tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
রাজনীতি প্রকাশনার সময়: ১৩ মে ২০২৩, ১৬:১৯ পিএম

দেশে ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হলেই জঙ্গিবাদ মূলোৎপাটিত হবে: মুজিবুর রহমান


৩

দেশে ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হলেই জঙ্গিবাদ মূলোৎপাটিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর (ভারপ্রাপ্ত) ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।


তিনি বলেন, ইসলামে জঙ্গিবাদের কোনো স্থান নেই। ইসলাম প্রতিষ্ঠিত না থাকলে সেখানেই জঙ্গিবাদের সৃষ্টি হয়। ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হলে জঙ্গিবাদ মূলোৎপাটিত হবে ইনশাআল্লাহ।

শনিবার (১৩ মে) পটুয়াখালী জিলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলন-২০২৩-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির বলেন, সরকার যতই প্রচেষ্টা চালাক, যত জুলুম-নির্যাতনই করুক না কেন, আমরা জীবন দেব। কিন্তু ঈমানহারা হব না। তিনি আপামর জনসাধারণকে ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে উদাত্ত আহ্বান জানান।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে সকল মতবাদকে উপড়ে ফেলে আল্লাহর দেয়া বিধান আইনকে প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। যত দিন না আমরা এ কাজে সফল হব, তত দিন আমাদের আন্দোলন প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। ইকামাতে দ্বীনের কাজে হয় আমরা বিজয়ী হব নতুবা আমাদের জীবন চলে যাবে। কোনো প্রলোভন আমাদেরকে কালিমার এ আন্দোলন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারবে না।

তিনি বলেন, আমরা জীবন দিতে প্রস্তুত আছি। কিন্তু বাতিলের কাছে মাথানত করতে রাজি নই। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশে জামায়াতের সাবেক আমিরে জামায়াত মতিউর রহমান নিজামী রহ. এবং সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদসহ শীর্ষ নেতারা ফাঁসির কাষ্ঠে নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন। তবুও বাতিলের কাছে মাথানত করেননি। তারা এ দেশে আল্লাহর দ্বীনকে প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে নিজের জীবন দিয়ে গিয়েছেন। নেতারা প্রমাণ করেছেন জামায়াতে ইসলামী এমন একটি দল, যারা জীবন দিতে পারে। কিন্তু বাতিলের কাছে মাথানত করতে পারে না।

অধ্যাপক মুজিব বলেন, আজ বর্তমান আমীরে জামায়াত ও সেক্রেটারিসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নেতাদের কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। তারা বাতিলের সাথে কোনো আপোষ করে চলেন না। আমরা যারা বাহিরে আছি, বিশেষ করে আজ পটুয়াখালীর কয়েক হাজার কর্মী ভাই-বোনদেরকে আহ্বান জানাতে চাই, এই সমাজকে পরিবর্তন করতে হলে যোগ্য, দক্ষ ও ভালো মানুষের বিকল্প নেই। ভালো দিয়ে মন্দের মোকাবেলা করতে হবে, মন্দ দিয়ে নয়। সেজন্য ইসলামের সঠিক শিক্ষা অর্জন করে ব্যক্তি থেকে সমাজ দেশ রাষ্ট্র পরিচালনায় যোগ্যতম ব্যক্তি হিসেবে পরিণত হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আজ জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার মতো যোগ্য লোক এই পটুয়াখালী বা বাউফলে রয়েছে, তাদেরকে সমর্থন করে আপনারা সবাইকে এলাকার ভবিষ্যত নির্মাণে ভূমিকা রাখবেন। তাদেরকে সামনে এগিয়ে দিয়ে দেশের সেবা করার সুযোগ তৈরি করে দেবেন ইনশাআল্লাহ। সংসদে আজান ও নামাজের বিরতি এখনো দেয়া হয়, এটা ইসলামী আন্দোলনেরই অবদান। জামায়াত নেতাদের অবদান বললেও ভুল হবে না। মানুষ মারা গেলে আজও সংসদে শোকবার্তা ও সমবেদনা জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হয়। এটা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অবদান। আমরা সেটার সূচনা করে দিয়ে এসেছি। আগামীতে বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণে যেন জামায়াত আরো কাজ করতে পারে, সেজন্য দেশের জনগণের সহযোগিতা করতে হবে।

কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও পটুয়াখালী জেলা শাখার আমির অধ্যাপক শাহ আলমের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট মুয়াযযম হুসাইন হেলাল, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সেক্রেটারি ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।

আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও বরিশাল মহানগরী আমির অধ্যক্ষ জহির উদ্দিন বাবর, জেলা নায়েবে আমির অধ্যাপক আব্দুস সালাম খান, জেলা সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট নাজমুল আহসান, জেলা সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক মো: আলমগীর হোসাইন ও অধ্যাপক এ বি এম সাইফুল্লাহ, অধ্যাপক মো: শহিদুল ইসলাম আল কায়সারী, জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন সভাপতি মো: সাইদুর রহমান খান, জেলা ওলামা-মাশায়েখ পরিষদ সেক্রেটারি মাওলানা আবদুদ দ্যাইয়ান প্রমুখ।

অ্যাডভোকেট মুয়াযযম হুসাইন হেলাল বলেন, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় থেকে আজ পর্যন্ত দেশের জনগণ স্বাধীনতাকে অর্থবহ দেখতে ও সার্বভৌমত্ব অটুট রাখতে ইসলামী আন্দোলনের দিকে তাকিয়ে আছে। আজ জনগণ চায়, জাতির নেতৃত্বে সৎ, দক্ষ ও খোদাভীরু মানুষ আসুক।

বাউফলের গণমানুষের নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, কর্মী হিসেবে কাজ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আর ইকামাতে দ্বীনের এ কাজ আঞ্জাম দেওয়া আমাদের ঈমানের দাবি। পটুয়াখালী জেলার ২০ লাখ মানুষের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী হিসেবে সমাজ পরিবর্তনে আপনাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। জামায়াতে ইসলামী এ দেশে একটি উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে স্বীকৃত এবং এটাই সরকার ও অন্যান্য ইসলামবিরোধী শক্তির আতঙ্কের কারণ। আজ সবখানে বাতিল শক্তির সাথে ইসলামী আন্দোলনের বৈরিতা এজন্যই কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে উঠছে। এই জাতির পরিবর্তনের জন্য আমাদের একটা দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

সভাপতি অধ্যাপক শাহ আলম বলেন, এ সম্মেলনের ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। বিগত কয়েক বছর জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে জামায়াতে ইসলামী অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সাথে যুগপৎ কর্মসূচি নিয়ে যে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছে, তাতে জামায়াতের প্রতি দেশের সচেতন নাগরিকের প্রত্যাশা বেড়ে গেছে। জনগণের মৌলিক ও রাজনৈতিক অধিকার আদায়ের জন্য জামায়াত এককভাবে আরো বলিষ্ঠ ভূমিকা নিয়ে এগিয়ে চলুক, এটাই রাজনীতি সচেতন মহল জামায়াতের নেতাদের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি

এমআই