tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
আন্তর্জাতিক প্রকাশনার সময়: ২৪ নভেম্বর ২০২২, ২০:২৩ পিএম

বাংলাদেশের ইলিশের ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে : মমতা


ইলিশ২

বাংলাদেশের পদ্মার ইলিশের প্রতি পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের বরাবরই টান রয়েছে। প্রতি বছর ইলিশের মৌসুমে পশ্চিমবঙ্গ, বিশেষ করে কলকাতার বাঙালিরা বাংলাদেশের ইলিশবাহী ট্রাকের প্রবেশের জন্য অপেক্ষা করে থাকেন।


কিন্তু এবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যবাসীকে বাংলাদেশের ইলিশের ওপর নির্ভরতা কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে রাজ্যে ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে ঘোষণাও দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার রাজ্য বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখন থেকে বাংলাদেশের ইলিশের ওপর থেকে আমাদের নির্ভরতা কমাতে হবে। সেই সঙ্গে ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে নদী ও সমুদ্র থেকে খোকা ইলিশ (ইলিশের পোনা বা জাটকা) ধরা বন্ধ করতে হবে।’

সমুদ্রের বাসিন্দা ইলিশ প্রতি বছর বর্ষাকালে ডিম পাড়তে বঙ্গোপসাগরের সংলগ্ন বিভিন্ন নদীতে যায়। ডিমপাড়া শেষে আবার সমুদ্রে ফিরে আসে।

কয়েক বছর আগে বাংলাদেশের সরকার বছরের একটি নির্দিষ্ট ইলিশ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। যে সময়ে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, সেটি মা ইলিশের ডিম ছাড়ার চুড়ান্ত মৌসুম। নিষেধাজ্ঞা ঠিকমতো কার্যকর হচ্ছে কিনা— তা তদারকিতেও বাংলাদেশের সরকার ও প্রশাসন বেশ কঠোর।

বাংলাদেশের মতো পশ্চিমবঙ্গেও বঙ্গোপসাগরের উপকূল এবং সংলগ্ন যথেষ্টসংখ্যক নদী রয়েছে; সেসব নদীতে ডিম দিতে সাগর থেকে ইলিশও যায়; কিন্তু লাগামহীনভাবে মা ইলিশ ও জাটকা ধরার কারণে বাংলাদেশের ইলিশ উৎপাদনের ধারেকাছেও নেই পশ্চিমবঙ্গ।

ইতোমধ্যে জাটকা বা ইলিশের পোনা ধরা বন্ধে আইন করেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার, কিন্তু সেখানকার বাজারের ছবিতে সেই আইনের ছবি মেলে না। মাঝারি ও বড় ইলিশ বহুমূল্য হওয়ায় পশ্চিমবঙ্গের বাজারে দেদার বিক্রি হয় খোকা ইলিশ। দামে কম, আবার স্বাদেও প্রমাণ আকারের ইলিশের ছিটেফোঁটা পাওয়া যায়।

কিন্তু রাজ্যের বিভিন্ন জলাশয় থেকে যে ইলিশ হারিয়ে যাচ্ছে, তার প্রধান কারণ এই জাটকা আহরণ।

বৃহস্পতিবারের (২৪ নভেম্বর) বক্তব্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কেবল আইন করে খোকা ইলিশ ধরা বন্ধ করা যাবে না। মানুষকে সচেতন করতে হবে। আমরা চাইছি আমাদের খোকা ইলিশ ধরা বন্ধের অভিযানে মৎস্যজীবীরা এক হোন।’

‘তারা সচেতন হলে রাজ্যে খোকা ইলিশ ধরা বন্ধ হবে। ইলিশের বংশবৃদ্ধি, উৎপাদন বাড়বে এবং সেসঙ্গে কমবে মূল্যও।’

ইতোমধ্যে রাজ্যে ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার ডায়মন্ড হারবারে একটি গবেষণাগার স্থাপন করা হয়েছে উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ডায়মন্ড হারবারে ইলিশ নিয়ে একটি গবেষণাকেন্দ্র তৈরি করেছি। সেখানে এই রাজ্যে আরও বেশি করে ইলিশ উৎপাদন নিয়ে গবেষণা করা হচ্ছে। এই গবেষণাকেন্দ্রে প্রতিনিয়ত ইলিশের গতিবিধি নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। তাই ভবিষ্যতে যাতে এই রাজ্যে প্রচুর ইলিশ উৎপাদিত হয়, সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়া হচ্ছে।’

ইলিশের পাশপাশি অন্যান্য মাছের উৎপাদন বাড়াতে পশ্চিমবঙ্গে মাছ চাষ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘শুধু ইলিশ নয়, আমাদের নদী ও জলাশয়ে অন্যান্য মাছের উৎপাদন বাড়াতে হবে। মাছের চাষ বাড়াতে হবে। এতে একদিকে রাজ্যে মাছের উৎপাদন বাড়বে, সেই সঙ্গে বহু মানুষের কর্মসংস্থানও হবে।’

‘আমরা সবাই যদি সচেতন হই, তাহলে আমাদের আর ওপারের ইলিশের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না।’

এন