tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
জাতীয় প্রকাশনার সময়: ১২ অগাস্ট ২০২৪, ১৭:৫৪ পিএম

রাষ্ট্র সংস্কার ও জাতীয় রাজনৈতিক বন্দোবস্ত চায় টিআইবি


tib-2-20240812173328

তারুণ্যের নেতৃত্বে সুশাসিত বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন বাস্তবায়নে উপযুক্ত রাষ্ট্র সংস্কার ও জাতীয় রাজনৈতিক বন্দোবস্ত অর্জনের পরিবেশ সৃষ্টি করা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।


একই সঙ্গে সংস্থাটি ছাত্র-জনতার প্রত্যাশা পূরণে রাষ্ট্রকাঠামোর আমূল সংস্কারের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক, বৈষম্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রকাঠামো বিনির্মাণের আহ্বান জানিয়েছে।

টিআইবি মনে করে, সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার নিশ্চয়তাসহ একটি সুশাসিত বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাহিদা চিরজাগ্রত রাখতে তারুণ্যই নেতৃত্ব দেবে। সেই পথ পরিক্রমায় অন্তবর্তী সরকারকে স্বপ্ন বাস্তবায়নের উপযুক্ত রাষ্ট্র সংস্কার ও জাতীয় রাজনৈতিক বন্দোবস্ত অর্জনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।

সোমবার (১২ আগস্ট) আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, তরুণ শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে এক অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নজিরবিহীন প্রাণহানি ও ত্যাগের বিনিময়ে কর্তৃত্ববাদী সরকারের পতনের সাক্ষী হয়েছি আমরা। এ অভ্যুত্থানই প্রমাণ করে অদম্য, অপ্রতিরোধ্য তারুণ্যকে উপেক্ষা বা নিপীড়নের মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না। সব রাজনৈতিক দলসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে এ আন্দোলন থেকে শিক্ষা নিতে হবে- তারুণ্যের শক্তিকে দমন নয়, বরং জনগণের ন্যায্য মানবাধিকার নিশ্চিতের উপযোগী রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যে নতুন দিনের শুভসূচনা হয়েছে, এর মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনার আলোকে রাষ্ট্রকাঠামোর আমূল পরিবর্তনের মাধ্যমে এদেশের সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার নিশ্চয়তাসহ একটি বৈষম্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক, স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক সুশাসিত স্বদেশ বিনির্মাণে তরুণরাই আমাদের পথ দেখাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

যুব জনগোষ্ঠীকে জাতীয় অর্জনের মূল চালিকাশক্তি বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক যুব দিবস-২০২৪ উপলক্ষে টিআইবির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তরুণ প্রজন্মের অংশীজনরা বেশ কিছু সুপারিশ করেছে বলেও জানান তিনি।

এসব সুপারিশের মধ্যে রয়েছে- তরুণদের আশা-আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে বৈষম্যহীন, সাম্য ও মেধাভিত্তিক, গণতান্ত্রিক, জবাবদিহিমূলক, সুশাসিত, বৈষম্য ও দুর্নীতিমুক্ত নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে অঙ্গীকারবদ্ধ ও সক্রিয় উদ্যোগী হওয়া; এমন রাষ্ট্রকাঠামো গড়া, যা দীর্ঘকাল লালিত কলুষিত ও দুবৃর্ত্তায়িত রাজনীতির পরাজয়ের শিক্ষা অনুসরণে বাকস্বাধীনতা ও মুক্ত গণমাধ্যমসহ মানবাধিকারভিত্তিক, জনকল্যাণমূলক, অংশগ্রহণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক ‘নতুন বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে সক্ষম হয়; রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দলীয়করণ বন্ধ করে পুরো প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোকে ঢেলে সাজাতে হবে, যেন এ সংস্থাগুলো কখনোই সরকারের ক্ষমতালিপ্সা চরিতার্থের হাতিয়ারে পরিণত না হয়।

টিআইবির সুপারিশমালায় আরও রয়েছে- বহুমাত্রিক ও বহুপর্যায়ের নজিরবিহীন ও নির্মম মানবাধিকার লঙ্ঘনের দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহি নিশ্চিত করা, এক্ষেত্রে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য তদন্ত নিশ্চিতে জাতিসংঘের উদ্যোগে সম্পূর্ণ স্বাধীন কমিশন গঠনের মাধ্যমে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।

এছাড়াও প্রতিবাদের অধিকার, সমাবেশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও বাকস্বাধীনতার মতো মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিতে প্রাতিষ্ঠানিক এবং আইনি কাঠামো নিশ্চিত করা; সরকারি পদ-পদবি ও জনপ্রতিনিধিত্বকে দুর্নীতির লাইসেন্স হিসেবে ব্যবহারের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ-সম্পদ অর্জন ও বিস্তারের পথ চিরতরে রুদ্ধ করা; তথ্য, বাক ও মতপ্রকাশের অন্যতম মাধ্যম ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করার ফ্যাসিস্ট-পদ্ধতি চিরতরে বন্ধ করার কার্যকর কৌশল নির্ধারণ করা।

সুপারিশে আরও রয়েছে, মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সংস্থাসহ আইনের শাসনের সঙ্গে জড়িত সব প্রতিষ্ঠান তথা সার্বিক রাষ্ট্রকাঠামো ঢেলে সাজাতে জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে উদ্যোগ গ্রহণ; সব ধরনের ভয়-ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে আপামর জনগণ যেন নির্ভয়ে মতামত ব্যক্ত করতে পারে তার টেকসই ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশও করেছে টিআইবি।

এমএইচ