tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
জাতীয় প্রকাশনার সময়: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৭:০৫ পিএম

সাবেক এমপি সাদেক খান ও প্রিন্সের দুর্নীতির অনুসন্ধানে দুদক


sadek_20240915_163346001

ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক দুই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।


তারা হলেন- ঢাকা-১৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খান এবং পাবনা-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স।

রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

দুদকের উপ-পরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দুদকের গোয়েন্দা ইউনিটের অনুসন্ধানে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আওয়ামী লীগ নেতা সাদেক খান ১৯৯৭ সালে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সর্বকনিষ্ঠ কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে ২০০১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি তৎকালীন ৪৭ নং ওয়ার্ড ও বর্তমান ৩৪ নং ওয়ার্ড থেকে চারবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার টিকিটে ঢাকা-১৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।

সাদেক খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য হওয়ার পর থেকে ঢাকার মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, সাদেক খান মুরগি মার্কেট, সাদেক খান শুটকি মার্কেট, সাদেক খান ইট মার্কেট, সাদেক খান বালি মার্কেট, সাদেক খান বস্তি ও পেট্রোল পাম্প নামের সব স্থাপনা হিন্দু সম্পত্তি দখল করে তৈরি করেছেন। তার দাখিল করা নির্বাচনী হলফনামায় নিজ নামে ১ কোটি ৪১ লাখ টাকা অকৃষি জমি, যৌথ নামে ১ কোটি ৩১ লাখ ৫২ হাজার টাকার জমি দেখিয়েছেন। তিনি ৫০ শতাংশ অংশীদার, ১১ লাখ ৯০ হাজার টাকার অ্যাপার্টমেন্ট, বাড়ি, ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকার পরিবহন ও অন্যান্য সম্পদ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন।

স্ত্রীর নামে ৩৯ লাখ ৫০ হাজার টাকার গাড়ি, ১ কোটি ১২ লাখ ৩ হাজার টাকা মূল্যের জমি ও অন্যান্য সম্পদ রয়েছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করেন সাদেক খান। এছাড়াও তার দাখিল করা হলফনামায় সর্বমোট ৫২ কোটি ৬০ লাখ টাকা এবং জমিসহ দুটি একক বাড়ি ও একটি যৌথ বাড়ি, যার মূল্য সাড়ে ৫ কোটি টাকা দেখানো হয়েছে। তার নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে বলেও তথ্য পেয়েছে দুদক।

অন্যদিকে গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স পাবনা-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। তিনি ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পাবনা-৫ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ, ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ এবং ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পাবনা-৫ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে চলতি বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত হলে সংসদ সদস্য পদ হারান প্রিন্স।

পাবনা-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রিন্সের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। হলফনামা অনুযায়ী ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন তার সম্পদ ছিল ৪৭ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। পরবর্তী সময়ে ২০২৩ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় সম্পদ দেখিয়েছেন ৭ কোটি ৫৬ লাখ ১২ হাজার ৫৬৮ টাকা।

এর মধ্যে অন্যতম হলো, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ৩ কোটি ৬২ লাখ ৯৩ হাজার ৮৮৩ টাকা। শেয়ার ক্রয় ৪ লাখ ৯০ টাকার। বিভিন্ন সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ ৩ কোটি টাকা। বাস-ট্রাক ও মোটরগাড়ি ক্রয় ৭৭ লাখ ৭৮ হাজার ৬৮৫ টাকার। এছাড়া নিজ নামে ৮ কোটি ৬ লাখ ৮৫ হাজার ৫৮২ টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। দেশ-বিদেশে তার বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে বলেও জানতে পেরেছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি।