গায়েবি মামলা দিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা করছে সরকার : রিজভী
Share on:
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, মামলা হামলা দিয়ে কোনো কাজ হবে না।
এবার শেখ হাসিনা সরকারকে পদত্যাগ করতেই হবে এবং নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতেই হবে। গণতন্ত্র আদায়ের এক দফা আন্দোলনের কণ্ঠস্বর যেন তীব্র না হয়, সেজন্য গায়েবি মামলা দিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য চেষ্টা করছে সরকার। এবার আর কোনো কিছুতে কাজ হবে না।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলার শুনানিতে হাজিরা দিতে এসে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, মিথ্যা মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সনসহ আমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় নেতাকে আসামি করা হয়। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এসব মামলায় হাজিরা দিয়ে আসছি। এই মামলা যারা দিয়েছে- উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দিয়েছে। একতরফা কর্তৃত্ববাদী নির্বাচন করা জন্য, ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য, বিরোধী শক্তিকে দমন করার জন্য দেশব্যাপী নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে।
২০১৫ সালে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মিয়া বাজার এলাকায় বাসে আগুন দিয়ে ৮ জন হত্যা এবং কাভার্ডভ্যান পোড়ানোর ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলার শুনানি হয় কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ মো. হেলাল উদ্দিনের আদালতে। ওই মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের অভিযুক্ত করা হয়। ওই মামলার হাজিরা দিতে আসেন রিজভী।
বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষের আইনজীবীরা তার উপস্থিতির জন্য সময় আবেদন করেন। বিজ্ঞ বিচারক সময় আবেদন মঞ্জুর করলেও শুনানির পরবর্তী তারিখ তাৎক্ষণিকভাবে জানাননি।
বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষের আইনজীবী কাইমুল হক রিংকু বলেন, কুমিল্লার আদালতে তিনটি মামলার শুনানি ছিল আজ। আমরা তিন মামলাতেই বেগম খালেদা জিয়ার জন্য সময় চেয়েছি। একটি মামলা চার্জের জন্য প্রস্তুত হয়েছে, বাকি দুটি মামলা বিজ্ঞপ্তির জন্য শুনানি হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে ৩ ফেব্রুয়ারি ভোররাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের মিয়াবাজারের জগমোহনপুরে আইকন পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় ৮ জন মারা যান। পরে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াসহ বিএনপি-জামায়াতের ৫৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৭০/৮০ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করা হয়। তদন্ত শেষে ওই মামলায় ৭৮ জনকে আসামি করে ২০১৭ সালের ২ মার্চ মোট ৭৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। যার শুনানির সময় ছিল আজ ২০ সেপ্টেম্বর। একই ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের অপর একটি মামলাও একই শুনানিতে অন্তর্ভুক্ত ছিল।
ওই মামলার প্রধান আসামি করা হয় জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরকে। ৫১ নম্বর আসামি করা হয় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে। এছাড়াও কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতাদের মধ্যে আছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মরহুম এম কে আনোয়ার, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও সালাউদ্দিন আহমেদ, শওকত মাহমুদ, মনিরুল হক চৌধুরীসহ আরও অনেকে।
অপরদিকে একই বছরে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা সদরের মহাসড়কের হায়দারপুল এলাকায় কাভার্ডভ্যান পোড়ানোর ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের আরও একটি মামলায় আসামিদের উপস্থিতির শুনানি একই আদালতে একই সময় অনুষ্ঠিত হয়। তিনটি মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে আদালতে উপস্থিত করার জন্য আইনজীবীরা সময় আবেদন করেন।
শুনানিতে মামলার অন্যতম আসামি বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপার্সনের সাবেক উপদেষ্টা শওকত মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।
এমবি