জাতির ক্রান্তিকালে আলেম সমাজকেই ভূমিকা পালন করতে হবে : ড. রেজাউল করিম
Share on:
দেশ ও জাতির চলমান ক্রান্তিকালে সকল প্রকার মত পার্থক্য ও ভেদাভেদ ভুলে ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে দেশকে ইসলামী রাষ্ট্রে পরিণত করতে আলেম-উলামাদের ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তোলার আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ও সাপ্তাহিক সোনার বাংলার সহকারি সম্পাদক ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
বুধবার (২০ মার্চ) লক্ষ্মীপুর শহরের ঐতিহ্য কনভেনশন সেন্টারে লক্ষ্মীপুর জেলা উলামা বিভাগ আয়োজিত বরেণ্য উলামা-মাশায়েখদের সম্মানে আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আলেমরাই উম্মাহর শ্রেষ্ঠ সন্তান। দেশ ও জাতির যেকোন ক্রান্তিকালে আলেম সমাজই কাণ্ডারীর ভূমিকা পালন করেছেন। তারা আমাদের আধ্যাত্মিক শিক্ষক। আলেমদের মর্যাদা সম্পর্কে পবিত্র কালামে হাকীমের সূরা আল ফাতিরের ২৮ নং আয়াতে বলা হয়েছে, আল্লাহর বান্দাগণের মধ্যে কেবল আলেমরাই আল্লাহকে বেশি ভয় করেন।
কালামে পাকের অনত্র বলা হয়েছে, ‘তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছো ও যাদের জ্ঞান দান করা হয়েছে আল্লাহ তাদের মর্যাদায় উন্নত করবেন। তোমরা যা কিছু কর আল্লাহ সে সম্বন্ধে পরিপূর্ণ অবগত। (সূরা মুজাদালা, আয়াত-১১) কিন্তু সরকার নিজেদের উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করার জন্য দেশের বরেণ্য আলেমদের বিরুদ্ধে জুলুম-নির্যাতন চালাচ্ছে। তারা দেশকে অঘোষিত কারাগারে পরিণত করেছে। তাই দেশ ও জাতিকে এ অবস্থা থেকে মুক্ত করার জন্য আলেম সমাজকেই কাণ্ডারীর ভূমিকা পালন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, রহমত, মাগফিরাত ও জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তির মহিমান্বিত মাস মাহে রমজান চললেও সরকার ও মহল বিশেষের অতি মাত্রায় ইসলাম বিদ্বেষের কারণেই কোন শ্রেণির মানুষের জন্য সিয়াম পালন নির্বিঘ্ন ও আয়েসী হয়নি বরং লাগামীহীন মূল্যস্ফীতির কারণেই প্রান্তিক শ্রেণির রোজাদাররা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এমনকি রোজাদাদের সাথে নানা ধরনের বৈরি আচরণ করা হচ্ছে। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে ইফতার মাহফিলে চিহ্নিত একটি মহল হামলা করার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে যে, এই সরকার দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে না। সরকারের লাগামহীন ব্যর্থতা ও উদাসীনতার কারণেই পুরো দেশই নারী নির্যাতনের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। দেশে আইনের শাসন না থাকায় গণপিটুনীতে হত্যার ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। যা কোন সভ্য ও গণতান্ত্রিক সমাজে কাম্য নয়। তিনি দেশে আইনের শাসন ও গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দলমত নির্বিশেষে সকলকে জাতীয় ঐক্যমত প্রতিষ্ঠার আহবান জানান।
জেলা ওলামা বিভাগের সভাপতি মাওলানা নাসির উদ্দিন মাহমুদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা মাসুম বিল্লাহ সঞ্চালনায় মাহফিলে প্রধান আলোচকের আলোচনা পেশ করেন টুমচর ইসলামিয়া কামিল মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ আল্লামা হারুন আল মাদানী।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন লক্ষ্মীপুর আল ইসলাম সোসাইটির চেয়ারম্যান ও লক্ষ্মীপুর জেলা উলামা-মাশায়েখ পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা এস ইউ এম রুহুল আমীন ভূঁইয়া, জেলা উপদেষ্টা মাওলানা ফারুক হোসেন নূরনবী ও কেন্দ্রীয় উলামা-মাশায়েখ পরিষদের প্রচার সম্পাদক অধ্যক্ষ মাওলানা মাশাররফ হোসাইন। মাহফিলে আরো বক্তব্য রাখেন মাওলানা সরদার সৈয়দ আহমদ, আওলাদে রাসুল মাওলানা সাইয়েদ মাহবুব ইজ্জুদ্দীন জাবেরী আল মাদানী, উপাধ্যক্ষ মাওলানা মাহবুবুর রহমান আল মাদানী, অধ্যক্ষ মাওলানা আহমাদুল্লাহ, অধ্যক্ষ মাওলানা আ ন ম নিজামুদ্দিন, অধ্যক্ষ মাওলানা দেলোয়ার হোসেন, অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রহিম, মাওলানা আমিনুল ইসলাম মুকুল, মাওলানা আব্দুর হাই, মাওলানা শামসুল হুদা প্রমূখ। ইফতার মাহফিলে দুই শতাধিক আলেম উপস্থিত ছিলেন। ইফতারের আগে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় দোওয়অ ও মুনাজাত পরিচালনা করা হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি//এমএইচ