tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
জাতীয় প্রকাশনার সময়: ১৭ জুলাই ২০২৪, ১৮:৩১ পিএম

বায়তুল মোকাররমে বিএনপি কর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ, টিয়ারশেল-গুলি


clash_20240717_162610095

রাজধানীর বায়তুল মোকাররম এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতদের গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীরা এতে অংশ নিয়ে বের হওয়ার সময় পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করছে বলে দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। এরপর হঠাৎ করে পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এক পর্যায়ে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া দেয়। পরে উভয়পক্ষের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বায়তুল মোকাররম এলাকা।


বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুরে বায়তুল মোকাররমে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর এ ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়।

সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, বায়তুল মোকাররম এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পুরো এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে পুলিশ। এই মুহূর্তে সেখানে শত শত পুলিশ অবস্থান করছে। তবে এ ঘটনায় কতজন আহত হয়েছেন তা এখনো জানা যায়নি।

জানা গেছে, দুপুর দুইটার দিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা সারাদেশে কোটাবিরোধী আন্দোলনে নিহতদের গায়েবানা জানাজায় অংশ নেওয়ার জন্য বায়তুল মোকাররমে আসেন। এসময় তারা জানাজা শেষ করে ফিরে যাওয়ার সময় পুলিশ সেখান থেকে কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়। ফলে বিএনপি কর্মীদের সাথে পুলিশের সদস্যদের বাকবিতণ্ডা বাধে। একপর্যায়ে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া দেয়। ধাওয়া খেয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা দূরে অবস্থান নেয়। পরে তারা ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। পুলিশও তাদেরকে প্রতিহত করার জন্য টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।

এসময় বায়তুল মোকাররম এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিশেষ করে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটের সামনের রাস্তায় পুলিশ অবস্থান নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া দিতে শুরু করে। বিএনপি নেতাকর্মীরা বায়তুল মোকাররম থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও তারা আবারও জড়ো হয়ে পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে শুরু করে। এমন পরিস্থিতিতে একসাথে শতাধিক পুলিশ বায়তুল মোকাররম এলাকায় বিএনপি কর্মীদের আবারও গ্রেফতারের চেষ্টা চালায়।

আরও জানা গেছে, পুলিশের ধাওয়া খেয়ে বিএনপির কর্মীরা পুরানা পল্টন মোড় এলাকায় অবস্থান নেয়। অন্যদিকে পুলিশের দাঙ্গা সদস্যরা কেএফসি ভবনের সামনে থেকে তাদের উদ্দেশ্যে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এসময় পল্টন এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের দোকান এবং মার্কেটগুলোতে কেনাকাটা কিনতে আসা ব্যক্তিরা দিকবিদিক ছোটাছুটি করতে শুরু করেন। পুলিশ বিএনপি কর্মীদের উদ্দেশ্যে প্রায় অর্ধশতাধিক টিয়ারশেল ও গুলি নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। মুহূর্তেই দৈনিক বাংলা থেকে পুরানা পল্টন মোড় পর্যন্ত ফাঁকা হয়ে যায়। এই সড়কের পুরো নিয়ন্ত্রণ নেয় পুলিশ সদস্যরা।

বিএনপি কর্মীরা জানিয়েছেন, তারা শান্তিপূর্ণভাবে গায়েবানা জানাজা সম্পন্ন করেছেন। সেখান থেকে বের হয়ে আসার সময় পুলিশ গ্রেফতার শুরু করে। এতে তারা আপত্তি জানালে পুলিশ তাদের ওপর চড়াও হয়। পুলিশের হামলায় বিএনপির বেশ কিছু কেন্দ্রীয় নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশ টিয়ারশেল মারার পাশাপাশি গুলিও ছুড়েছে বলে তারা অভিযোগ করেন।

বিএনপি দাবি করেছে, পল্টনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যদিও এ বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে, পুরানা পল্টনের কলকারখানা অধিদফতরের মহাপরিচালকের কার্যালয়ের সড়ক ধরে গণঅধিকার পরিষদের নেতারা একটি মিছিল নিয়ে বায়তুল মোকাররমে জানাজায় অংশ নেওয়ার জন্য এগিয়ে আসে। এসময় পুলিশ তাদের বাধা দিলে তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় এবং পুলিশ তাদের উল্টো পথে ফিরিয়ে দেয়।

পরে গণঅধিকার পরিষদের নেতারা উল্টো পথে মিছিল নিয়ে এগোতে থাকে। এসময় তারা স্লোগান দিতে থাকেন, ‘আমার ভাই মরল কেন, প্রশাসন জবাব চাই। পুলিশ দিয়ে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না।’ এসময় পুলিশ তাদের দৈনিক সংবাদের কার্যালয় পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে সেখানে অবস্থান নেয়।

পরে গণঅধিকার পরিষদের একজন নেতা গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার পুলিশ আন্দোলনের ভয়ে ভীত। তারা আবারও মিছিল নিয়ে এগুতে থাকে দৈনিক সংবাদের দিকে। এরপর পুলিশ পিছু হটে বায়তুল মোকাররমের দিকে ফিরে যায়।

গণঅধিকার পরিষদের অন্য নেতারা বলেন, আজ দুইটায় আমাদের গায়েবানা জানাজায় অংশগ্রহণ করার কথা ছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার পেটোয়া বাহিনী এই পুলিশ আমাদের অংশ নিতে দেয়নি। তারা আমাদের ওপর টিয়ারশেল মেরেছে, গুলি করেছে, লাঠিপেটা করে তাড়িয়ে দিয়েছে। তারপরও আমরা বলব আমাদের এই আন্দোলন পুলিশ দিয়ে দমানো যাবে না।

এনএইচ