tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
সারাদেশ প্রকাশনার সময়: ৩০ অগাস্ট ২০২৪, ০৯:১০ এএম

‘খুব কষ্টে আছি, পানি কমবে কবে’


lok-1-20240830090143

‘হানিত (পানিতে) কষ্ট করে চলি। ঘর-দুয়ার সব ভাঙি গেছে বন্যায়। কোনো রকম জীবন বাঁচছে। হুতজি (ছেলেমেয়ে) লই অনেক কষ্টে আছি। বাবা সাতদিন ধরে পানিতে ডুবে আছি। বউ (পুত্রবধূ) হোলাহাইনরে (সন্তান) দূরে রাখছি। ঘর থেকে যেতে মন টানছে না। এজন্য দরজায় ইটের গাঁথনি করে ঘরেই থাকি। সাতদিন ধরে হানিতে খুব কষ্ট। হানি কমবে কবে?’


বুধবার (২৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় এভাবেই কষ্টের কথা জানাচ্ছিলেন লক্ষ্মীপুরের পশ্চিম জামিরতলি এলাকার রোকসানা বেগম। তিনি ওই এলাকার রঙ্গি বাড়ির মহিন উদ্দিনের স্ত্রী। তারা স্বামী-স্ত্রী দুজন ঘর ছেড়ে কোথাও যাননি।

জানতে চাইলে রোকসানার স্বামী মহিন উদ্দিন বলেন, চারপাশে শুধু পানি আর পানি। মাছগুলো ভেসে গেছে। ঘর থেকে বাইর হতে পারছি না। কোথাও যেতে পারছি না। ঘর ছেড়ে যেতে মনও টানছে না। বন্যার পানিতে চলাচল করতে গিয়ে পুরো শরীর চুলকাচ্ছে। প্রায় কোমর পর্যন্ত বাড়ির উঠানে পানি। খাবার (বিশুদ্ধ) পানি জোগাড় করতে কষ্ট হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের টিনের ঘরটির ভেতরে হাঁটুর ওপর পানি। থাকার সুযোগই নেই। ভাঙনও দেখা দিয়েছে। মাছগুলো ভেসে আমার অনেক বড় ক্ষতি হয়েছে। খালের পানি অনবরত বাড়ির দিকে ঢুকছে। আমরা খুব কষ্টে আছি। কোনো রকম বেঁচে আছি। আমাদের রান্নাবান্না মাটির চুলাতে হতো। এখন সিলিন্ডার গ্যাসের চুলায় রান্না করে খেতে হচ্ছে।

একই এলাকায় প্রায় বুকসমান পানিতে তলিয়ে থাকতে দেখা যায় আবুল কালাম নামে এক ব্যক্তির বাড়ি। তবে তারা ঘরে নেই। আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। বাড়ির সামনের মান্দারী-দিঘলী সড়কটিতেও হাঁটুর ওপরে পানি। গাড়ি চলাচলের সময় পানির ঢেউ গিয়ে রাস্তার পাশের বাড়িগুলোতে আঁচড়ে পড়ছে। এতে আবুল কালামের বাড়ির একটি ঘর ভেঙে গেছে।

পশ্চিম জামিরতলি এলাকার বাসিন্দা খুকি বেগম। তাদের ঘরের পাশেই খাল। এ খালের পানি উপচে পুরো এলাকা এখন ডুবে আছে। একটি ছোট ব্রিজ পার হয়ে বুকসমান পানি অতিক্রম করেই তাদের বাড়ি যেতে হয়। কয়েকটি ইটের ওপর চকি বসিয়ে জীবনযাপন করছে তারা। সিলিন্ডার গ্যাসে চলছে রান্না। এছাড়া যাদের মাটির চুলা তাদের রান্না বন্ধ।

এনএইচ