tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
অর্থনীতি প্রকাশনার সময়: ১৭ জুন ২০২৪, ১৫:৪৩ পিএম

দেড় লাখ টাকার গরুর চামড়ার দাম ৫৫০ টাকা


leat-1-20240617153116

গত কয়েক বছরের মতো এবারও কোরবানি পশুর চামড়ার দর মিলছে না। লালবাগে দেড় লাখ টাকার গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে মাত্র ৫৫০ টাকায়।


এছাড়া লাখ টাকা গরুর চামড়া ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা সরকার নির্ধারিত মূ‌ল্যের চে‌য়ে চার থে‌কে পাঁচগুণ কম।

সোমবার (১৭জুন) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘু‌রে দেখা গে‌ছে, যারা কোরবা‌নি দিয়ে‌ছেন তারা কাঁচা চামড়া বি‌ক্রির লোক খুঁজে পাচ্ছেন না। যারা বি‌ক্রি কর‌তে পে‌রে‌ছেন তারাও নামমাত্র দাম পে‌য়ে‌ছেন। আবার অনেকে কাঙ্ক্ষিত দাম ও ক্রেতা না পে‌য়ে মাদরাসা ও এতিমখানার লোকজনকে বিনা পয়সায় দি‌য়ে দি‌চ্ছেন।

রাজধানীর লালবাগের শহীদনগর এলাকার বাসিন্দা হাজি শাহজাহান বলেন, ১ লাখ ৪৭ হাজার টাকার গরুর চামড়া বিক্রি করেছি মাত্র ৫৫০ টাকা। গত কয়েক বছর ধরে এতো কম দা‌মে চামড়া বি‌ক্রি ক‌রছি। আগামীতে‌ মাদরাসায় দান করে দেব।

শহীদনগর, লালবাগ,‌ কামরাঙ্গীরচর এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ৩০০ থেকে সর্বোচ্চ ৮০০ টাকায় গরুর চামড়া কিনছেন‌। ছোট মাঝারি গরুর চামড়া আকার বেঁধে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা দামের গরুর চামড়া ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কামরাঙ্গীরচরে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে গরু‌ কোরবানি দিয়েছেন মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। তিনি ব‌লেন, সরকার যে মূল্য নির্ধারণ করেছে যদি এই দামে চামড়া বিক্রি করা যেত, তাহলে আমার কোরবানির গরুর চামড়ার দাম কম হলেও ১১০০ থেকে ১৩০০ টাকা হতো। কিন্ত দাম ব‌লে‌ছে মাত্র ৪০০-৪৫০ টাকা। তাই‌ ‌বি‌ক্রি না ক‌রে এলাকার এতিমখানায় দিয়ে দিয়েছি।

রাজধানীর পুরান ঢাকার লালবাগ এলাকার মোশাররফ হোসেন ব‌লেন, কোরবানির গরুর চামড়ার টাকা গরিবের হক। এই চামড়া যারা সিন্ডিকেট করে কম দামে কিনে নিচ্ছে তারা গরিবের হক মেরে খাচ্ছে। আমি এক লাখ টাকা দিয়ে গরু কিনেছি। ওই গরুর চামড়া বিক্রি করেছি মাত্র ৪০০ টাকায়। এটি সরকার নির্ধারিত মূ‌ল্যের চে‌য়ে ৪-৫ গুণ কম।

‌তি‌নি ক্ষোভ প্রকাশ ক‌রে ব‌লেন, আমাদের দেশে সব কিছুতেই সিন্ডিকেট। কিছু মুনাফাখোর ব্যবসায়ী রয়েছে, যারা সুযোগ পেলেই মানুষের পকেট কাটে। কোরবা‌নির চামড়ারও এই সিন্ডিকেটের কবল থেকে বাঁচতে পারেনি। তারা‌ চামড়ার দাম ক‌মি‌য়ে গরিবের হক মার‌ছে।

এদিকে মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী ফজলুল হক ব‌লেন, দুপুর পর্যন্ত ২০টি চামড়া কিনে বিক্রি করেছি। বুলতে গেলে চামড়ার দাম পাওয়া যাচ্ছে না। আড়ত থেকে আমাদের সংকেত দেওয়া হয়েছে ৮০০ টাকার বেশি দাম যেন‌ চামড়া না‌ কিনি। গতকাল পোস্তার লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছে ৭০০ টাকার বেশি দামে চামড়া কিনবে না। তাই আমরা গড়ে একটা চামড়া ৪০০ থে‌কে ৫০০ টাকায় কিনে‌ছি। প্র‌তি চামড়ায় এক দেড়শ টাকা খরচ আছে। এরপরও বি‌ক্রি কর‌ছি। লাভ থাক‌বে কি না জা‌নি না।

সরকার ঢাকার মধ্যে গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে প্রতি বর্গফুট ৫৫ থেকে ৬০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে প্রতি বর্গফুটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা।

বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (বিএইচএসএমএ) মহাসচিব টিপু সুলতান বলেন, চামড়া আসতে শুরু করেছে। আড়তের মালিকদের চামড়া কিনতে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া যত তাড়াতাড়ি আমাদের কাছে আনবেন তত ভালো।

তিনি বলেন, সরকার লবণসহ চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে। মৌসুমি ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা কাঁচা চামড়া কিনছে। ওই দামের সঙ্গে মেলালে হবে না। কারণ একটা কাঁচা চামড়ায় আরও ২০০ থেকে ২৫০ টাকার লবণ মেশাতে হয়। ‌

এসএম