ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
Share on:
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম ইসরায়েলের ৪ জন নাগরিককে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত ইসরায়েলিরা হলেন ডেভিড শাই চাসদাই (২৯), ইনোন লেভি (৩১), ইনান তানজিল (২১) এবং শালোম জিচেরমান (৩২)।
শুক্রবার একটি রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য মিশিগান সফরে গিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় বা ট্রেজারি বিভাগ দেশটির ট্রেজারি বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রওনা হওয়ার আগে নিষেধাজ্ঞার আদেশে স্বাক্ষর করে গেছেন তিনি।
নিষেধাজ্ঞা জারির ফলে এখন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ এবং সেখানে কোনো সম্পদ কিনতে পারবেন না এই চার ইসরায়েলি। যতদিন নিষেধাজ্ঞা থাকবে— ততদিন দেশটিতে অর্থনীতি এবং অর্থব্যবস্থার সঙ্গেও কোনো ভাবেই সংশ্লিষ্ট হতে পারবেন না তারা।
বস্তুত, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি বাহিনী ও ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে যুদ্ধ বাঁধার পর থেকে পশ্চিম তীরে বসবাসকারী ফিলিস্তিনি এবং ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের মধ্যে দাঙ্গা-সহিংসতা বেড়েছে ব্যাপক হারে।
এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বসতি স্থাপনকারীদের পক্ষে সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ছে ইসরায়েলি পুলিশ- নিরাপত্তা বাহিনী। জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী, ৭ অক্টোবরের পর গত প্রায় চার মাসে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি দাঙ্গায় নিহত হয়েছেন প্রায় ৩৭০ জন ফিলিস্তিনি। ইসরায়েলের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং বসতি স্থাপনকারীরা এসব হত্যার জন্য দায়ী।
প্রসঙ্গত, গাজায় যুদ্ধের অজুহাতে পশ্চিম তীরে যখন সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে, সে সময়েই ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে বলে সতর্ক করেছিল বাইডেন প্রশাসন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন গত ৫ ডিসেম্বর এই সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন।
সেই হিসেবে ওয়াশিংটনের এ পদক্ষেপ বেশ বিরল। নিষেধাজ্ঞা আদেশে স্বাক্ষরের আগে যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট কংগ্রেসে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন বাইডেন। সেই চিঠিতে এই সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে তিনি বলেছেন, ‘পশ্চিম তীরে দাঙ্গা পরিস্থিতি চলছে। গোঁড়া ও চরমপন্থীদের লাগামহীন সহিংসতা, বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড ও লুটপাটের কারণে ইতোমধ্যে শত শত বেসামরিকের মৃত্যু হয়েছে, বিপুল সংখ্যক মানুষ ইতোমধ্যে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, সরকারি-বেসকরকারি-ব্যক্তিগত সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই অসহনীয় অবস্থা মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর হুমকি।’
এনএইচ