পঞ্চগড়ে পুলিশের গুলিতে নিহত ২, কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণার দাবি
Share on:
পঞ্চগড়ে পুলিশের গুলিতে ২ জন নিহত এবং মুসল্লিদের জখম হওয়ায় প্রতিবাদ ও অবিলম্বে কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণার জোর দাবি জানিয়েছে ৭ ছাত্রসংগঠন
পঞ্চগড়ে কাদিয়ানীদের উস্কানিমূলক সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশের গুলিতে ২ জন নিহত এবং সাধারণ মুসল্লিদের জখম হওয়ায় তীব্র প্রতিবাদ ও অবিলম্বে কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণার জোর দাবি জানিয়েছে ৭ ছাত্রসংগঠন।
এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রনেতৃবৃন্দ বলেন, "পঞ্চগড়ে মুসলিম নামে বিভ্রান্তকারী কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে নিষিদ্ধ ও তাদের সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে জুমার নামাজের পর তাওহিদী জনতা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছিল। কিন্তু পুলিশ বিনা উস্কানিতে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে নির্বিচারে গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে। এ নৃশংস হামলায় একজন নিহত এবং অনেক মানুষ আহত হয়েছে। পরিবেশ শান্ত রাখতে পুলিশ ও প্রশাসনের উচিত ছিল কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের উস্কানিমূলক জলসা বন্ধ করে দেওয়া। কিন্তু উল্টো সাধারণ মুসল্লিদের ওপর পুলিশের এই অতিউৎসাহী ও নৃশংস আচরণে দেশবাসী চরমভাবে ক্ষুব্ধ। এ ঘটনা সরকারের ইসলামবিরোধী অবস্থানের আরেকটি লজ্জাজনক নজির!"
নেতৃবৃন্দ বলেন, "কাদিয়ানীরা শুধু বাংলাদেশে নয়; বরং বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের কাছে প্রত্যাখ্যাত। রাবেতায়ে আলমে ইসলামীর অন্তর্ভুক্ত ১০৫টি দেশের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হচ্ছে কাদিয়ানীরা কাফের। তা ছাড়া পৃথিবীর ৪২টি মুসলিম দেশে কাদিয়ানীদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করা হয়েছে। সৌদি আরব পুরো দেশে কাদিয়ানীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে।
অন্যদিকে ১৯৯৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের হাইকোর্টের এক রায়ে বলা হয়েছে, আইনের দৃষ্টিতে কাদিয়ানীরা অমুসলিম এবং কাফের। কিন্তু সরকার মুসলমানদের দাবি বা হাইকোর্টের রায় কোনোটিই আমলে নিচ্ছে না। কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের নাগরিক অধিকার নিয়ে মুসলমানদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু রাসূল সা.-কে শেষ নবী হিসেবে অস্বীকারের পর কারো মুসলিম হিসেবে পরিচয় দেওয়ার অধিকার নেই। এটা ইসলামের মৌলিক বিধান, যা সকলেরই জানা। রাসূল সা.-কে শেষ নবী হিসেবে অস্বীকারের পরও কাদিয়ানী সম্প্রদায় মুসলিম হিসেবে পরিচয় দেয় মুসলমানদের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য। কাদিয়ানীরা জন্মলগ্ন থেকেই ইসলামবিরোধী গোষ্ঠীর ক্রীড়নকের ভূমিকা পালন করে আসছে।"
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, "একটি মুসলিমপ্রধান দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকারেরও উচিত ছিল মুসলিম উম্মাহর মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে অমুসলিম ঘোষণা দিয়ে বিভ্রান্তির অবসান ঘটানো। কিন্তু সরকার মুসলমানদের হতাশ করেছে। ফলে বারবার এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে দেশের সকল আলেম-ওলামা ও সাধারণ মুসলমান ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। সরকার মুসলমানদের ঈমানের দাবি অগ্রাহ্য বা বিভ্রান্তকারী কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের পক্ষালম্বন করলে তৌহিদি জনতা মেনে নেবে না।"
নেতৃবৃন্দ শহীদের রুহের মাগফিরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে বলেন, "অবিলম্বে রাষ্ট্রীয়ভাবে কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে। মুসল্লিদের ওপর গুলিবর্ষণকারী অতিউৎসাহী পুলিশ সদস্যদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। শহীদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। একই সাথে ইসলামের নামে কাদিয়ানীদের সকল প্রকাশনা, প্রচার-প্রচারণা ও ইসলামী পরিভাষা ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে।"
বিবৃতি প্রদানকারী ছাত্রনেতৃবৃন্দ হচ্ছেন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ মনির হোসাইন, জাগপা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর রহমান ফারুকী, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের সভাপতি নিজাম উদ্দিন আল আদনান, জাতীয় ছাত্রসমাজের (কাজী জাফর) সভাপতি কাজী ফয়েজ আহমেদ, বাংলাদেশ ছাত্র মিশনের (ইরান) সভাপতি সৈয়দ মুহাম্মদ মিলন, ইসলামী ছাত্র খেলাফতের সভাপতি আবুল হাসিম শাহী।
এন