ধর্মহীন শিক্ষা ব্যবস্থা সমাজে অপরাধ প্রবণতা বাড়িয়েছে : ডা. শফিকুর রহমান
Share on:
১৪ মার্চ ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় শিক্ষা বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত “শিক্ষা বিস্তারে রাসূল (সা.) এর অবদান” শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় শিক্ষা বিভাগের সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি অধ্যাপক এবিএম ফজলুল করিমের সঞ্চালনায় উক্ত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে আলোচনা পেশ করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান।
সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে আলোচনা পেশ করেন মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. আবদুর রব এবং কেন্দ্রীয় শিক্ষা বিভাগের সদস্য ও বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি প্রফেসর ড. এম কোরবান আলী।
বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোঃ তাহের, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম। উক্ত বিষয়ের উপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ বেলাল হোসাইন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “অবশ্যই মানবজাতির শিক্ষা হতে হবে আল্লাহ তথা অহি কেন্দ্রিক। মানুষ হয়ে মানুষের সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়। তাই বৈষয়িক জ্ঞানের সাথে অহির জ্ঞানের সমন্বয় না থাকলে মানুষের প্রকৃত কল্যাণ করা যেমন সম্ভব নয়, তেমনি সমাজের অন্ধকারও দূর করা সম্ভব নয়।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষা কারিকুলাম এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে, তাতে দেশের মানুষের পক্ষে অহির জ্ঞান অর্জন করা খুবই দুষ্কর। অত্যন্ত সুকৌশলে এ দেশের মুসলিম জনগোষ্ঠীকে কুরআনের জ্ঞানার্জন থেকে দূরে রাখা হয়েছে।
ফলে দেশের ভোগবাদী শিক্ষাব্যবস্থা মানুষকে সুশিক্ষিত করতে পারেনি। এই ধর্মহীন শিক্ষা ব্যবস্থা সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে অপরাধ প্রবণতা বাড়িয়েছে এবং সমাজকে অস্থির করে তুলেছে। বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা দায়িত্বশীল জনগোষ্ঠী তৈরি না করে দায়িত্বহীন মানুষ তৈরি করেছে।
আমীরে জামায়াত বলেন, হযরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে মানবতার মহান শিক্ষক হযরত মুহাম্মাদ (সা.) পর্যন্ত সকল নবী-রাসূলগণ অহির জ্ঞান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে যুগে যুগে মানবজাতিকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে নিয়ে এসেছেন।
তাঁরা ছিলেন স্ব-স্ব যুগে মানবজাতির মহান শিক্ষক। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন হযরত মুহাম্মাদ (সা.)কে প্রত্যাদেশের মাধ্যমে ৪-দফা কাজ দিলেন। প্রথম দফায় তিনি মানবজাতিকে আল্লাহর বাণী তিলাওয়াত করে শুনিয়েছেন। যারা আল্লাহর বাণী কবুল করেছেন তাদেরকে তিনি অহির জ্ঞানের আলোকে তাদের কথা-কাজ ও চিন্তা-চেতনায় পরিবর্তন ঘটিয়ে সোনার মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন।
তিনি আরো বলেন, অহির জ্ঞানের মধ্যে মানবজাতির সকল মূল নীতি অন্তর্নিহিত রয়েছে। রাসূল সা. দুনিয়াবাসীকে সেই শিক্ষাই দিয়েছিলেন। তিনি যেমন দুনিয়াবী জ্ঞান শিখিয়েছেন, তেমনি শিখিয়েছেন আখিরাতের জ্ঞান। যে জ্ঞান দুনিয়াবাসীকে জান্নাত পর্যন্ত নিয়ে যাবে।
তিনি মানুষকে সমাজ, দেশ-রাষ্ট্র, অর্থনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, সমরনীতি ও আন্তর্জাতিক পরিমÐল পর্যন্ত জ্ঞানে যোগ্য করে তুলেছিলেন।
তিনি শিক্ষকদেরকে কুরআনের আয়াত স্মরণ করে দিয়ে বলেন, আপনাদেরকে কথা ও কাজে এক হতে হবে। আপনারা নিজেরা যেমন অহির জ্ঞান অর্জন করবেন ও মানবেন, সেই আলোকে জাতিকেও আলোকিত করবেন। তবেই আপনাদের দ্বারা এ জাতি উপকৃত হবে।
এ জাতিকে পরিবর্তনের জন্য আমাদের-আপনাদেরকেই ইসলামী শিক্ষা বিস্তারের দায়িত্ব নিতে হবে। নিজেদেরকে জাতির সামনে সকল ক্ষেত্রে উত্তম আদর্শ হিসেবে উপস্থাপন করতে হবে। এটা করতে পারলেই ইসলামকে বিজয়ী করা খুব কঠিন হবে না, ইনশাআল্লাহ।
তিনি মানবতার কল্যাণ, মুক্তি এবং সর্বাঙ্গীন সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলামকে বিজয়ী আদর্শ হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।” প্রেস বিজ্ঞপ্তি