লেবাননে ‘সংক্ষিপ্ত’ অভিযান কতদিন চলবে, জানে না ইসরায়েল
Share on:
লেবাননে ইসরায়েলি সেনারা যে স্থল অভিযান শুরু করেছে, তা গাজার মতো বিস্তৃত আকারের নয়, বরং সংক্ষিপ্ত ও সীমিত মাত্রার হবে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। তবে কতদিন পর্যন্ত এই অভিযান স্থায়ী হতে পারে, সে সম্পর্কিত কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি ইসরায়েলের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে।
স্থানীয় সময় সোমবার মধ্যরাতে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে অভিযান শুরুর কয়েক ঘণ্টা পর মঙ্গলবার সকালে একটি বিবৃতি দিয়েছে আইডিএফ। সেখানে বলা হয়েছে, “কয়েক ঘণ্টা আগে দক্ষিণ লেবাননে অভিযান শুরু করেছে আইডিএফ। এই অভিযান হবে পুরোপুরি সুনির্দিষ্ট এবং সীমিত মাত্রায়। দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলের সীমান্তবর্তী লেবানিজ গ্রামগুলোতে বেশ কিছু সামরিক স্থাপনা রয়েছে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর, যা ইসরায়েল রাষ্ট্র ও তার নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি। চলমান এ অভিযানে শুধু সেসব স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করা হবে।”
অভিযান কতদিন স্থায়ী হতে পরে— এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে ইসরায়েলের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে, “লেবাননে দীর্ঘস্থায়ী অভিযান পরিচালনা করার কোনো ইচ্ছে বা পরিকল্পনা আমাদের নেই। সেখানে ইসরায়েলের কোনো স্থায়ী ঘাঁটিও তৈরি করা হবে না। তবে চলমান এই অভিযান কতদিন স্থায়ী হবে, তা এখনই সুনির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।”
ইরানে ক্ষমতাসীন ইসলামপন্থি শাসকগোষ্ঠীর সরাসরি মদত ও তত্ত্বাবধানে ১৯৮৫ সালে লেবাননে আত্মপ্রকাশ করে হিজবুল্লা। লেবাননের রাজনীতিতে সরাসরি সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও আড়াল থেকে দেশটির জাতীয় ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে গোষ্ঠীটি। জন্মলগ্ন থেকেই হিজবুল্লাহ ইসরায়েল রাষ্ট্রকে ধ্বংসের পক্ষে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালানোর পর ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় অভিযান শুরু করলে হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে লেবানন-ইসরায়েল সীমান্ত থেকে উত্তর ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট হামলা শুরু করে হিজবুল্লাহ। জবাবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীও সেসবের জবাব দেওয়া শুরু করে। উভয়পক্ষের হামলা-পাল্টা হামলায় গত ১১ মাসে নিহত হয়েছেন শত শত সামরিক-বেসামরিক মানুষ।
গত ১৭ অক্টোবর হিজবুল্লাহর সদস্যদের ওয়াকিটকি হিসেবে পরিচিত কয়েক শ পেজারে একসঙ্গে বিস্ফোরণ হয়। এতে নিহত হন অন্তত ১২ জন এবং আহত হন প্রায় তিন হাজার মানুষ। এই বিস্ফোরণের জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে হিজবুল্লাহ, তবে ইসরায়েল এই অভিযোগ স্বীকার কিংবা প্রত্যাখ্যান— কোনোটিই করেনি।
পেজার বিস্ফোরণের দু’দিন পর থকে ইসরায়েলে বিমান অভিযান শুরু করে আইডিএফ। গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা সেই অভিযানে ইতোমধ্যে হিজবুল্লাহর প্রধান নেতা ও সেক্রেটারি জেনারেল হাসান নাসরুল্লাহ এবং বেশ কয়েক জন জ্যেষ্ঠ কমান্ডারসহ শত শত মানুষ নিহত হয়েছেন। কেবল রোববারের হামলাতেই নিহত হয়েছেন ১০৫ জন।
সূত্র : সিএনএন
এনএইচ