আওয়ামী লীগ হত্যার রাজনীতিতে বিশ্বাসী : ডা. শফিকুর রহমান
Share on:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আওয়ামী লীগ হত্যার রাজনীতিতে বিশ্বাসী। তারা গুম, খুন, লুটপাট, মেয়েদের ইজ্জত লুণ্ঠনের রাজনীতিতে বিশ্বাসী।
আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা দেশের মানুষের ওপর, ভিন্নমতের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ওপর এতটাই নির্যাতন করেছে যে, বিচারের ভয়ে তারা পালাতে গিয়ে এখন খালে বিলে ধরা পড়ছে।
শনিবার (২৪ আগস্ট) সকাল ৯টায় হবিগঞ্জ পৌরসভা মাঠে জেলা জামায়াত আয়োজিত অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জাতির নেতা ছয় আনা দরের কাগজ ১২ টাকা দরে তুলে দিয়েছিলেন ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে। আর আপনারা কী বললেন, আর কী শাসন দিলেন জনগণকে? আপনারা বলেছিলেন, দেশকে সিঙ্গাপুর বানিয়েছেন, কানাডা বানিয়ে ফেলেছেন। কোথায় আপনাদের কানাডা আর সিঙ্গাপুর। আপনাদের নেত্রী তো দেশকে ধ্বংস করে দিয়ে, রিজার্ভ ও ব্যাংকগুলোকে ফাঁকা করে দিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, কথিত সোনা মানিক ভারতে পালাতে গিয়ে সিলেটে সীমান্তে ধরা পড়েছে। তার কাছে নাকি ৭০ লাখ টাকাও পাওয়া গেছে। তারা এখন এভাবেই ধরা পড়বে, ইনশাআল্লাহ।
ডা: শফিকুর রহমান বলেন, ছাত্র আন্দোলনে যারা নিহত হয়েছেন তারা জাতীয় সম্পদ, জাতীয় বীর। তাদের আত্মত্যাগের কারণে দেশ একটি জুলুমবাজ সরকারের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। শেখ হাসিনা বলতেন, এটা তাদের দেশ, অন্যরা ভাড়াটিয়া। এখন তারা নিজেরাই দেশে থাকতে পারছেন না। র্যাবকে তারা রক্ষীবাহিনীতে রূপান্তরিত করেছিল, আদালতকে কুক্ষিগত করেছিল। তাদের কাছে দেশের জনগণ নিরাপদ ছিল না।
জামায়াত আমীর বলেন, সংখ্যা গুরু বা সংখ্যা লঘু বলতে কিছুই নেই, আমরা সবাই মানুষ। মানুষ হিসেবে আমাদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। বিগত দিনগুলোতে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে জামায়াতে ইসলামী। প্রতিশোধ নিতে হলে আমাদেরই নেওয়ার কথা, কিন্তু আমরা প্রতিশোধ নেইনি, নিবও না। পটপরিবর্তনের পর আমরা মন্দির পাহারা দিয়েছি, বারবার হিন্দুধর্মের নেতাদের সাথে বৈঠক করেছি।
আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল করেছে আমাদের বিচারের জন্য, এখন তাদেরকেই এ আদালতে উঠতে হবে। এক স্বৈরাচারের পতন হয়েছে, নতুন রূপে অন্য স্বৈরাচার যাতে ক্ষমতা দখল করতে না পারে সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
পরে হবিগঞ্জে ছাত্র আন্দোলনে ১৫ জন নিহতের মধ্যে ১৪ জনের পরিবারকে ১ লাখ টাকা করে আর্থিক অনুদান প্রদান করেন ডা. শফিকুর রহমান। এর আগে একজনের পরিবারকে সিলেটে অনুদান প্রদান করা হয়েছিল।
জামায়াতে ইসলামী হবিগঞ্জ জেলা শাখার আমীর মাস্টার আব্দুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি কাজী মহসিন আহমেদের সঞ্চালনায় অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী হবিগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে হবিগঞ্জ পৌর মাঠে হবিগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ১৫টি শহীদ পরিবারের প্রত্যেকটি পরিবারকে এক লক্ষ টাকা করে প্রদান করেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আমীরে জামায়াত ডাঃ শফিকুর রহমান, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সিলেট মহানগরী আমীর মোঃ ফখরুল ইসলাম, সিলেট মহানগরী সেক্রেটারি মোঃ শাহজাহান আলী, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য শাহীন আহমদ খান। জেলা আমীর আলহাজ্ব আব্দুর রহমানের সভাপতিত্বে ও জেলা সেক্রেটারি অধ্যক্ষ কাজী মহসিন আহমদ ও জেলা এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি এডভোকেট মোঃ নজরুল ইসলামের যৌথ পরিচালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা কর্মপরিষদ সদস্যবৃন্দ ও বিভিন্ন উপজেলা আমীর ও সেক্রেটারিবৃন্দ।
শহীদ পরিবারের পক্ষে উপস্থিত থেকে আমীরে জামায়াতের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা গ্রহণ করেন শহীদ সাদিকুর মিয়ার স্ত্রী জান্নাত বেগম, শহীদ নয়ন মিয়ার মা ঝর্না বেগম, শহীদ আকিবুর মিয়ার স্ত্রী রাকিবা আক্তার, শহীদ আনাস মিয়ার ভাই রাজিব মিয়া, শহীদ তোফাজ্জুল মিয়ার পিতা আঃ রউফ, শহীদ আশরাফুল মিয়ার পিতা আঃ নূর, শহীদ মুজাক্কির মিয়ার স্ত্রী সুজিনা বেগম, শহীদ সুহেল আখঞ্জির মেয়ে শিমু আখঞ্জি, শহীদ হাসান মিয়ার পিতা সানু মিয়া, শহীদ শফিকুল ইসলাম শামীম এর স্ত্রী পিয়ারা বেগম, শহীদ নাহিদুল ইসলামের ভাই নাইমুল ইসলাম, শহীদ মামুনুল ইসলামের ভাই আমীর হামজা, শহীদ মোনায়েম আহমদ ইমরানের স্ত্রী ইয়াসমিন বেগম, রিপন শীলের মা রুবি রাণী, শহীদ আজমত আলীর স্ত্রী রবিরুন বেগম।
বার্তা প্রেরক,
এমএইচ