tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
আন্তর্জাতিক প্রকাশনার সময়: ২০ জানুয়ারী ২০২৪, ১৫:৫০ পিএম

দ্বিরাষ্ট্র : নেতানিয়াহুর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যা বললেন বাইডেন


biden-3-20240120153038

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি দ্বিরাষ্ট্র সমাধান নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা ভুলভাবে উপস্থাপিত হয়েছে বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।


ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমার মনে হয় তিনি (নেতানিয়াহু) ‘দ্বিরাষ্ট্র সমাধান হবে না’— এমন কথা তিনি বলতে চাননি। তার বক্তব্য ভুলভাবে আমাদের সামনে এসেছে। বিশ্বের ইতিহাসে বিভিন্ন ধরনের দ্বিরাষ্ট্র সমাধান রয়েছে। তা থেকে একটি তাকে গ্রহণ করতে হবে এবং সম্ভবত তিনি তা করবেন।’

আর গাজা কিংবা ফিলিস্তিনকে নিরস্ত্রকরণ নিয়ে তিনি যা বলেছেন…জাতিসংঘে এমন বেশ কয়েকটি সদস্যরাষ্ট্র রয়েছে, যাদের নিজস্ব সেনাবাহিনী নেই। কোনো ভূখণ্ডকে রাষ্ট্র হতে হলে তার নিজস্ব সেনাবাহিনী থাকতেই হবে— এমন কোনো আবশ্যিক বাধ্যবাধকতা নেই। আমি মনে করি এই ইস্যু নিয়ে আমরা (যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল) অদূর ভবিষ্যতে আরও কাজ করতে পারব।’

গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের তেল আবিব শহরে এক সংবাদ সম্মেলনে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু স্পষ্ট জানিয়ে দেন, জর্ডান নদীর পশ্চিমে পুরো এলাকার নিরাপত্তায় ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণেই থাকতে হবে।

ফিলিস্তিনিদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনায় ওই এলাকাও রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু বলেন, ‘এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত এবং এটি (ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের) সার্বভৌমত্বের ধারণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আমি বিষয়টি আমার মার্কিন বন্ধুদের জানিয়েছি এবং ইসরায়েলের নিরাপত্তা ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এমন বাস্তবতা চাপিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা থামিয়ে দিয়েছি।’

ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকা বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু তার গোটা রাজনৈতিক জীবন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বিরোধিতা করে কাটিয়েছেন। গত মাসে তা গর্ব করে ঘোষণাও করেছিলেন তিনি। ফলে তার এই মন্তব্য খুব একটা অপ্রত্যাশিত ছিল না।

তবে ইসরায়েলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বিশ্বস্ত মিত্র যুক্তরাষ্ট্র নেতানিয়াহুর এই বক্তব্যকে সমর্থন জানায়নি। শুক্রবার বাইডেন প্রশাসনের অন্তত ৩ জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মধ্যপ্রাচ্যের আল আকসা অঞ্চলে দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে তৎপরতা অব্যাহত রাখবে ওয়াশিংটন।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালিয়ে সামরিক-বেসামরিক ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিকসহ ১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে হামাস যোদ্ধারা। সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় আরও ২৪০ জন ইসরায়েলি এবং অন্যান্য দেশের নাগরিককে।

১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে সেদিন প্রথম একদিনে এতজন মানুষের হত্যা দেখেছে ইসরায়েল। অভূতপূর্ব সেই হামলার জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী এবং তার এক সপ্তাহ পর বিমান বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।

ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার বোমাবর্ষণে গত প্রায় সাড়ে তিন মাসে গাজায় নিহত হয়েছেন ২৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার এবং ইসরায়েলি বাহিনীর বোমাবর্ষণে ধসে যাওয়া বিভিন্ন ভবনের ধ্বংস্তূপের নীচে এখন ও চাপা পড়ে আছেন অন্তত কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি।

গত ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঘোষিত এক মানবিক বিরতির সাত দিনে মোট ১০৮ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। বাকি ১৩২ জন এখনও তাদের হাতে আটক রয়েছে।

গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র প্রথমে মিত্র ইসরায়েলের পাশেই দাঁড়িয়েছিল এবং গত সাড়ে ৩ মাস ধরে বার বার ইসরায়েলের সামরিক নীতিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে আসছে হোয়াইট হাউস। এসব প্রচেষ্টার মধ্যে নির্বিচারে বিমান হামলার পরিবর্তে আরও নির্ভুল অস্ত্র ব্যবহার, স্থল আক্রমণ নিরুৎসাহিত করার পাশাপাশি গাজা সংঘাত শেষে ‘দ্বি-রাষ্ট্র’ সমাধানের পথে আসার আহ্বান উল্লেখযোগ্য।

সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা

এসএম