মাদক কারবারির বাড়ির মাটি খুঁড়ে মিললো নিখোঁজ যুবকের হাড়-মাথার খুলি
Share on:
সাভারে মাদক কারবারি স্বপনের বাড়িতে মরদেহের সন্ধানে দ্বিতীয় দিনের মতো অভিযান শুরুর পর একটি মাথার খুলি ও হাত-পায়ের হাড়গোড় উদ্ধার করেছে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ ঘটনায় মাদক সম্রাট স্বপনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ জুন) দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে সাভার আনন্দপুর সিটিলেন এলাকার মাদক সম্রাট স্বপনের দ্বিতল বাড়ির নিচতলার মাটি খুঁড়ে মরদেহের হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়। এর আগে সোমবার দুপুর থেকে চলমান অভিযান রাতে স্থগিত করে পুলিশি পাহারা বসানো হয়।
মাদক কারবারি স্বপন সাভার পৌরসভার ইমান্দিপুরের শাহজাহানের ছেলে। তার সাভারের বিভিন্ন এলাকায় কয়েকটি বাড়ি রয়েছে। তিনি সাভারে চিহ্নিত মাদক সম্রাট হিসেবে পরিচিত।
সাভারের আনন্দপুর সিটিলেন এলাকার স্বপনের দ্বিতল বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির প্রবেশপথ বাঁশ দিয়ে বন্ধ করে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। বাহিরে উৎসুক জনতা ভিড় করলেও ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত প্রায় ৮ ফুট মাটি খুঁড়ে মরদেহের হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়।
ডিবি পুলিশের একটি সূত্র জানায়, গত কয়েকদিন আগে একটি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করতে স্বপনের সহযোগী সাইফুল নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বিরুলিয়ার বাড়ির পাশ থেকে সীমা বেগমের মরদেহ মাটিচাপা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মূলহোতা স্বপনকে গ্রেফতার করে তার সাভারের বাড়ির নিচতলার মেঝের নিচে পুঁতে রাখা মরদেহের তথ্য পায় পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে ১৪ মাস আগে নিখোঁজ হওয়া সাভার পৌরসভার ইমান্দিপুরের সেলামত মিয়ার ছেলে তোফাজ্জল হোসেন ওরফে টুনুর মরদেহের হাড়গোড় এগুলো।
নিহতের চাচা বরকত মিয়া বলেন, তার ভাতিজা টুনুকে স্বপন হত্যা করে পুঁতে রেখেছিল। হাড়গোড়ের পাশ থেকে টুনুর জামাকাপড় উদ্ধার করেছে পুলিশ। উদ্ধার হওয়া জামা কাপড় তার ভাতিজার। অপহরণের দিন টুনুকে সেই জামাতেই দেখা গিয়েছিল।
পুলিশ জানায়, স্বপনকে মঙ্গলবার সকালে ধামরাই উপজেলার কুল্লা ইউনিয়ন থেকে গ্রেফতর করা হয়। গ্রেফতারের সময় স্বপনের কাছ থেকে পিস্তল এবং বিপুল পরিমাণ হিরোইন উদ্ধার করা হয়েছে।
১৪ মাস আগে নিখোঁজ হন তোফাজ্জল হোসেন ওরফে টুনু। গত বছরের ২১ এপ্রিল নিখোঁজের বাবা সেলামত মিয়া বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় সাধারণ ডায়রি করেন। এর আগে গত বছরের ১ঌ এপ্রিল বাসার পাশ থেকে নিখোঁজ হন টুনু।
অভিযান শেষে রাতে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সীমা অপহরণ ও হত্যার সূত্র ধরে সাইফুলকে গ্রেফতারের পর সাইফুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। এরপর সকালে স্বপনকে গ্রেফতারের পর দেড় বছর আগে টুনু নিখোঁজের ঘটনায় স্বপনের সম্পৃক্ততার তথ্য পাই। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বপন স্বীকার করেছে টুনুকে অপহরণ করে হত্যা করে মাটিচাপা দিয়েছে তারা। স্বপন একজন নৃশংস সিরিয়াল কিলার, সে মাদক ব্যবসায়ী। মাদকের কারণেই সীমাকে হত্যা করা হয়েছিল, টুনুকেও মাদকের কারণেই হত্যা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সীমা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সাইফুল, স্বপনসহ ৫ জনের নাম সামনে এসেছে। তবে টুনু হত্যাকাণ্ডে আর কে কে জড়িত ছিল তা স্বপনকে রিমাণ্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এনএইচ