২৫ হাজার মেট্রিক টন চিনি আমদানি করবে সরকার
Share on:
আন্তর্জাতিক বাজার থেকে বাংলাদেশ সরকার ২৫ হাজার মেট্রিক টন চিনি আমদানি করছে। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) এই পরিমাণ চিনি আমদানি করতে ব্যয় হবে ১২৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা। যা অভ্যন্তরীণ বাজারের তুলনায় প্রতি কেজি চিনির মূল্য সাড়ে ১৪ টাকা থেকে প্রায় ২০ টাকা কম হবে।
জানা যায়, প্রতি কেজি চিনির আমদানি মূল্য হচ্ছে ৫১ টাকা ৩৬ পয়সা। কিন্তু টিসিবির গুদাম পর্যন্তু পরিবহন ব্যয়সহ এ চিনি পৌঁছাতে কেজি প্রতি দাম বেড়ে দাঁড়াবে ৯২ টাকা ৬৫ পয়সা।
বর্তমানে অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রতি কেজি চিনির গড় মূল্য হচ্ছে ১১২ টাকা ৫০ পয়সা। সে হিসাবে অভ্যন্তরীণ বাজারদরের তুলনায় প্রতি কেজি চিনিতে মূল্য কম পড়ছে ১৯ টাকা ৮৫ পয়সা, যা বর্তমান বাজারদরের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
সূত্র হতে জানা যায়, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)’র জন্য যুক্তরাজ্য ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘সোফিবেল ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড এ চিনি সরবরাহ করবে। সরবরাহকারীর স্থানীয় এজেন্ট হচ্ছে ‘গ্লোবপ্যাক ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড।
টিসিবির নিজস্ব তহবিল এবং সরকারি গ্যারান্টির বিপরীতে ব্যাংক থেকে ‘লোন অ্যাগেইনস্ট ট্রাস্ট রিসিপ্ট’ (এলটিআর) ঋণের মাধ্যমে এ চিনি ক্রয় করা হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে, বাংলাদেশে (পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনসহ) টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী নিম্ন আয়ের এক কোটি পরিবারের মধ্যে প্রতি মাসে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রির সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। ওই নির্দেশনার আলোকে অনুমোদিত ক্রয় পরিকল্পনার বিপরীতে সাধারণত উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে পণ্য ক্রয় করা হয়ে থাকে।
উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ক্রয় করার ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ে পণ্য সরবরাহ পাওয়া যায় না। বিদেশ থেকে চিনি আমদানির জন্য প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন রয়েছে। চিনি আমদানির জন্য বিগত কয়েকটি আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হলেও কোনো দরপত্র জমা পড়েনি।
এ ছাড়া স্থানীয় বাজারে চিনির স্বল্পতা ও চিনির মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী নিম্ন আয়ের এক কোটি পরিবারের মধ্যে প্রতি মাসে চিনি সরবরাহের জন্য সরবরাহ চেইন অক্ষুন্ন রাখার স্বার্থে আন্তর্জাতিকভাবে জরুরি ভিত্তিতে সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে চিনি ক্রয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, টিসিবি কর্তৃক ৫০ কেজির বস্তায় ২৫ হাজার মেট্রিক টন চিনি আন্তর্জাতিকভাবে ক্রয়ের জন্য গত ৬ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক চিনি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান যুক্তরাজ্যের ‘সোফিবেল ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড’-এর কাছে সরাসরি দরপ্রস্তাব আহ্বান করা হয়। ব্রাজিলে উৎপাদিত এসব চিনির প্রতি মেট্রিক টনের দাম চাওয়া হয়েছিল ৫১৮ ডলার। এর বিপরীতে চিনির প্রাক্কলিত দর ধরা হয়েছিল প্রতি মেট্রিক টন ৫২১ ডলার। দর কষাকষির মাধ্যমে প্রতি মেট্রিক টন চিনির দর নির্ধারিত হয়েছে ৪৮০ ডলার।
দরপ্রস্তাব অনুযায়ী, চিনি সরবরাহকারী মূল প্রতিষ্ঠান তাদের নিজস্ব অর্থায়নে চিনির গুণগত মান ও পরিমাণ যাচাইয়ের লক্ষ্যে দরপত্র মূল্যায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
অভ্যন্তরীণ বাজারে বেশ কিছুদিন ধরে চিনির মূল্য ক্রমাগতভাবে বাড়ছিল। এ অবস্থায় টিসিবির এক কোটি কার্ডধারী নিম্নআয়ের মানুষদের ক্ষয়ক্ষমতার মধ্যে চিনি বিক্রি করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসনের পরিপ্রেক্ষিতে এই চিনি সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণ আমদানি করা হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন দ্রুত সরবরাহ পাওয়া যাবে অন্যদিকে সরকারি অর্থের ও সাশ্রয় হবে।
এন