নৈতিকতা ও মূল্যবোধ ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের মূল পুঁজি : নূরুল ইসলাম বুলবুল
Share on:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, তাওহীদ বা আল্লাহর একত্ববাদই ইসলামের মূল চেতনা। ঈমানদার মাত্রই আল্লাহকে তার মালিক, প্রভু ও আদেশ-নিষেধের নিরংকুশ অধিকারী বলে মেনে নেয়। ফলে একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত জীবনকে ইসলামের নির্দেশিত বিধানের আলোকেই পরিচালিত করতে হবে। জামায়াতে ইসলামীর একজন রুকন হিসেবে আমাদেরকে আমলে জিন্দেগী সমৃদ্ধ করার মাধ্যমে আল্লাহর সাথে গভীর সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। পরকালকে প্রাধান্য দিয়ে দুনিয়াবী জীবন পরিচালনা করতে হবে।
শুক্রবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত খিলগাঁও পশ্চিম থানার ষান্মাসিক রুকন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, নৈতিকতা ও মূল্যবোধ ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের মূল পুঁজি। তাই নৈতিকতা ও মূল্যবোধ জাগ্রত করার জন্য বেশি বেশি কুরআন, হাদিস ও ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়ন করতে হবে। ইসলামী আদর্শ ও মূল্যবোধের ভিত্তিতে নিজ নিজ পরিবার ও সমাজ গঠনে আত্মনিয়োগ করতে হবে। ইসলামী আন্দোলনের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা মোকাবেলায় আমাদেরকে আদর্শ ও চরিত্র মাধুর্য দিয়ে এবং যুক্তিপূর্ণ ভাষায় সুন্দরভাবে জনগণের মাঝে উপস্থাপন করতে হবে। এজন্য আমাদেরকে সামাজিক ও জনকল্যাণমূলক কাজে আত্মনিয়োগ করতে হবে।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শূরা সদস্য ও খিলগাঁও পশ্চিম থানা আমীর এস এম জুয়েলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য, মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা ফরিদুল ইসলাম। মহানগরী মজলিসে শুরা সদস্য ও খিলগাঁও পশ্চিম থানা সেক্রেটারি মু. রেজাউল করিমের পরিচালনায় সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন মহানগরী মজলিসে শুরা সদস্য খিলগাঁও উত্তর থানা আমীর নাসির উদ্দিন, খিলগাঁও পশ্চিম থানার কর্মপরিষদ সদস্য মোহাম্মদ সারোয়ার, শাহ মো. সিদ্দিকুল ইসলাম, ইকবাল হোসাইন, আবুল হাসনাত মর্তুজা প্রমূখ।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ইসলামী আন্দোলনের পথচলা কখনোই বাধাহীন ছিল না বরং সকল বাধা-প্রতিবন্ধকতা ও জুলুম-নির্যাতন মোকাবেলা করেই ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা দ্বীন প্রতিষ্ঠায় আপোষহীন থেকেছেন। শুধু আমাদের দেশে নয় বরং বৈশ্বিকভাবেই ইসলামী আন্দোলন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী। আর তা ইতিহাসের ধারাবাহিকতা মাত্র। অতীতে যারাই দ্বীনে হকের দাওয়াত দিয়েছেন অবিশ্বাসী ও কুফরী শক্তি তাদের উপরই জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছে। নবী-রাসুল (সা.)গণও এ ধরনের জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এমনকি শেষ নবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)ও অবর্ণনীয় জুলুম-নির্যাতন মোকাবেলা করে দ্বীনকে বিজয়ী করার জন্য যে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছেন তা মুসলিম উম্মাহর জন্য চিরস্মরণীয় আদর্শ হয়ে আছে। তাই দ্বীনের বিজয় নিশ্চিত করতে সমস্যাসঙ্কুল পথ অতিক্রম করেই ইসলামী আন্দোলনের শপথের জনশক্তিদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আজ বাংলাদেশের মানুষ কঠিন সময় পার করছে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি, অর্থনৈতিক সংকট, সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার ফলে বিপর্যস্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত। আজ জনগণ তার নায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত। ভোটের অধিকার হরণ করা হয়েছে। আলেম ওলামা সহ বিরোধী দল ও মতের উপর জুলুম নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। কুচক্রী মহল বাংলাদেশ থেকে ইসলাম নির্মূলের নানামূখী চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে। আগামী প্রজন্মকে ধ্বংস করার জন্য শিক্ষা ব্যবস্থাকে ইসলাম বিদ্বেষী ধর্মনিরপেক্ষতার আলোকে সাজানো হচ্ছে। এমতাবস্থায় দেশের মানুষের মুক্তির জন্য আমাদের ভূমিকা রাখতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি ইসলামই পারে অধিকারহারা বঞ্চিত মানুষকে তাদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে। তাই তিনি ইসলামের সুমহান আদর্শের ভিত্তিতে একটি ন্যায়-ইনসাফ ভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সকলকে বলিষ্ঠ ভুমিকা পালনের আহবান জানান।
এমআই