পাকিস্তানের পিএসএল উন্মাদনা, বিসিবির গলার কাঁটা বিপিএল?
Share on:
আজ বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) পর্দা উঠছে পিএসএলের সপ্তম আসরের।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কার্যালয়ের দরজা খুলে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) প্রধান রমিজ রাজা বলছেন, ‘পিএম, সময় হয়েছে’। রমিজ রাজার এমন কথার জন্যই যেন অপেক্ষা করছিলেন ইমরান খান।
রমিজের কথা শুনে দ্রুত উঠে দাঁড়িয়ে ইমরান খান বলছেন, ‘পাকিস্তান সুপার লিগের সপ্তম আসর আসছে।’
আজ বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) পর্দা উঠছে পিএসএলের সপ্তম আসরের।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে পাকিস্তানে শ্রীলঙ্কান টিম বাসের ওপর সন্ত্রাসী হামলা হওয়ার পর থেকে লম্বা সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বন্ধ ছিল।
এখনও সেটি স্বাভাবিক হয়নি। অনেক চেষ্টার পর কয়েকটি দল পাকিস্তান সফর করলেও, দ্বিতীয়বার ভাবে পাকিস্তান সফরে যাবে কি না।
২০১৬ সালে এমন ভীতিকর অবস্থার মধ্যে থেকেও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভেন্যু ভাড়া করে শুরু হয় পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল)। গোটা আসরের একটি ম্যাচও হয়নি পাকিস্তানে।
২০১৭ সালে আসরের সবকটি ম্যাচ আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত হলেও ফাইনাল ম্যাচটা সফলভাবে আয়োজন হয় পাকিস্তানে।
২০১৮ সালে দুটি এলিমিনেটর ও ফাইনাল আয়োজন হয় পাকিস্তানে, বাকি সব ম্যাচ আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত হয়।
২০১৯ সালের আসরে ফাইনালসহ শেষ দিকের ৮টি ম্যাচ আয়োজন হয় পাকিস্তানে। এভাবেই ধীরে ধীরে পিএসএল পুরোপুরি পাকিস্তানে নিয়ে আসতে সক্ষম হয় পিসিবি।
সর্বশেষ ২০২০ সালের গোটা আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে পাকিস্তানে।
২০১৬ সালে শুরু হওয়ার পর পাকিস্তানের এই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ নিয়মিত অনুষ্ঠিত হবে কী না এ নিয়েও দুশ্চিন্তা ছিল। কিন্তু পিসিবি সেটি নিখুঁতভাবে চালিয়ে নিয়েছে সামনের দিকে।
শুধু আয়োজনেই শেষ নয়, দিন দিন উন্নতি করছে পিএসএল। যা বর্তমানে পাকিস্তান ক্রিকেটের আয়ের অনেক বড় খাত হিসেবে ধরা হচ্ছে।
অথচ এখন থেকে তিন আসর আগে অর্থাৎ ২০১৮ সালের আসরেও পিসিবি লিগটি সরাসরি সম্প্রচার করাতে দ্বারে দ্বারে ঘুরত সম্প্রচারক প্রতিষ্ঠানের।
সেই পিএসএল এবার সম্প্রচার করবে বিশ্বের ১৮ টি দেশে ৪০টি চ্যানেলে। অস্ট্রেলিয়ায় ফক্স স্পোর্টস, নিউজিল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যে স্কাই স্পোর্টস, আফ্রিকান অঞ্চলে সুপারস্পোর্টস।
উপমহাদেশে টেন স্পোর্টস ও পিটিভি স্পোর্টস দেখাবে পিএসএল। সম্প্রচার ও স্পন্সরশীপ থেকে পাওয়া ৮০ শতাংশ অর্থ আবার ভাগ করে দেয়া হয় ফ্র্যাঞ্চাইজিদের মধ্যে। বাকি অর্থ জমা হয় পিসিবির কোষাগারে।
অস্ট্রেলিয়ার ফক্স স্পোর্টস প্রথমবারের মতো যুক্ত হয়েছে পিএসএলের সঙ্গে। অথচ ফক্স স্পোর্টস সরাসরি সম্প্রচার করেনি নিজের দেশের খেলাও (বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ ২০২১)।
পিএসএলের ডিরেক্টর সালমান নাসের সংবাদ মাধ্যম বিবিসিকে বলেছেন, “পিএসএল বৈশ্বিক একটা ব্র্যান্ড এখন। নতুন আসরের স্পন্সরশীপ ও প্রচারসত্ত্ব ২০০ ভাগ বেশি দামে বিক্রি হয়েছে।”
চলতি বছর প্রায় একই সময়ে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) অষ্টম আসর।
২০১২ সালে শুরু হওয়া বিপিএল নিয়মিত আয়োজন হলে এবার ১১তম আসর মাঠে গড়াতো। কিন্তু বিপিএল যেন গলার কাঁটা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি)।
প্রতি বছর পিএসএল যেখানে উন্নতির ধারা অব্যাহত রেখেছে, সেখানে বিপিএল যেন হারিয়ে যাবার উপক্রম।
বিদেশি নিম্নমানের খেলোয়াড়দের নিয়ে এসে কোনও মতে লিগ আয়োজন করেই যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচা। আর সেখানে পিএসএলের দলগুলো দেখলে বোঝা যায় তারা খেলোয়াড় নির্বাচনে কতটা সতর্ক।
করোনা মহামারীর দোহাই দিয়ে এবারের বিপিএলে নেই ডিআরএস, বিদেশি আম্পায়ার, স্বনামধন্য ধারাভাষ্যকার। এমন কী নিম্নমানের গ্রাফিক্স দিয়ে দায়সারা আয়োজন চলছে বিপিএলের।
পিএসএলের এবারের আসরে চ্যাম্পিয়ন দল যেখানে ৯০ মিলিয়ন (পাকিস্তানি রুপি) পাবে যেখানে বিপিএলের চ্যাম্পিয়ন দল পবে মাত্র ১কোটি টাকা।
গোটা আসরে ১৩০ মিলিয়ন পাকিস্তানি রুপি থাকছে শুধু পুরুস্কারের জন্য। যা গত আসরে ছিল ১১২ মিলিয়ন পাকিস্তানি রুপি।
করোনার দোহাই দিয়ে দর্শক প্রবেশের অনুমতিও শেষ মুহূর্তে উঠিয়ে নেয় বিসিবি।
অথচ করোনা মাথায় নিয়েও কোভিড ভ্যাকসিন সনদ নিশ্চিত করে প্রতি ম্যাচে প্রায় ৫০ শতাংশ দর্শক প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে পিসিবি। বিসিবি কী পারত না?
এইচএন