আমাদের সংগ্রাম শেষ হয়নি : উপদেষ্টা আসিফ
Share on:
যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, প্রায় দুই সহস্রাধিক শহীদের জীবনের বিনিময়ে এবং ৩০ হাজার আহত যোদ্ধাদের ত্যাগের বিনিময়ে নতুন বাংলাদেশ তৈরি করার স্বপ্ন দেখছি।
বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করছি। আমরা নিজেরাও কখনো ভাবিনি এতো গুরু দায়িত্ব পাব। ২৪শে এতো রক্তপাত হওয়ার পরও আমাদের সংগ্রাম শেষ হয়নি। সংগ্রাম যদি শেষ হতো তাহলে মুজিববাদী সংবিধানের পক্ষে কেউ কথা বলতো না, এখনো প্রশাসনের মধ্যে যে ফ্যাসিবাদী ভূত রয়ে গেছে সেটি থাকতো না। আমাদের লড়াই দীর্ঘ।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) মুক্তমঞ্চে মওলানা ভাসানী পাঠচক্র ও জাতীয় নাগরিক কমিটি আয়োজিত ‘মওলানা ভাসানী ও নতুন বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আসিফ মাহমুদ বলেন, আমরা শুধু এক দফায় শেখ হাসিনার পতন এনে দিতে পারতাম। কিন্তু এদেশের জনগণ জানে শুধু ব্যক্তি শেখ হাসিনার পতনের মধ্য দিয়ে আমাদের মুক্তি সম্ভব না। ৭১ থেকে ২৪ পর্যন্ত যে ফ্যাসিবাদী সমাজ ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে তার ভিত অনেক গভীরে। তার শেকড় অনেক গভীরে পতিত। আমরা শুধু গাছটা কাটতে পেরেছি কিন্তু শেকড় এখনো উৎপাটন করতে পারিনি। সেই লড়াই আমাদের চালিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, এদেশের ইতিহাসকে ক্ষমতাসীনরা তাদের মতো করে বিকৃত করার চেষ্টা করেছে। তাদের বানানো ইতিহাসের যে দেয়াল সেই দেয়ালে প্রথম আঘাতটা করতে পেরেছি। আমরা বলেছি এখানে কোনো একক জাতির পিতা নেই। আমাদের অনেক ফাউন্ডিং ফাদার রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম প্রধান একজন হলেন মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী। পরবর্তী প্রজন্মকে বাংলাদেশের যে ইতিহাস রয়েছে সেই প্রকৃত ইতিহাসটা তুলে ধরবো। ফাউন্ডিং ফাদারদের যে অক্লান্ত পরিশ্রম, আজন্ম লড়াইয়ের যে ইতিহাস রয়েছে প্রকৃত ইতিহাসটা তুলে ধরবে।
উপদেষ্টা আসিফ বলেন, দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছি। প্রশাসনের প্রত্যেকটা মানুষের মননে মগজে যে ফ্যাসিবাদী চিন্তা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেটা একদিনে বা ১০ বছরেও সেটা উপড়ে ফেলা সম্ভব নয়। পুরো একটি প্রজন্মকে এই ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে উঠে আসতে হবে এবং দাঁড়াতে হবে। আমাদের প্রজন্ম প্রশাসনের প্রত্যেকটা জায়গা নতুন করে দায়িত্ব না নেবে ততক্ষণ পর্যন্ত এই ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিলোপ হবে বলে মনে হচ্ছে না।
আসিফ মাহমুদ বলেন, টাঙ্গাইলে যে স্টেডিয়ামটি রয়েছে সেটি শহীদ মারুফ স্টেডিয়াম হিসেবে নাম করণ করা হবে। ৫ আগস্ট সশস্ত্র সংগ্রামের ডাক দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। ওইদিন যদি গণভবন দখলে নিতে না পারি, তাহলে কাল থেকে কাউকে আর নিরস্ত্র হয়ে আসার আহ্বান জানাব না। যদি আমাদের ওপর অস্ত্রের আঘাত আসে তাহলে আমাদের যা কিছু অস্ত্রের সম্ভব তা নিয়েই প্রতিহত করব। কিন্তু ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, কবি ও চিন্তাবিদ ফরহাদ মজহার, মাভাবিপ্রবির উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আনোয়ারুল আজীম আকন্দ, ভাসানী ফাউন্ডেশনের মহাসচিব মাহমুদুল হক শানু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বিকেলে টাঙ্গাইলে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর মাজার জিয়ারত করেন আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলম।
এনএইচ