জামায়াত আমীরের মুক্তি দাবি, মিছিল থেকে নেতাকর্মী গ্রেফতারের নিন্দা
Share on:
আমীরে জামায়াত ডা: শফিকুর রহমানকে গ্রেফতারের প্রতিবাদ ও মুক্তির দাবিতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল চলাকালে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নেতাকর্মীদের অন্যায়ভাবে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম বিবৃতি প্রদান করেছেন।
রোববার (১৮ ডিসেম্বর) বিবৃতিতে মাওলানা এটিএম মা’ছুম বলেন, “১৭ ডিসেম্বর (শনিবার) দিনাজপুর, বি-বাড়িয়া ও কুমিল্লা জেলায় জামায়াতের শান্তিপূর্ণ মিছিল চলাকালে সম্পূর্ণ বিনা উস্কানীতে পুলিশ ১০ জন নেতাকর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। আমি এ সব অন্যায় গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি, লুটপাট ও ফ্যাসিবাদী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে গোটা দেশবাসী যখন প্রতিবাদে আন্দোলন মুখর হয়ে উঠছে, তখন জনদৃষ্টি ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গায় জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের মিথ্যা ও বায়বীয় মামলা দিয়ে গণহারে গ্রেফতার ও হয়রানি করা হচ্ছে। নেতাকর্মীদের বাসাবাড়ি ও ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে এক ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হচ্ছে। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, গণহারে গ্রেফতার ও মামলা-হামলা করে জনগণের এই আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না।
দিনাজপুর, বি-বাড়িয়া ও কুমিল্লা থেকে আটককৃত নেতাকর্মীসহ সারাদেশে গ্রেফতারকৃত জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সকল নেতাকর্মীকে অবিলম্বে নিঃশর্তভাবে মুক্তি দেয়ার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।” (প্রেস বিজ্ঞপ্তি)
শোক সংবাদ :
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রংপুর জেলার কর্মপরিষদ সদস্য, জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সেক্রেটারি, পীরগাছা বহুমুখী সাঁটলিপি কারিগরি কলেজের প্রদর্শক ও পীরগাছা কম্পিউটার একাডেমির স্বত্বাধিকারী জনাব শফিকুল ইসলাম ১৭ ডিসেম্বর আনুমানিক বিকাল ৩টার দিকে সাংগঠনিক প্রোগ্রাম শেষে রংপুর থেকে পাগলাপীর যাওয়ার পথে মুসির মোড় এলাকায় এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ৫২ বছর বয়সে ইন্তিকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন)।
তিনি বাবা-মা, স্ত্রী, ১ পুত্র ও ১ কন্যাসহ বহু আত্মীয়-স্বজন রেখে গিয়েছেন। ১৮ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় পীরগাছা জে. এন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে প্রথম জানাযা এবং বিকেল ৩টায় মিঠাপুকুর উপজেলার ভাংনী ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামের নিজ বাড়িতে দ্বিতীয় জানাযা শেষে তাঁকে দাফন করা হয়েছে।
উভয় জানাযা পূর্ব সমাবেশে শরীক হন ও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক অধ্যাক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দীন, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জনাব আব্দুল মতিন, রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল টিম সদস্য জনাব আজিজুর রহমান সরকার, রংপুর মহানগরী আমীর মাওলানা এটিএম আযম খান, রংপুর জেলা আমীর অধ্যাপক গোলাম রববানী, মহনগরী নায়েবে আমীর অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম, জেলা সেক্রেটারি মাওলানা এনামুল হক, জেলা সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক রায়হান সিরাজী, বিএনপির রংপুর জেলার যুগ্ম আহবায়ক ও পীরগাছা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জনাব আফসার আলী, রংপুর জেলা আহ্বায়ক কমিটির সম্মানিত সদস্য ও পীরগাছা বাজার সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব আমিনুল ইসলাম রাঙ্গা, মিঠাপুকুর উপজেলা আমির মাস্টার জয়নাল আবেদীন, পীরগাছা উপজেলার সাবেক আমির ও তাম্বুলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক বজলুর রশিদ মুকুল, পীরগাছা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান রেজা, পীরগাছা সরকারি কলেজের প্রিন্সিপাল শাহ ফাহমিদ হাসান রনু, পীরগাছা কারিগরি কলেজের অধ্যক্ষ এমদাদুল হক, পীরগাছা মহিলা কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল আব্দুল মোতালেব, পীরগাছা সরকারি কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মাওলানা একে মানোয়ার উল্লাহ ও দর্শন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মোতালেব হোসেন।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও বগুড়া শহর শাখার সভাপতি আসগার আলী, কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও রংপুর মহানগরীর সভাপতি এডভোকেট কাউসার আলী কার্যকরী পরিষদ সদস্য এবং কুড়িগ্রাম জেলা সভাপতি এডভোকেট ইয়াসিন আলী, রংপুর জেলা সভাপতি জনাব অধ্যাপক আব্দুল গনি। তাছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় ও সামাজিক ব্যক্তিবর্গসহ হাজার হাজার মুসল্লী।
উল্লেখ্য, প্রথম জানাজার ঈমামতি করেন মাওলানা উপধ্যক্ষ এটিএম আজম খান এবং দ্বিতীয় জানাজার ঈমামতি করেন মরহুমের ছোট ভাই জনাব শরীফুল ইসলাম মিলন।
শোকবাণী :
জনাব শফিকুল ইসলামের ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ১৮ ডিসেম্বর ২০২২ এক শোকবাণী প্রদান করেছেন।
শোকবাণীতে তিনি বলেন, জনাব শফিকুল ইসলামের ইন্তিকালে আমরা ইসলামী আন্দোলনের একজন নিবেদিত প্রাণ দাঈকে হারালাম। তিনি ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে গিয়েছেন এবং ইসলামী আন্দোলনের প্রচার ও প্রসারে তাঁর অনেক অবদান রয়েছে। আমি তাঁর ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করছি।
শোকবাণীতে তিনি আরো বলেন, তাঁকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা ক্ষমা ও রহম করুন এবং তাঁর কবরকে প্রশস্ত করুন। তাঁর গুনাহখাতাগুলোকে ক্ষমা করে দিয়ে নেকিতে পরিণত করুন। কবর থেকে শুরু করে পরবর্তী প্রত্যেকটি মঞ্জিলকে তাঁর জন্য সহজ, আরামদায়ক ও কল্যাণময় করে দিন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁকে জান্নাতে উচ্চ মাকাম দান করুন এবং তাঁর শোকাহত পরিবার-পরিজনদেরকে এ শোক সহ্য করার তাওফিক দান করুন।
অপর এক যুক্ত শোকবাণীতে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল পরিচালক মাওলানা আবদুল হালিম গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, জনাব শফিকুল ইসলাম শরিয়াহ মোতাবেক জীবন-যাপনের চেষ্টা করতেন।
তিনি দ্বীন প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গিয়েছেন। আমি তাঁর ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করছি। আল্লাহ তায়ালা তাঁর জীবনের সকল নেক আমল কবুল করে তাঁকে জান্নাতুল ফিরদাউসে দাখিল করুন এবং তাঁর শোকাহত পরিবার-পরিজনদেরকে ছবরে জামিল দান করুন। (প্রেস বিজ্ঞপ্তি)
এন