আমেরিকায় নারীদের গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকার বাতিল
Share on:
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৫০ বছর আগে এক মামলায় যে রায়ে গর্ভপাতকে বৈধ করা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট তা বদলে দেয়ার চিন্তা করছে, এমন এক নথি কয়েক সপ্তাহ আগে ফাঁস হওয়ার পর তা নিয়ে তীব্র বিতর্ক চলছিল।
শুক্রবার (২৪ জুন) সুপ্রিম কোর্ট পাঁচ দশক আগেকার ‘রো বনাম ওয়েড’ নামে পরিচিত মামলার ওই যুগান্তকারী রায় সত্যিই পরিবর্তন দিয়েছে।
দেশটির শীর্ষ আদালত গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকার বাতিল করে দিয়ে গর্ভপাতের অনুমোদন দেয়া বা না দেয়ার সিদ্ধান্তের ক্ষমতা প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের ওপর ছেড়ে দিয়েছে।
মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যে গর্ভধারণের ১৫ সপ্তাহের পর গর্ভপাত নিষিদ্ধ করাকে চ্যালেঞ্জ করে আনা এক মামলার রায়ে সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারের পক্ষে রায় দিলে গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকার কার্যত রহিত হয়ে যায়।
রায়ে বলা হয়, ‘গর্ভপাতের অধিকার সংবিধানের আওতায় থাকতে পারে না। গর্ভপাত নিয়ন্ত্রণের অধিকার অবশ্যই মানুষের এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ন্যস্ত করা উচিৎ।’
মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে এখন রক্ষণশীল বিচারকরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকার রহিত করার পক্ষে মতামত দেন ছয়জন বিচারক, বিপক্ষে দেন তিনজন।
ধারণা করা হচ্ছে, এই রায়ের পর অর্ধেকের বেশি অঙ্গরাজ্যে গর্ভপাত নিষিদ্ধ হবে অথবা এর ওপর নানারকম বিধিনিষেধ আরোপ করা হতে পারে।
ইতোমধ্যেই ১৩টি অঙ্গরাজ্য এমন আইন পাশ করেছে যে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর সাথে সাথেই গর্ভপাত নিষিদ্ধ হবে।
এক জরিপে বলা হচ্ছে, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে যুক্তরাষ্ট্রে সন্তানধারণে সক্ষম তিন কোটি ৬০ লাখ নারী গর্ভপাতের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে।
দক্ষিণ-পন্থী ও ধর্মীয় রক্ষণশীলদের জন্যে এই সিদ্ধান্ত অনেক বড় বিজয়। তারা ১৯৭৩ সালে গর্ভপাতকে বৈধতা দেয়ার পর থেকেই এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছিল।
সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স এই রায়কে স্বাগত জানান।
শীর্ষস্থানীয় ডেমোক্র্যাটরা সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তের নিন্দা করেন।
সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা একে মৌলিক স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ বলে উল্লেখ করেন।
প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেন, নিষ্ঠুর এই সিদ্ধান্তের অর্থ হচ্ছে নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় মধ্যবর্তী নির্বাচনে নারীর অধিকারের বিষয়টি নির্বাচনী ইস্যু হিসেবে বিবেচিত হবে। সূত্র : বিবিসি।
এইচএন