আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমেই সরকারের সকল ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে : আজাদ
Share on:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি এ.এইচ.এম হামিদুর রহমান আজাদ বলেছেন, দেশের জনগণ আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে আপনাদের বিদায় নিশ্চিত করে সকল নৈরাজ্য ও ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিবে।
শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত অগ্রসর কর্মী শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, প্রত্যেক মুসলমানের উপর দাওয়াতি কাজ করা তথা আল্লাহর দিকে আহবান করা ফরজ। এটা আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ। এজন্য রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর দেখানো পদ্ধতিতে হিকমাহ বা কৌশল এবং সর্বোত্তমপন্থা অবলম্বন করে বাংলাদেশের সকল মানুষের কাছে কুরআন সুন্নাহর আহ্বান পৌঁছিয়ে দিতে হবে। তাদের মন, মগজ ও চরিত্রকে পরিশুদ্ধ করতে হবে। এক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকেও কাজে লাগাতে হবে।
আমরা বাংলাদেশে একটি সফল ইসলামী বিপ্লবের স্বপ্ন দেখি। সারাদেশে বিপ্লব সফল করতে হলে সবার আগে রাজধানী ঢাকাকে বিপ্লবের উপযোগী করতে হবে। তারই আলোকে আমাদের কাজ চলমান রয়েছে। নবী রাসূলগণ ও সাহাবা আজমাইনেরা ইসলামী সমাজ বিনির্মাণ করতে গিয়ে নিজের সর্বস্ব আল্লাহর রাহে বিলিয়ে দিয়েছেন। এজন্য ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সকল জনশক্তিকেও নিজেদেরকে সর্বোচ্চ ত্যাগ ও কুরবানীর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকার বাংলাদেশকে একটি ঝুঁকিপুর্ণ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। জনগণের ভোট ছাড়াই প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার বিগত ১৫ বছর ধরে জগদ্দল পাথরের মত রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসে আছে। অর্থনৈতিক সংকট ও সরকারের বেপরোয়া লুটপাটে দেশের ব্যাংক গুলো দেউলিয়া হওয়ার পথে। তেল, গ্যাস সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ আজ দিশেহারা। দেশে মানবাধিকার আজ ভূ-লুন্ঠিত। সরকার এদেশের ইসলামী আন্দোলন ও ইসলামী নেতৃত্বকে ধ্বংস করতে মিথ্যা মামলা প্রদান, গ্রেফতার, হয়রানী সহ সকল প্রকার জুলুম-নিপীড়ন ও ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে।
আমীরে জামায়াত ডাঃ শফিকুর রহমান সহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও মজলুম আলেম-ওলামাদের কারাগারে বন্দি করে রেখেছে। আমরা তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবী জানাচ্ছি। সেইসাথে বাংলাদেশের জনগণের সত্যিকার মুক্তির জন্য কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে ক্ষমতা হস্তান্তর করে অবাধ ও সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের প্রতি আহবান করছি।
সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ইসলামি আন্দোলনের কর্মী হিসেবে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টির জন্য সবার আগে আমাদের নিজেদেরকে পরিশুদ্ধ করতে হবে। নিজের ইখলাস-খুলুসিয়াতকে আরও উন্নত করতে হবে। বাইয়াত ছাড়া মৃত্যুকে জাহেলি মৃত্যু হিসেবে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) উল্লেখ করেছেন।
এজন্য ইসলামের দায়িত্বশীল ব্যক্তি বা সত্তার কাছে বাইয়াত গ্রহণ করে অঙ্গীকারের উপর সারাজীবন অবিচল থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে ত্যাগ-কুরবানী ছাড়া দুনিয়ায় কোন কিছুই অর্জন করা যায় না। সুতরাং সকল পরিস্থিতিতে আমাদের ত্যাগ-কুরবানীর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। নিজেদের জান-মাল, সময়, শ্রম ও মেধা দিয়ে বাংলাদেশের সবুজ ভূ-খন্ডে দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আরও সক্রিয় ও কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। সর্বোপরি সিবগাতুল্লাহ বা আল্লাহর রং-এ রঙিন হওয়ার চিন্তা লালন করতে হবে।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই শিক্ষাশিবিরে আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি