বিভেদ মিটিয়ে দল গোছানোর বার্তা দেবেন প্রধানমন্ত্রী
Share on:
সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফিরেছে আওয়ামী লীগ। তাদের কৌশলের কাছে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর আন্দোলনও অনেকটা ব্যর্থ হয়েছে। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির প্রশ্নেও সরকারকে সফলই বলতে হবে। তবে এবারের নির্বাচন ঘিরে দলের অভ্যন্তরে যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে সেটা নিয়ে অস্বস্তিতে রয়েছে ক্ষমতাসীন দল। এর মধ্যেই উপজেলাসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানীয় সরকারের নির্বাচন দুয়ারে হাজির।
এই অবস্থায় বিশেষ বর্ধিত সভা ডেকেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সেখানে দলীয় প্রধান তৃণমূল থেকে আসা নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দেবেন গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা। আগামীকাল শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এই বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হবে।
এই সভায় আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, জেলা/মহানগর, উপজেলা/থানা ও জেলা সদরে অবস্থিত পৌর কমিটির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় সংসদের দলীয় ও স্বতন্ত্র সদস্য, জেলা পরিষদ এবং উপজেলা পরিষদের দলীয় চেয়ারম্যান, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার দলীয় মেয়র এবং সহযোগী সংগঠনগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের দাওয়াত দেওয়া হয়েছে।
বর্ধিত সভা ডাকার কারণ সম্পর্কে শুক্রবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের দলের সুদৃঢ় ঐক্যের দরকার। গত নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। কৌশলগত কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচন করেছে। যে নির্বাচনে ৬২ জন নির্বাচিত হয়েছেন। তারও কিন্তু আওয়ামী লীগের। অনেকে আওয়ামী লীগের পদধারীও আছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনে নিজেদের মধ্যে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি, মতবিরোধ, দ্বন্দ্ব, সংঘাতের মতো দুঃখজনক ঘটনাও ঘটেছে। এসব হানাহানি দলের অভ্যন্তরে অন্তর কলহ এসব বিষয়ের অবসান ঘটিয়ে নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে দলে সুদৃঢ় ঐক্য দরকার। সবকিছু ভুলে গিয়ে উপজেলা নির্বাচন, মেয়র নির্বাচন পর্যায়ক্রমে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচন ঘিরে যেন মনোমালিন্য, কোনো সংঘাত সৃষ্টি না হয় সেজন্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সবার মধ্যে ঐক্যবদ্ধ আবহ তৈরির জন্য এই বিশেষ বর্ধিত সভার আয়োজন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সভায় নির্বাচন ঘিরে সৃষ্ট দ্বন্দ্ব মিটিয়ে দলীয় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবেন দলীয় ও সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। দল ও সরকারের ভাবমূর্তি যেন কোনোভাবেই ক্ষুণ্ণ না হয় এবং বিএনপিসহ বিরোধীরা সামনের দিনে কর্মসূচি দিলে তা মোকাবিলায় করণীয় নিয়েও দিকনির্দেশনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী। সভায় তৃণমূলের নেতাদের কথা সরাসরি শুনবেন শেখ হাসিনা। সে অনুযায়ী ব্যবস্থাও নেবেন তিনি।
এছাড়া জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের প্রার্থীর বিষয় আলোচনাসহ বিভিন্ন বিষয় গুরুত্ব পাবে। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন, মহানগর ওয়ার্ড কমিটি, মেয়াদোত্তীর্ণ সংগঠনের কমিটির বিষয়েও আলোচনা থাকবে। আওয়ামী লীগের এমপি এবং দলের পদ-পদবি আছে কিন্তু স্বতন্ত্র এমপি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন তাদের সঙ্গে মিলে কাজ করার বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হবে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর দলকে সুসংগঠিত করা, বিভেদ ভুলে উপজেলা ও সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা এবং জাতীয় নির্বাচনে দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভুল বোঝাবুঝি নিরসন করাই এবারের বিশেষ বর্ধিত সভার লক্ষ্য।
বিশেষ বর্ধিত সভার উদ্দেশ্যের কথা জানিয়ে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেন, দলকে আরও ঐক্যবদ্ধ এবং সাংগঠনিকভাবে আরও শক্তিশালী করার বিষয়ে নেত্রী দিকনির্দেশনা দেবেন। সরকারের নানা উন্নয়ন এবং সামনের দিনে যেসব পরিকল্পনা রয়েছে সেগুলো জনগণের সামনে তুলে ধরার আহ্বান জানাবেন। নেতাকর্মীদের মানুষের পাশে থাকতে বলবেন।
এনএইচ