tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
রাজনীতি প্রকাশনার সময়: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৭:১৭ পিএম

বাংলাদেশ আজ কঠিন সময় অতিক্রম করছে : এ টি এম মা’ছুম


এটিএম মা’ছুম

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মা’ছুম বলেছেন, বাংলাদেশ আজ কঠিন সময় অতিক্রম করছে। তেল, গ্যাস, বিদ্যুসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ফলে মানুষ মারাত্মক অসহায় অবস্থায় রয়েছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, মানবিক অস্থিরতা ও পাশবিকতা গোটা সমাজ ব্যবস্থাকে বিষিয়ে তুলেছে। অসংখ্য পরিবারে মা-বাবা নির্ঘুম অবস্থায় দিন-রাত অতিবাহিত করছেন। প্রিয় সন্তানকে গুম করা হচ্ছে, ক্রসফায়ারের নামে বিনা বিচারে হত্যা করা হচ্ছে, শুধুমাত্র বিরোধী মতের কারণে হাজার হাজার মিথ্যা মামলা দিয়ে নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি করার মতো ন্যাক্কারজনক বিষয় পরিলক্ষিত হয়েছে। ওইসব পরিবারসহ দেশের জনগণের মুক্তির জন্য জামায়াতের নেতাকর্মীদের বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে। নির্দলীয় তত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে রাজপথে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।


শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের ওয়ার্ড সভাপতি-সেক্রেটারি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরী আমির মুহা. আব্দুল জব্বার।

আরও বক্তব্য প্রদান করেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকির ও অ্যাডভোকেট ড. মো: হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রটারি যথাক্রমে মুহা. দেলোয়ার হোসেন, কামাল হোসাইন, অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান প্রমুখ।

বিভিন্ন স্পটে গ্রুপভিত্তিক সরাসরি উপস্থিত থেকে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে মহানগর শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে।

মাওলানা মা’ছুম বলেন, একজন মুসলিম হিসেবে রাসূলের সা: জীবনাদর্শই আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস। তিনি কুরআন দ্বারা পরিচালিত একটি কল্যাণ রাষ্ট্র আমাদের হাতে দিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। রাসূল সা: বলেছেন, আমি তোমাদের কাছে দুটি জিনিস রেখে যাচ্ছি- আল্লাহর কুরআন ও আমার জীবনী হাদিস তথা সুন্নাহ। যতদিন তোমরা এই দুটি জিনিস আঁকড়ে ধরে থাকবে ততদিন তোমরা পথভ্রষ্ট হবে না। পরবর্তীতে এই দুটিই রাষ্ট্রের নির্বাহী কার্যক্রমে সঞ্চালকের আসনে ছিল। আজ আশ্চর্য হলেও সত্য উম্মাহর কাছে রাষ্ট্র পরিচালনার সেই বিধান আল কুরআন থাকলেও তা কার্যকর নেই। মুসলিম প্রধান এই বাংলাদেশের শিক্ষা ও সংস্কৃতিতেও কুরআনের কোনো প্রতিফলন নেই। যেটুকু নৈতিকতার কথা বলা হয় সেটুকুও নানা কৌশলে বিদায় করে দেয়ার ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। আবার যারা কুরআন বুঝি তারাও সঠিকভাবে আমল এবং সমাজে তার বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা করছি না। এ রকম দৈন্যতার মাঝে ইতোমধ্যেই এদেশে ইসলামের প্রতিনিধিত্বকারী দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামী উত্তীর্ণ হয়েছে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট এদেশের প্রতিটি মানুষ যেন উম্মাহর সঠিক পরিচয়কে চিনতে সক্ষম হয় সেজন্য প্রতিটি নাগরিকের কাছে ইসলামের সুমহান আদর্শ ও সংগঠনের বিপ্লবী আহ্বান পৌঁছে দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, মুসলিম সমাজে বসবাস করে আল্লাহর বিধানের বিপরীতে অবস্থান করে ন্যায়-ইনসাফ প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। প্রিয় রাসূলের উম্মাহ হিসেবে আমাদেরকে কুরআন ও হাদিসের সঠিক জ্ঞান অর্জন করার সাথে সাথে বাস্তব জীবনে তার দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করতে হবে। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বনি ইসরাইলকে এ কথাই বলেছেন,

‘হে কিতাবধারীরা, যারা তাওরাত ইঞ্জিলের ধারক-বাহক বলে নিজেদের দাবি করো, তোমরা সমাজে-এর বিধান কায়েমকারী না হওয়া পর্যন্ত আমার কাছে বিশ্বাসযোগ্য হবে না।’

আজকে আমরা যদি কুরআনকে চুমু খেয়ে যত্ন সহকারে বুক সেলফে রেখে দেই, কুরআনের সঠিক অর্থ না বুঝি, এর হুকুমগুলো বাস্তবায়নের জন্য পেরেশান না হই, তাহলে আমরা সত্যিকারভাবে কুরআনের অনুসারী তা বলার কোনো সুযোগ নেই। তাই একজন ঈমানদার হিসেবে কুরআনের জীবনাদর্শের বিরুদ্ধে যারা অবস্থান নিয়েছে তাদেরকে প্রতিহত করে সমাজে কুরআনের বিধান কায়েমের জন্য আমাদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ওয়ার্ড সভাপতি ও সেক্রটারি ভাইদেরকে দেশের চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষাপট অনুধাবন করে সকল পর্যায়ের জনশক্তিদের সজাগ ও তৎপর রাখতে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। সংগঠন সম্প্রসারণ ও মজবুতি অর্জনের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এদেশের নির্বাচন ও জামায়াতের সাংগঠনিক ভিত্তি সৃদৃঢ় করতে নিজ নিজ এলাকায় মজবুত শক্তিশালী সংগঠন তৈরি করতে হবে। শাহাদাতের তামান্নায় উজ্জীবিত সংগঠনের কর্মী হিসেবে আমাদের ত্যাগ ও কুরবানীর নজরানা পেশ করতে হবে। দায়িত্বশীলদের বিশেষ গুণাবলী অর্জনের মধ্য দিয়ে সংগঠন পরিচালনায় সামগ্রিকভাবে আরো বেশি তৎপর ভূমিকা রাখতে হবে। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ এলাকাকে ইসলামী আন্দোলনের রাজধানী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

ইকামতে দ্বীনের এই কাজকে এগিয়ে নিতে সকল ধরনের বাধা অতিক্রম করে আমরা এই ঢাকা মহানগরী দক্ষিণসহ সমগ্র বাংলাদেশকে ইসলামী আন্দোলনের উর্বর ভূমি হিসেবে গড়ে তুলবো ইনশাআল্লাহ।

ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, নেতৃত্বে একদল যোগ্য মানুষ আমাদের আজ বড় বেশি প্রয়োজন। সংগঠন সম্প্রসারণ ও নেতৃত্ব তৈরির জন্য ব্যাপক দাওয়াতী কাজ অব্যাহত রাখতে হবে। চেইন অব কমান্ড বজায় রেখে পরিকল্পনা অনুযায়ী সংগঠনের পরিধি বৃদ্ধি ও মজবুতি অর্জনে ওয়ার্ড দায়িত্বশীলদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। সাধারণ মানুষের কল্যাণে জামায়াতের প্রত্যেক দায়িত্বশীলকে সবার আগে এগিয়ে যেতে হবে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি

এমআই