কুমিল্লায় সহিংসতার ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা তদন্ত হওয়া উচিত: ডিএমপি কমিশনার
Share on:
দুর্গাপূজায় কুমিল্লায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সময় পুলিশ সদস্যদের ভূমিকা তদন্ত করে দেখা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
দুর্গাপূজায় কুমিল্লায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সময় পুলিশ সদস্যদের ভূমিকা তদন্ত করে দেখা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
আজ শনিবার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (এফডিসি) 'গণজাগরণই পারে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা প্রতিরোধ করতে' শীর্ষক ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
কুমিল্লার ঘটনায় পুলিশের কোনো দায় আছে কি না জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমি মনে করি এটা তদন্ত করে দেখা উচিত।
বিশেষ করে যখন পবিত্র কোরান আমাদের কর্মকর্তা উদ্ধার করল সেটা লাইভে প্রচার হচ্ছিল, সেটা সাম্প্রদায়িক সহিংসতা উসকে দিয়েছে কি না, তা তদন্ত হওয়া উচিত।
এ ধরনের কিছু থাকলে তার বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
তার এই কাজটি এমনভাবে করা উচিত ছিল যেন কোরান শরীফের পবিত্রতা রক্ষা পায়। এটি নিয়ে যাতে অপপ্রচার না হয় সেটি নিশ্চিত করার দায়িত্বও তার ছিল।
তদন্তে যদি তার কোনো দায় থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কুমিল্লার ঘটনায় রাজনৈতিক দলের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অতীতের যে বিষয়গুলো আমরা লক্ষ্য করেছি তাতে এ ঘটনায় ঠিক এককভাবে কোনো রাজনৈতিক দলকে চিহ্নিত করা খুব দুরুহ হবে। এখন কুমিল্লার ঘটনায় যারা তদন্ত করছেন তারা ভালো বলতে পারবেন।
তিনি বলেন, এ ঘটনা মূলত ঘটেছে ঢাকার বাইরে। এ ঘটনায় যারা একেবারে তৃণমূলে কাজ করেছে তাদের সঙ্গে কথা না বলে কিছু বলতে পারব না।
তবে আমি বলতে পারি রামুর ঘটনা এবং নাসির নগরের ঘটনায় আমি চট্টগ্রাম বিভাগের ডিআইজি ছিলাম। নাসির নগরের সহিংসতার ঘটনায় এক সপ্তাহ আমি সেখানে ছিলাম।
সেখানে যারা আসামি ছিল সেখানে সব রাজনৈতিক দলেরই সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।
মণ্ডপে কোরান রাখা ইকবালকে ভবগুরে ও মাদকাসক্ত বলা হচ্ছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমার যে টিম সেখানে আছে তার মাধ্যমে জানতে পেরেছি কিছু মানুষের উসকানি সেখানে রয়েছে।
সেটা তদন্তে আরো প্রকাশ হবে আশা করছি। আমরা কিছু নাম পেয়েছি। শুধু কুমিল্লার ঘটনা না, এটিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন এলাকা যেমন চাঁদপুর, নোয়াখালীসহ বিভিন্ন জায়গায় যা ঘটেছে সেখানে আমরা আরো চক্রান্ত বেশি দেখতে পেয়েছি।
আমরা প্রযুক্তিগতভাবে কিছু তথ্য প্রমাণ পেয়েছি সেগুলো তদন্ত করা হচ্ছে। আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, একেবারে সুস্পষ্টভাবে কিছু মানুষের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেব।
আগামীতে ধর্মীয় উগ্রবাদীদের কোনো হামলার আশঙ্কার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ধরনের সাম্প্রদায়িক কর্মকাণ্ড কখন ঘটবে, ঘটবে কী ঘটবে না এটা অনুমান করা খুবই জটিল কাজ। কারণ ফেসবুকে কে কখন একটা স্ট্যাটাস লিখবে এবং সমাজের একটি অংশ মনে হয় বসে থাকে যে এ ধরনের একটি পোস্ট হবে আর সঙ্গে সঙ্গে আমরা লেগে পড়ি। তাই এ ধরনের কাজ কারা ঘটাবে বা ঘটাচ্ছে এদের চিহ্নিত করা খুবই কঠিন।
তবে আমরা আশ্বস্ত করতে চাই আমরা সাম্প্রতিক যে ঘটনাগুলো ঘটেছে তার পরিপ্রেক্ষিতে আইজিপিসহ বসেছি এবং কী করণীয় তা বের করার চেষ্টায় আছি। আমরা থানাগুলোকে দায়িত্ব দিয়েছি, আশা করছি এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না।
সাধারণ মানুষের কাছে সহযোগিতা চেয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমরা আপনাদের কাছে সাহায্য চাই।
আপনারা যদি একটা স্ট্যাটাসও দেখেন সেটি শেয়ার না করে আমাদের জানাবেন। তাহলে হয়তো আমরা আরেকটি সাম্প্রদায়িক সহিংসতা থেকে দেশকে রক্ষা করতে পারব।
এইচএন