শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলায় পাশে দাঁড়াল চীন
Share on:
শ্রীলঙ্কা যখন বৈদেশিক মুদ্রা এবং ঋণ সঙ্কটে ভুগছে তখন তাকে উদ্ধারে বেইজিংয়ের আরো সহায়তা প্রত্যাশা তাদের। ঠিক এমন সময়ে উচ্চাভিলাষী বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করতে শ্রীলঙ্কা রয়েছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই।
শ্রীলঙ্কা যখন বৈদেশিক মুদ্রা এবং ঋণ সঙ্কটে ভুগছে তখন তাকে উদ্ধারে বেইজিংয়ের আরো সহায়তা প্রত্যাশা তাদের। ঠিক এমন সময়ে উচ্চাভিলাষী বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করতে শ্রীলঙ্কা রয়েছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই।
ইরিত্রিয়া, কেনিয়া, কমোরোস ও মালদ্বীপ সফর শেষে গত শনিবার ( ৮ জানুয়ারি) তিনি শ্রীলঙ্কা পৌঁছেন।
সেখানে প্রেসিডেন্ট গোটাবাইয়া রাজাপাকসে, প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দ রাজাপাকসের সঙ্গে সাক্ষাতের শিডিউল আছে তার। পরে কলম্বোর পোর্ট সিটি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী রাজাপাকসের সঙ্গে ওয়াংয়ের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডন।
উল্লেখ্য, কলম্বোর পোর্ট সিটি হলো চীনের বিনিয়োগের মূল স্থান। উচ্চ পর্যায়ের এই কূটনৈতিক সফর এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন শ্রীলঙ্কা সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সঙ্কটে নিমজ্জিত।
তাদের বৈদেশিক রিজার্ভের পরিমাণ ১৬০ কোটি ডলারের নিচে। তা দিয়ে হয়তো মাত্র কয়েক সপ্তাহ আমদানি করা যেতে পারে।
এ ছাড়া ২০২২ সালে তাদের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ছাড়িয়ে যাবে ৭০০ কোটি ডলার। এর মধ্যে জানুয়ারিতে পরিশোধ করার কথা ৫০ কোটি ডলার। জুলাইতে ১০০ কোটি ডলার। চীনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে অবকাঠামো নির্মাণের কারণে এসব বৈদেশিক ঋণ নিয়েছে দেশটি।
কিন্তু সেসব প্রকল্প থেকে এখনও রাজস্ব আয় শুরু হয়নি। উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কার হাম্বানতোতার দক্ষিণে একটি সমুদ্র বন্দর এবং একটি বিমানবন্দর নির্মাণে ঋণ দিয়েছে চীন।
শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে বর্তমানে চীনের কাছ থেকে শ্রীলঙ্কার বর্তমান মোট ঋণের পরিমাণ ৩৩৮ কোটি ডলার। এর মধ্যে রাষ্ট্র পরিচালিত বাণিজ্যিক ঋণকে ধরা হয়নি। এই হিসাব আলাদা।
এ অবস্থায় পয়েন্ট পেদ্রো ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্টের মুখ্য গবেষক মুত্তুকৃষ্ণা সর্বানন্দন বলেছেন, কৌশলগত দিক দিয়ে আমরা এখন বলতে পারি আমরা ঋণখেলাপি।
তিনি বলেন, যখন আমাদের বৈদেশিক রিজার্ভ লাল হয়ে যায়, তার মানে হলো আমরা কৌশলগত দিক দিয়ে ঋণখেলাপি।
দেশটিতে বর্তমানে গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের মারাত্মক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। গুঁড়ো দুধ, রান্নার গ্যাস, কেরোসিন সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে মানুষের লম্বা লাইন দেখা যায়। দেশটিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে আকস্মিকভাবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, মুদ্রাস্ফীতি ডিসেম্বরের শেষে বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে শতকরা ১২.১ ভাগে। নভেম্বরে তা ছিল ৯.৯ ভাগ।
খাদ্যে স্ফীতি দেখা দিয়েছে শতকরা কমপক্ষে ২২ ভাগ। মুদ্রা ঘাটতির ফলে আমদানিকারকরা তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস ও কারখানার প্রয়োজনীয় কাঁচামাল কার্গো থেকে খালাস করাতে পারছেন না।
প্রবাসীদের পাঠানো মেরিটেন্সও কমে গেছে। কারণ, সরকার বৈদেশিক মুদ্রার বাধ্যতামূলক রূপান্তরের নির্দেশ দিয়েছে। বিনিময় হারের ওপরও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।
এইচএন