আ.লীগ গা ঢাকা দিয়ে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে : নূরুল ইসলাম বুলবুল
Share on:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো: নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ গা ঢাকা দিয়ে দেশে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।
তারা একেকবার একেক রূপে আত্মপ্রকাশের চেষ্টা করছে। কখনো আনসার রূপে, কখনো রিকশাচালক রূপে, কখনো নিত্যপণ্যের সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দিয়ে তারা নতুন বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে।’
সোমবার (২১ অক্টোবর) দিনব্যাপী চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনের বিভিন্ন এলাকায় ও বাজারে গণসংযোগ শেষে স্থানীয় বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের কাচারি বাজারে এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে ৫ আগস্ট আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। তরুণ প্রজন্ম নতুন বাংলাদেশকে নতুনভাবে সাজাতে চায়, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে চায়, বৈষম্য দূর করতে চায়। এসব সম্ভব হবে কেবল শুধুমাত্র ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলেই। ইসলাম ব্যতিত অন্য কোনো মতবাদে একজন মুসলমান সমথর্ন দিতে পারে না। আল্লাহর বিধান বাদ দিয়ে মানুষের তৈরি বিধানে গত ৫৩ বছর বাংলাদেশ পরিচালিত হয়েছে কিন্তু সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা হয়নি। কারণ ইসলাম ব্যতিত শান্তি আসবে না।’
মো: নূরুল ইসলাম বুলবুল আরো বলেন, ‘ইসলামী রাষ্ট্রে একজন মুসলিম নাগরিকের যতটুকু অধিকার একজন অমুসলিম নাগরিকের সমান অধিকার। রাষ্ট্রের কাছে সকল নাগরিক সমান। কিন্তু ইসলাম বিদ্বেষীরা ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় নানা রকম অপপ্রচার চালিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ চেয়েছে কেয়ামত পর্যন্ত ক্ষমতায় ঠিকে থাকতে। আর এজন্য তারা একমাত্র জামায়াতে ইসলামীকে বাধা মনে করেছে। এজন্য তারা জামায়াত-শিবিরের ওপর সর্বোচ্চ জুলুম নির্যাতন চালিয়েছে। কোথাও দুই থেকে চারজন বসে একত্রে চা খেতে গেলে পুলিশ ধরে নিয়ে প্রচার করতো জামায়াত-শিবিরের গোপন বৈঠক থেকে আটক করা হয়েছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে পরবর্তীতে অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে। জামায়াতের ৫ শতাধিক নেতাকর্মীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। ২০ হাজার মিথ্যা ও সাজানো মামলায় জামায়াত-শিবিরের লাখ লাখ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।‘
তিনি আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগের জুলুমের শিকার হয়ে জামায়াতে ইসলামী মজলুম সংগঠনে পরিণত হয়েছে। কিন্তু জামায়াতের কোনো নেতা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়নি। জামায়াতের নেতাকর্মী জনগণের পাশে ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।’
তিনি আফসোস করে বলেন, ‘অথচ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে শুধু তার বোনকে নিয়ে পালিয়ে গেছে। নিজ দলের, ছাত্রলীগ-যুবলীগের একটা নেতাকর্মীর কথাও হাসিনা চিন্তা করেনি। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর সেনাপ্রধান আমিরে জামায়াতকে আমন্ত্রণ জানিয়ে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাষ্ট্র পরিচালনায় জামায়াতের পরামর্শ চাওয়া এবং আমিরে জামায়াতসহ রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে অটোমেটিক হাসিনা কর্তৃক জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার প্রজ্ঞাপন বাতিল হয়ে গেছে বরং জনগণ হাসিনা ও তার স্বৈরাচারী গোষ্ঠী আওয়ামী লীগকে চিরতরে বয়কট করেছে।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সেক্রেটারি প্রফেসর মমিমুল হকের সভাপতিত্বে বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়ন সেক্রেটারি মনিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত পথসভায় আরো বক্তব্য রাখেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আমির মাওলানা আব্দুল আলিম, পৌর আমির হাফেজ গোলাম রাব্বানী, ঢাকার হাজারীবাগ পশ্চিম থানা আমির মাহফুজ আলম, সদর উপজেলা ওলামা বিভাগের দায়িত্বশীল একরামুল হক, সদর উপজেলা সহকারী সেক্রেটারি আব্দুর রহমান, বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড সেক্রেটারি কামাল উদ্দিন জাফরী প্রমুখ।
এর আগে বাজারে-বাজারে গণসংযোগ ও ব্যবসায়ীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সাথে সদর উপজেলা, পৌর ও বিভিন্ন ইউনিয়নের জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি