tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
সারাদেশ প্রকাশনার সময়: ২৬ মে ২০২৪, ১৬:০৩ পিএম

১৬ জেলার মানুষকে প্রতিমন্ত্রী দেরি না করে এখনই নিরাপদ আশ্রয়ে যান


mohibubur-20240526135640

প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ বাংলাদেশের স্থলভাগের দিকে ধেঁয়ে আসার প্রেক্ষাপটে উপকূলীয় ১৬ জেলার অধিবাসীদের দেরি না করে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান।


রোববার (২৬ মে) সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ অনুরোধ জানান। তিনি জানান, এরই মধ্যে আট লাখেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়টি সন্ধ্যা নাগাদ বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম শুরু করতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি। মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ৯ নম্বর মহাবিপৎসংকেত জারি করা হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা পেছনের অভিজ্ঞতা দিয়ে আরও সক্ষমতার সঙ্গে রিমাল মোকাবিলার জন্য সমস্ত প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। আমরা যে নির্দেশনা দিচ্ছি সেটা যদি সবাই আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করে, আশা করছি এই দুর্যোগও আমরা পূর্বের মতো সক্ষমতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারবো।

মহিববুর রহমান বলেন, ‘আমি সবাইকে শেষবারের মতো আহ্বান জানাবো- কাল বিলম্ব না করে কালক্ষেপণ না করে যে সকল এলাকা অ্যাফেক্টেড হওয়ার সম্ভাবনা ইতিমধ্যে ঘোষিত হয়েছে সবাই এক্ষুনি নিরাপদ আশ্রয়ে যান।’

ঘূর্ণিঝড়ের ঝুঁকিতে থাকা উপকূলীয় ১৬ জেলার মধ্যে রয়েছে- খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও চাঁদপুর।

ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে আট থেকে নয় হাজার আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করে রেডি করে রেখেছি। সবগুলো আশ্রয়কেন্দ্রে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার বিস্কুট, পানি ও চিকিৎসা সামগ্রী পৌঁছে গেছে।’

ইতিমধ্যে আট লাখের বেশি মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

উপকূলীয় এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে আশ্রয়ের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িতদের বলা হয়েছে তারা যাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাছাকাছি থেকে মানুষকে আশ্রয়ের ব্যাপারে সহযোগিতা করতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা গতকাল বলেছিলাম আজ ভোর থেকেই দুর্যোগ শুরু হতে পারে। ঝড়ের গতিটা কম বলে এটি আজ ভোরে আসনি। গতকাল এর গতি ছিল ঘণ্টায় ১৬ থেকে ১৭ কিলোমিটার কিন্তু ভোররাতে এটির গতি কমে ১০ এর নিচে ঘণ্টায় ছয় কিলোমিটারে নেমে এসেছে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মহাবিপৎসংকেত জারি করা হয়েছে। সন্ধ্যা নাগাদ ঝড়ের প্রথমভাগ বাংলাদেশ অতিক্রম শুরু করবে। মধ্যরাতের মধ্যে ঝড়ের মূল অংশটি বাংলাদেশ অতিক্রম করবে। উপকূল অতিক্রমের সময় ঝড়ের সর্বোচ্চ গতি হতে পারে ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার। ঝড়ের সময় উপকূলীয় এলাকায় ১০ থেকে ১২ ফুটের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। জোয়ার থাকলে এটি আরও বেশি হবে।’

ঝড়ের কারণে দেশে প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে জানিয়ে মহিববুর রহমান বলেন, ‘ঝড় আসার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আমরা মনে করছি বৃষ্টিপাতের জন্য সারাদেশই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পাহাড়ি এলাকায় ব্যাপকভাবে ভূমিধস হওয়ার সম্ভাবনা আছে।’

তিনি বলেন, ‘শহর-গ্রাম, সিটি করপোরেশন, পৌরসভায় জলাবদ্ধতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে। যানজট হতে পারে, স্বাভাবিক যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতে পারে। ঝড় শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। লঞ্চ-স্টিমার যেগুলো চলাচল করছে সেগুলো বন্ধ থাকবে। আজ সন্ধ্যা থেকে আগামীকাল সকাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু টানেলও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে সর্বাত্মকভাবে কাজ হচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আশা করছি আঘাত হানার আগে আমরা সকল মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় নিয়ে আসতে পারবো। ঝড় পরবর্তী সময়ে কাজ করার জন্য আমাদের মেডিকেল টিমগুলো প্রস্তুত রয়েছে। সেনাবাহিনী যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে, সেখানেও আমাদের ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীর লোক যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সব ধরনের সরঞ্জাম নিয়ে তৈরি হয়ে আছে।’

‘ঝড়ের পরে যাতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়ে অন্য এলাকার কর্মকর্তারা কাজ করতে পারেন সে জন্য টিম গঠনে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেভাবেই আমরা প্রস্তুত রেখেছি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্বক্ষণিকভাবে প্রস্তুতি কার্যক্রম করছেন জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের নির্দেশনা দিচ্ছেন। ‌তার নেতৃত্ব এবং পরামর্শে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছি।

এমএইচ