জাতির উদ্দেশে ভাষণে বাংলাদেশ নিয়ে যা বললেন ইমরান খান
Share on:
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জামিনে মুক্তির পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কঠোর সমালোচনা করেছেন। এ সময় তিনি ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) লোকদের ওপর পাকিস্তান সেনাবাহিনী যে অত্যাচার করেছে তারও সমালোচনা করেন।
শনিবার (১৩ মে) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৮টার দিকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন তিনি।
ইমরান খান বলেন, আপনাদেরকে পূর্ব পাকিস্তানের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। আমার জীবদ্দশায় আমি পূর্ব পাকিস্তান দেখেছি। ১৯৭১ সালের মার্চে অনূর্ধ্ব ১৯ দলের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানে ম্যাচ খেলতে গিয়েছিলাম। আমাদের যে জাহাজটি পশ্চিম পাকিস্তানে ফিরে এসেছিল সেটি ছিল শেষ জাহাজ। আমার এখনও মনে আছে, তাদের পাকিস্তানের প্রতি কী পরিমাণ ঘৃণা ছিল। এখানে তো আমাদের এসব জানাই ছিল না। এখন যেভাবে মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে, তখনও সেভাবে মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল। পার্থক্য হচ্ছে, এখন সোশ্যাল মিডিয়া আছে। তবে এখন তো সোশ্যাল মিডিয়াও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কারণ তারা রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণের গণমাধ্যমই শুধু রাখতে চায়। নিজেদের পছন্দের কথাটাই শুধু মানুষকে শোনাতে চায়। সে জন্য সোশ্যাল মিডিয়াও বন্ধ করে দিয়েছে। পূর্ব পাকিস্তানে তখন এমনটাই হয়েছিল। আমাদের এখানে নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া, আমরা কোনো খবরই জানতাম না।
তিনি বলেন, আজ আমাদের বোঝা উচিত পূর্ব পাকিস্তানের লোকদের ওপরে যে এত বড় অত্যাচার হয়েছে। ওদের যে পার্টি নির্বাচনে জিতেছিল, যাকে তারা প্রধানমন্ত্রী বানাতে চেয়েছিল তার বিরুদ্ধে তখন মিলিটারি অ্যাকশন নেওয়া হয়েছিল। তারা মূলত দেশের বিভাজন উস্কে দিয়েছিল। তখন আমি ইংল্যান্ডে পড়তে গিয়েছিলাম। সেখানে জানতে পারলাম যে, পূর্ব পাকিস্তানে কী হচ্ছে। সে সময় আমাদের ৯০ হাজার সৈন্য কয়েদী হয়েছিল। তাদেরকে আত্মসমর্পণ করতে হলো। কী পরিমাণ ক্ষতি হলো আপনারা চিন্তাও করতে পারবেন না। তখন এসব সিদ্ধান্ত হয়েছিল বন্ধ কামরায়। যারা সিদ্ধান্ত নিতেন তারা জানতেনই না বাকি পৃথিবী কীভাবে চলে। এসব সিদ্ধান্তের কারণে ক্ষতি হলো কি না সেটাও তারা কাউকে জানতে দেয়নি।
ইমরান খান আরও বলেন, আমার গ্রেপ্তারের জন্য সেনাবাহিনী দায়ী। আমি তাদেরকে বলেছিলাম ওয়ারেন্ট দেখাতে। আমি তাদের সঙ্গে যেতে প্রস্তুত ছিলাম। আমরা সেখানে শান্তভাবে বসেছিলাম, কিন্তু তারা জানালার কাঁচ ভেঙে এমনভাবে আক্রমণ করেছে যেন পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী সেখানে বসে আছে। আমি জানি, আমাকে গত বছর হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। পরিকল্পনায় শীর্ষ থেকে নিচ পর্যন্ত জড়িত সবার নাম আমি জানি। আমি জানি সবুজ বাতি কে দিয়েছে, তাদেরকে সবুজ বাতি কে দিয়েছে সেটিও আমি জানি।
এনএইচ