছি। হালখাতায় ধর্মীয় উৎসবের মতো আনন্দ পাচ্ছি।
এমআই