ভারতীয় সেনাদের গুলিতে ৬ কয়লা শ্রমিকসহ নিহত ১৩ গ্রামবাসী
Share on:
বিদ্রোহী মনে করে নাগাল্যান্ডে কয়লাখনির শ্রমিকবাহী একটি গাড়িতে গুলি করে ৬ শ্রমিককে হত্যা করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী সেনাবাহিনীর গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় গ্রামবাসীর দিকে ফের গুলি ছোড়েন সেনারা। এতে আরো কমপক্ষে ৭ জন গ্রামবাসী নিহত হন।
ভারতীয় সেনা সদস্যরা বিদ্রোহী মনে করে নাগাল্যান্ডে কয়লাখনির শ্রমিকবাহী একটি গাড়িতে গুলি করে ৬ শ্রমিককে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী সেনাবাহিনীর গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
সেনা সদস্যদের দুটি গাড়ি আগুনে জ্বলতে থাকলে গ্রামবাসীর দিকে গুলি ছোড়ে তারা। এতে আরো কমপক্ষে ৭ জন
গ্রামবাসী নিহত হন। এ সময় একজন ভারতীয় সেনা সদস্যও নিহত হন।
গতকাল শনিবার ( ৪ ডিসেম্বর) ভারতের নাগালান্ডে এ ঘটনায় উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করেছে।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন গার্ডিয়ান।
এতে আরো বলা হয়, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে মিয়ানমার সীমান্তের পাশের রাজ্য নাগাল্যান্ড।
সেখানে একজন সেনা সদস্য বলেছেন, ওই এলাকায় বিদ্রোহীদের মুভমেন্ট সম্পর্কে গোয়েন্দা তথ্য পায় সেনাবাহিনী। এরপর তারা সতর্ক অবস্থায় থাকে।
এরই মধ্যে কয়লাখনিতে কাজ করা শ্রমিকদের বহন করে কর্মস্থল থেকে ফিরতে থাকে একটি ট্রাক। তাদেরকে বিদ্রোহী মনে করে সেনারা ওই ট্রাকের দিকে গুলি ছোড়ে। এতে নিহত হন ৬ শ্রমিক।
এ ঘটনায় গ্রামবাসীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। জবাবে তারা সেনাবাহিনীর দুটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। জবাবে সেখানেও সেনারা গুলি ছোড়ে। এ সময় আরো ৭ জন নিহত হন।
নাগাল্যান্ডের পুলিশ কর্মকর্তা সন্দ্বীপ এম টামগাড়ে বার্তা সংস্থা এএফপি’কে বলেছেন, বর্তমানে ওই স্থানে উত্তেজনা চরম অবস্থায় রয়েছে। দ্বিতীয় সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ৯ জন বেসামরিক ব্যক্তি।
তাদেরকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করেছে।
নাগাল্যান্ডের নির্বাচিত শীর্ষ কর্মকর্তা নিফিউ রিও হত্যাকান্ড তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ওটিং এলাকায় বেসামরিক মানুষকে এভাবে হত্যা দুর্ভাগ্যজনক ও উচ্চ মাত্রায় নিন্দনীয়।
উল্লেখ্য, এটি একটি প্রত্যন্ত এলাকা। ভারতের বিদ্রোহীরা সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে হামলা চালিয়ে এই দুর্গম এলাকা দিয়ে সহজেই সীমান্ত অতিক্রম করে মিয়ানমারে চলে যায়।
স্থানীয় নেতা নিমটো কোনিয়াক বলেছেন, যারা মারা গেছেন তারা কয়লাখনিতে কাজ করতেন। কাজ শেষে তারা ঘরে ফিরছিলেন।
এ ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক আখ্যা দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
তিনি বলেছেন, এই হত্যকান্ডের তদন্ত করবে রাজ্য সরকার।
ওদিকে একজন সেনা কর্মকর্তা বলেছেন, গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে এক সপ্তাহ ধরে ওৎপেতে ছিলেন সেনারা।
তাদের কাছে খবর ছিল, আসাম রাজ্যের রাজধানী গুয়াহাটি থেকে ২৫০ মাইল পূর্বদিকে ওই এলাকায় সেনাদের বিরুদ্ধে হামলা চালানোর পরিকল্পনা আছে বিদ্রোহীদের।
সেনাবাহিনী থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে প্রাণহানীর বিষয়টি উচ্চ পর্যায়ে তদন্ত করা হচ্ছে। আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে কয়েক ডজন জাতিগত বিদ্রোহী গ্রুপ রয়েছে। যারা অঞ্চলটির স্বাধীনতা সহ সর্বোচ্চ স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে আন্দোলন দীর্ঘ দিন থেকেই চালিয়ে যাচ্ছে।
এইচএন