থাইল্যান্ডে নির্বাচন ১৪ মে, দলীয় মনোনয়ন পেলেন প্রায়ুত
Share on:
অর্ধ-যুগের বেশি সময় আগে রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুত চ্যান ওচাকে দেশটির পরবর্তী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য তার দল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। গত সোমবার দেশটির পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি আগামী মে মাসে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। সেই নির্বাচনে পুনরায় লড়াইয়ের জন্য তার দলের পক্ষ থেকে শনিবার মনোনয়ন পেয়েছেন ওচা।
আগামী ১৪ মে থাইল্যান্ডে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচনে প্রায়ুতের দল থেকে প্রথম প্রার্থী হিসেবে শনিবার তাকেই মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
২০১৪ সালে সহিংস অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার হটিয়ে থাইল্যান্ডের ক্ষমতা গ্রহণ করেন দেশটির তৎকালীন সেনাপ্রধান প্রায়ুত। ৬৯ বছর বয়সী প্রায়ুত দেশটির নতুন রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড থাই নেশন পার্টির নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
আগামী নির্বাচনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার বিলিওনেয়ার মেয়ে পায়েটংটার্ন শিনাওয়াত্রার ফেউ থাই পার্টির বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হেরে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে প্রায়ুতের।
পায়েটংটার্ন শিনাওয়াত্রার নেতৃত্বে গঠিত দেশটির প্রধান বিরোধী দল ফেউ থাই আগামী নির্বাচনে জোরালো প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু থাইল্যান্ডের জান্তার তৈরি করা ২০১৭ সালের সংবিধান দলটির প্রতিদ্বন্দ্বিতা করাকে কঠিন করে তুলতে পারে।
২০১৯ সালের বিতর্কিত এক নির্বাচনের মাধ্যমে নিজের ক্ষমতায় থাকার পথ দৃঢ় করেন প্রায়ুত। থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে দীর্ঘসময় ধরে ক্ষমতায় থাকার বিরল নজিরও সৃষ্টি করেছেন সাবেক এই সেনাপ্রধান।
নির্বাচনের আগে একাধিক জনমত জরিপে প্রবীণ এই সামরিক রাজনীতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছেন। তবে জনগণের কল্যাণ, দেশের স্থিতিশীলতা এবং রাজতন্ত্র রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জয়ের আশা করছেন তিনি।
শনিবার দেশের ৪০০ আসনের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। এ সময় প্রায়ুত বলেন, ‘আমরা স্বেচ্ছাসেবকরা সবাইকে খুশি করতে সর্বোচ্চ কাজ করি।’
তিনি বলেন, তার পরবর্তী সরকার শক্ত হাতে বর্তমান প্রশাসনের কাজ চালিয়ে যাবে। সেই সরকারের স্লোগান ‘কাজ করেছি, করছি এবং চালিয়ে যাবো’ বলে ঘোষণা দেন তিনি। প্রায়ুত বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল দেশ এবং দেশের প্রধান প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করা। দয়া করে আমার ওপর বিশ্বাস রাখুন যেমন বিশ্বাস সবসময় করেছেন।’
প্রায়ুতের দলের আরেক নেতা পিরাপন সালিরাথাভিভাগাকে প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য ২ নম্বর দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে।
২০১৪ সালের অভ্যুত্থানের পর দ্বিতীয় এবং ২০২০ সালে ব্যাংককে তরুণদের নেতৃত্বাধীন গণতন্ত্রপন্থী ব্যাপক বিক্ষোভের পর দেশটিতে প্রথমবারের মতো এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দেশটিতে ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার ব্যয় এবং মহামারি পরবর্তী ধীরগতির পুনরুদ্ধারের মাঝে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে নির্বাচনের অনানুষ্ঠানিক প্রচারণা চলছে।
ভোটাররা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে কাকে দেখতে চান, এই বিষয়ে গত সপ্তাহে একটি সমীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। এতে দেখা যায়, প্রায়ুত মাত্র ১৫ শতাংশের কিছু বেশি জনপ্রিয়তা নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছেন। থাকসিন সিনাওয়াত্রার মেয়ে পায়েটংটার্ন শিনাওয়াত্রার তুলনায় ৩৮ শতাংশ পিছিয়ে আছেন প্রায়ুত।
থাইল্যান্ডের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ২ হাজার মানুষের ওপর একটি জরিপ পরিচালনা করেছে। জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ বলেছেন, তারা ফেউ থাইকে ভোট দেবেন। আর প্রায়ুতের ইউনাইটেড থাই ন্যাশন পার্টিকে ভোট দেওয়ার কথা বলেছেন মাত্র ১২ শতাংশ মানুষ। সূত্র: রয়টার্স
এমআই